সৌদি আরবে আটকে পড়া বাংলাদেশির আকুতি !!

কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানার বাসিন্দা মোহাম্মদ ইব্রাহীম (২৫)। অসুস্থ অবস্থায় সৌদি আরবে বসে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং পরিচালিত ‘বাংলাদেশ পুলিশ অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ’-এর ইনবক্সে একটি বার্তা পাঠান।

ওই বার্তায় তিনি লিখেছিলেন, ‘স্যার দয়া করে আপনারা আমাকে সহায়তা করুন। আমি এখানে মরতে চাই না স্যার। আমি যদি এখানে মারা যাই বেওয়ারিশ হিসেবে ফ্রিজে পড়ে থাকতে হবে স্যার৷ তাই আমার এই আকুতি….ধন্যবাদ স্যার।’বাংলাদেশ পুলিশ ফেসবুক পেজে এমন একটি বার্তাই অসুস্থ মোহাম্মদ ইব্রাহীমকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনে। এতে সহায়তা করেছে পুলিশ হেডকোয়ার্টার।

পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মোহাম্মদ ইব্রাহীম পবিত্র ওমরাহ পালন করতে সৌদি আরব গিয়েছিলেন। ওমরাহ পালন শেষে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেখানে থেকে যেতে বাধ্য হন। এক পর্যায়ে সেখানে তিনি অবৈধ হয়ে যান। অসুস্থ শরীরে তিনি লুকিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। বৈধ কাগজপত্রের অভাবে তিনি কোথাও মুভ করতে পারছিলেন না। এক পর্যায়ে ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি বেঁচে থাকার আশা ছেড়ে দেন। সেই মুহূর্তে এক ব্যক্তির পরামর্শে তিনি বাংলাদেশ পুলিশ ফেসবুক পেজের ইনবক্সে সহযোগিতা চেয়ে বার্তা পাঠান। সেখানে তিনি দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় ধরে অসুস্থ ছিলেন।

পুলিশ হেডকোয়ার্টার জানায়, গত ২৪ ফেব্রয়ারি মোহাম্মদ ইব্রাহীম (২৫) নামে সৌদি আরব প্রবাসী এক বাংলাদেশি নাগরিক বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং পরিচালিত ‘বাংলাদেশ পুলিশ অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ’ এর ইনবক্সে জানান তিনি সৌদি আরব প্রবাসী। সেখানে তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। দেশেও ফিরতে পারছেন না। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে তিনি বাংলাদেশ পুলিশের সহযোগিতা চান।

পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং তার বার্তাটি দেখার সঙ্গে সঙ্গেই তার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে বাংলাদেশে তার ঠিকানায় যোগাযোগ করে। ওই ব্যক্তির বাড়ি বাড়ি কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানায়। টেকনাফ থানার মাধ্যমে তার পরিবার ও স্থানীয় লোকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

এই বিষয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের এআইজি মো. সোহেল রানা জানান জানান, ইব্রাহিমের অসুস্থতা ও অসহায়ত্বের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে মানবিক কারণে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের মিডিয়া অ্যান্ড পিআর উইং তার পাশে দাঁড়ায়। তার বিষয়টি নিয়ে বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের পরিচিত এক কর্মকর্তা মোস্তফা জামিলের সঙ্গে পরামর্শ করে তার সহযোগিতা চায়। মোস্তফা জামিল নিজেও অপর একটি দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে কর্মরত।

মো. সোহেল রানা আরও জানান, এরপর তার পরামর্শ ও সহযোগিতায় অসুস্থ বাংলাদেশি নাগরিকের সঙ্গে সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাসের যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হয়। বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায় দ্রুততম সময়ে বৈধ ট্রাভেল ডকুমেন্টস পেয়ে যান মোহাম্মদ ইব্রাহীম। অবশেষে, গতকাল শুক্রবার রাতে দেশে ফেরেন মোহাম্মদ ইব্রাহিম।প্রসঙ্গত, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং বাংলাদেশ পুলিশের ফেসবুক পেজের ইনবক্সে আসা জনগণের বার্তা মনিটর করে প্রতিনিয়ত এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। উৎস: দৈনিক আমাদের সময়।

 

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *