দেশের খবর

স্ত্রী-সন্তানসহ নিজের নাম আ.লীগের কমিটি থেকে বাদ দিতে শামীম ওসমানের চিঠি !!

এখনই স্ত্রী ও সন্তান প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে আসুক, সেটি চান না আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এমপি শামীম ওসমান। শামীম ওসমানের এ সিদ্ধান্তের প্রতি সহমত পোষণ করেছেন তার পরিবারের সদস্যরাও।সম্প্রতি ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের পর প্রকাশ পায় ওই কমিটির ১নং থেকে ৩নং কার্যকরী সদস্যের তালিকায় রয়েছেন শামীম ওসমান, তার স্ত্রী ও জেলা মহিলা সংস্থার সভানেত্রী সালমা ওসমান লিপি ও জ্যেষ্ঠ সন্তান ইমতিনান ওসমান অয়ন।

এ বিষয়ে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেও তাদের তিনজনের পরিবর্তে অপর তিনজন ত্যাগী নেতার নাম দিয়ে মূল্যায়িত করার মত দিয়েছেন শামীম ওসমান। এ বিষয়ে ১৩ জানুয়ারি ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর লিখিত পত্রও দিয়েছেন শামীম ওসমান।

বিষয়টি নিশ্চিত করছেন ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম শওকত আলী। পাশাপাশি যুগান্তরের কাছেও চিঠিটি হস্তগত হয়েছে।জানা গেছে, গত ১০ ডিসেম্বর ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয় জেলা আওয়ামী লীগ। বুধবার ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগকে দেয়া শামীম ওসমানের ওই চিঠিতে কার্যকরী সদস্য হিসেবে তিনিসহ স্ত্রী ও ছেলের নাম রাখায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তিনি লিখেছেন- ‘আমি ও আমার পরিবার মনে করছি, ফতুল্লা থানা এলাকায় আমাদের চেয়েও ত্যাগী, যোগ্য ও রাজপথের অসংখ্য সক্রিয় নেতাকর্মী রয়েছেন। যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে লালন করে আমাদের মাতৃতুল্য জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য লড়াই করছেন। আমরা মনে করি, ওই তিনটি কার্যকরী সদস্য পদে আমাদের পরিবর্তে উল্লেখিত ত্যাগী ও যোগ্য নেতাকর্মীদের মধ্য থেকে আপনারা তিনজনকে নির্বাচন করে তাদের মূল্যায়িত করলে আমরা আরও বেশি আনন্দিত হব।’

এ ব্যাপারে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফ উল্লাহ বাদল ও সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী যুগান্তরকে জানান, এমন চিঠি দিয়ে শামীম ওসমান ও তার পরিবার আবারো মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন। শামীম ওসমান প্রমাণ করেছেন ত্যাগী নেতাকর্মীদের প্রতি তিনি কতটা আবেগ ধারণ করেন। আমরা তার এ আবেগকে সম্মান জানাই। তবে বিষয়টি আমরা দলীয় ফোরামে আলোচনা করেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।

এ ব্যাপারে শামীম ওসমান এমপি যুগান্তরকে জানান, কর্মীরাই দলের প্রাণ। আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা মনে করেন- আমাদের চেয়েও যোগ্য ও ত্যাগ শিকার করা বহু নেতাকর্মী রয়েছেন, যাদের মূল্যায়ন করা উচিত।জানা গেছে, শামীম ওসমানের ছেলে ইমতিনান ওসমান অয়ন ঐতিহ্যবাহী ওসমান পরিবারের চতুর্থ প্রজন্ম। প্রত্যক্ষ রাজনীতি না করলেও নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের কঠোর নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় রয়েছেন তিনি। মূলত তার কারণেই নারায়ণগঞ্জে ছাত্রলীগ মডেল সংগঠনে পরিণত হয়েছে।অপরদিকে আওয়ামী লীগে কোনো পদে না থেকেও বিভিন্ন সংকটে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আলোচিত হয়েছেন শামীম ওসমানের স্ত্রী সালমা ওসমান লিপি। বিশেষ করে করোনাকালে তার ভূমিকা উঠে এসেছে জাতীয় গণমাধ্যমেও।

উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে ওসমান পরিবারের বর্ণাঢ্য ইতিহাস রয়েছে। ৫২-এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান এবং ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে এ পরিবারটির অবদান ছিল অবিস্মরণীয়। ওসমান পরিবারের প্রাণপুরুষ খান সাহেব ওসমান আলী ১৯৪৬ সালে সাধারণ নির্বাচনে (নারায়ণগঞ্জ দক্ষিণ নির্বাচনী এলাকা) ঢাকার নবাব খাজা হাবিবুল্লাহকে পরাজিত করে বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন।

১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছিলেন এম ওসমান আলী। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে তার বিশেষ ভূমিকা ছিল। এজন্য তিনি কারারুদ্ধ হন। ১৯৬২ সালের শাসনতান্ত্রিক আন্দোলন, ছয়দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে ওসমান আলী সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলেন। খান সাহেব ওসমান আলীর ছেলে একেএম শামসুজ্জোহা ছিলেন ভাষা আন্দোলনের অগ্রণী সৈনিক। তিনি ১৯৭০ সালের নির্বাচনে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় মুজিবনগর সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য ভ্রমণ করে জনমত গঠন ও তহবিল সংগ্রহে একেএম শামসুজ্জোহা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর মুজিবনগর সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে প্রথম বেতার ভাষণ প্রদান করেন এবং দেশের সর্বোচ্চ আদালতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন একেএম শামসুজ্জোহা।

স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ১৯৭৩ সালে নারায়ণগঞ্জ থেকে তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর মন্ত্রিত্ব গ্রহণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে তাকে ১৮ মাস কারাবন্দি রাখা হয়। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অনন্য সাধারণ ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তাকে ২০১২ সালে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়। তার স্ত্রী নাগিনা জোহাও ছিলেন ভাষা আন্দোলনের অগ্রণী সৈনিক।

এই পরিবারেরই বড় সন্তান একেএম নাসিম ওসমান জাতীয় পার্টির হয়ে চারবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরিবারের মেজো সন্তান সেলিম ওসমান একাধারে ব্যবসায়ী নেতা এবং সংসদ সদস্য হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সন্তান একেএম শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত। ১৯৯৬, ২০১৪ এবং সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসন থেকে তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন প্রভাবশালী এই নেতা।

সূত্র- যুগান্তর

J A Suhag

Local News: J A Suhag writes Local News articles for industries that want to see their Google search rankings surge. His articles have appeared in a number of sites. His articles focus on enlightening with informative Services sector needs. he holds the degree of Masters in Business and Marketing. Before he started writing, he experimented with various professions: computer programming, assistant marker, Digital marketing, and others. But his favorite job is writing that he is now doing full-time. Address: 44/8 - North Dhanmondi, Dhaka Email: [email protected]

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button