স্ত্রী-সন্তানের সাথে শেষ দেখা হল না ছাত্রদল নেতা ইউসুফের !!
নিজে থাকতেন হবিগঞ্জে সেখানে একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল পরিচালনা করেন। সাথে করতেন ছাত্রদলের রাজনীতি। স্ত্রী চট্টগ্রামে স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে চাকরি করায় তাদের একমাত্র সন্তানসহ সেখানেই থাকতেন। তাই প্রায়ই স্ত্রী-সন্তানের সাথে দেখা করতে চট্টগ্রাম যেতেন হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি আলী মো. ইউসুফ। সোমবার (১১ নভেম্বর) রাতেও চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন স্ত্রী-সন্তানকে আনতে। কিন্তু স্ত্রী-সন্তানের সাথে শেষ দেখাটাও হলনা ইউসুফের। পথিমধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাতে হল তাকে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে ইউসুফের পরিবার এখন দিশেহারা।
নিহত ইউসুফ হবিগঞ্জের আনোয়ারপুর এলাকার বাসিন্দা মো. হাসান আলীর ছেলে। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনে দুই ট্রেনের সংঘর্ষে তিনি নিহত হন। নিহত ইউসুফের প্রতিবেশী মো. জয়নাল মিয়া জানান, কয়েক বছর আগে ইউসুফ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও গ্রামের চিশতিয়া বেগমকে বিয়ে করেন। তার স্ত্রী চট্টগ্রামে স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে চাকরি করছেন। তাদের দেড় বছর বয়সী একটি সন্তানও রয়েছে। নাম ইশা বেগম। আর ইউসুফ হবিগঞ্জ সরকারি বৃন্দাবন কলেজ থেকে ২০১৫ সালে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে এমএ পাশ করে লিটল ফ্লাওয়ার কিন্ডারগার্টেন নামে একটি স্কুল পরিচালনা করছেন। স্কুলটির অধ্যক্ষের দায়িত্বও তিনি পালন করছিলেন। প্রায়ই তিনি স্ত্রী ও সন্তানের সঙ্গে দেখা করতে চট্টগ্রামে যাতায়াত করতেন। মঙ্গলবার তিনি উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনযোগে স্ত্রী ও সন্তানকে আনতে চট্টগ্রামে রওনা হন। কিন্তু পথে ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা যান ইউসুফ।
জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রুবেল চৌধুরী জানান, ইউসুফ জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি ছিলেন। স্ত্রী চট্টগ্রামে চাকরি করার সুবাধে তিনি প্রায়ই সেখানে যাতায়াত করতেন স্ত্রী সন্তানকে দেখার জন্য। তিনি বলেন, অত্যন্ত ভালো ছেলে ছিলেন ইউসুফ। বাবা ও ভাই না থাকার কারণে তিনিই পরিবারের হাল ধরেছিলেন। লিটল ফ্লাওয়ার কিন্ডার গার্টেন নামে একটি কিন্ডার গার্টেন স্কুলের অধ্যক্ষ হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার একমাত্র ছোট ভাই আমজদ আলী পড়ছেন বিএ। তিনিও একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে তার পরিবারের সদস্যরা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।