সীমান্ত এলাকা থেকে ভারতীয় সৈন্য হটানোর শপথ নেপালের প্রধানমন্ত্রীর !!
নেপালের প্রধানমন্ত্রী খাড়কা প্রসাদ ওলি দেশের ভূখণ্ড থেকে বিদেশী সৈন্যদের বাড়ি পাঠানোর শপথ নিয়েছেন। পাশাপাশি কেউ ভূখণ্ড দখল করতে এলে তাদের শিক্ষা দেয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। নেপালের প্রধানমনমন্ত্রী ওলি বলেন, তার সরকার দেশের ভৌগলিক অখণ্ডতা রক্ষায় যথেষ্ট সক্ষম এবং তিনি কোনো বিদেশী রাষ্ট্রকে জমি দখল করতে দিবেন না।
রোববার (১৭ নভেম্বর) নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে ন্যাশনাল ইয়থ এসোসিয়েশনের প্রথম সম্মেলনে বক্তব্যকালে দেশটির প্রধানমন্ত্রী খাড়কা প্রসাদ ওলি এসব কথা বলেন। বক্তব্যে নেপালের প্রধানমন্ত্রী ‘বিদেশী সৈন্য’ শব্দটি ব্যবহার করলেও স্পষ্টতঃই তার বক্তব্যের লক্ষ্য ছিল ভারত ও ভারতীয় সৈন্য। প্রধানমন্ত্রী খাড়কা প্রসাদ ওলি আরো বলেন, আমরা কাউকে আমাদের দেশের এক ইঞ্চি জমি দখল করতে দেবো না। আমাদের অন্যের ভূখণ্ড দখলেরও প্রয়োজন নেই। আমরা আমাদের প্রতিবেশী দেশের (ভারতের) প্রতি আহ্বান জানাবো যেন তারা কালাপানি থেকে তাদের সেনাদের সরিয়ে নেয়।
উল্লেখ্য, ভারত সম্প্রতি যে নতুন রাজনৈতিক মানচিত্র প্রকাশ করে তাতে পাকিস্তান ও চীনের অধিকারে থাকা জম্মু-কাশ্মিরের অংশ এবং নেপালের কালাপানিসহ ভারতীয় ভূখণ্ড হিসেবে দেখানো হয়। ৩৫ বর্গ কিলোমিটারের কালাপানি ভূখণ্ড নিযে বহুদিন ধরে ভারতের সঙ্গে নেপালের বিরোধ রয়েছে। ১৯৯৬ সালে নেপাল পার্লামেন্টে ভারতের সঙ্গে মহাকালি চুক্তি অনুমোদন করা হলেও ওই বিরোধের মিমাংসা হয়নি।
দেশবাসীর উদ্দেশ্যে ওলি বলেন, সীমান্তের ভূখণ্ডটি আজকে দখল করা হয়নি, কিন্তু এখন আমরা এই বিষয়ে জাতীয় ঐক্যমতে পৌছেছি। এই সরকার দেশের ভূখণ্ড ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যথেষ্ট সক্ষম।
নেপাল সরকারের দাবি, ১৯৬২ সালে চীনের সঙ্গে যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর ভারতীয় সেনারা পিছু হটার সময় নেপালের সীমান্তবর্তী এলাকা কালাপানিতে অবস্থান নেয়। তখন থেকে ভারত এলাকাটি দখল করে আছে। তবে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দাবি করা হয় যে- নতুন মানচিত্রে ভারতের সার্বভৌম ভূখণ্ডই দেখানো হয়েছে। পাশাপাশি তৃতীয় পক্ষ (চীন) ওই এলাকা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বিরোধ উষ্কে দিচ্ছে বলেও দাবি করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ভারত-নেপাল সীমান্তের কালাপানিকে ভারতের অংশ বলে নয়াদিল্লির প্রকাশ করা মানচিত্রে দেখানো হয়েছে। এরপরই প্রতিবাদ জানায় নেপাল। কাঠমাণ্ডুর দাবি, কালাপানি নেপালের অংশ। দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ ছিল ওই এলাকা নিয়ে। প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে ওই এলাকায় ভারতীয় সৈন্য মোতায়েনের পর থেকেই আপত্তি করে আসছে নেপাল।
এদিকে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়,‘মানচিত্রে সার্বভৌম ভারতের সীমান্ত ‘সঠিকভাবে চিত্রিত’ হয়েছে। নতুন মানচিত্রে নেপালের সাথে ভারতের সীমান্ত সংশোধন করা হয়নি। বিদ্যমান ব্যবস্থার অধীনে নেপালের সাথে সীমানা নির্ধারণের চর্চা চলছে। দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে আমরা বন্ধুরাষ্ট্রের সঙ্গে পার্থক্য মেটানোর চেষ্টা করব।’ সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, স্পুটনিক নিউজ, হিমালয়ান টাইমস, স্ক্রল.ইন।