স্বাস্থ্যমন্ত্রী পরিবর্তন চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ – ব্যারিস্টার সুমন !!
করোনাভা’ইরাস মোকাবিলায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ব্যর্থ হয়েছেন বলে মন্তব্য করে তাকে মন্ত্রণালয়টি থেকে সরিয়ে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
আজ শুক্রবার নিজের ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে এসে এ আহ্বান জানান ব্যারিস্টার সুমন।ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, ‘পরম করুনাময় আল্লাহর নামে শুরু করেছি। আজকে শুক্রবার নামাজের আগে আমি আমার প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে দুটি কথা বলতে চাই, আমি আমার আবেগের কথা বলতে চাই। মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী আপনি জানেন যে গতকালকেই আপনার সামনেই স্বাস্থ্য সচিব এবং মহাপরিচালক দুইজন দুই ধরনের কথা বলেছেন। মাননীয় নেত্রী আমি আগেই বলেছি যে, যতগুলা মন্ত্রণালয় ব্যর্থ হয়েছে তার টপ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।’
প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘কেন হবে না মাননীয় মন্ত্রী? এমন একজন মন্ত্রী স্বাস্থ্যমন্ত্রী, আপনি মনে হয় দেখেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। যে ৩৭ জনকে পেছনে নিয়ে করোনার ব্যাপারে উনি আমাদেরকে সচেতন করতে গিয়েছিলেন। এ ধরনের কথা বলার পর মিনিস্ট্রিয়াল রেস্পন্সিবিলিটি অনুযায়ী তাৎক্ষণাৎ রিজাইন করার কথা ছিল।‘তিনি আরও বলেন, ‘গত বছর (২০১৯ সাল) যখন দেশের ৯০ হাজার লোক ডেঙ্গুতে আ’ক্রান্ত, ঢাকায় যখন মহামারি হয়েছিল তখন তিনি থাইল্যান্ড না কোথায় পরিবার নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন। আমি একটা কথা বলতে চাই। নিউজিল্যান্ডে লকডাউন থাকা অবস্থায় একজন স্বাস্থ্যমন্ত্রী শুধু সি-বিচে বেড়াতে যাওয়ায় তাকে ডিমোশন দিয়ে অন্য মন্ত্রণালয় দেয়া হয়েছে।’
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘ফেসবুকে দেখেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ছেলে ও স্বাস্থ্য সচিব এবং মহাপরিচালক মিলে একটা সিন্ডিকেটের কথা বলা হয়েছে, এন-৯৫ মাস্কের কথা বলা হয়েছে, যে মাস্কের কারণে আজকে ডাক্তাররা (স্বাস্থ্য ঝুঁকি) হুঁমকিতে। এই দুর্নীতির অভিযোগ এই দুর্নীতিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিন্ডিকেটের কথা বলা হয়েছে।’তিনি বলেন, ‘মাননীয় নেত্রী আপনার কাছে কোন কথা বলব, অনেকগুলা কথা আছে। হযরত আলী (রা.) একটা কথা বলেছেন, ‘‘আপনারা কখন বুঝবেন যে এই সমাজ নষ্ট হয়ে গেছে, কখন বুঝবেন যে এটা কিয়ামতের লক্ষণ? যখন দেখবেন যে মুর্খরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন। মুর্খরা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হয়ে বসে আছেন। যখন দেখবেন ধনীরা কৃপণ হয়ে গেছে। যখন দেখবেন গরিবরা ধৈর্য হারা হয়ে গেছে‘‘।’
তিনি আরও বলেন, ‘মাননীয় মন্ত্রী আমি বলছি না তাদেরকে বদলাইয়া দিলেই দিনের মধ্যে সব চেঞ্জ হয়ে যাবে। কিন্তু মানুষের যে কনফিডেন্ট! মানুষকে জিজ্ঞেস করে দেখুন একটা লোকের কনফিডেন্স আছে কিনা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিষয়ে? যে মন্ত্রীর ওপর বিশ্বাস থাকে না এরকম অবিশ্বাস নিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নেওয়া খুবই দুঃখজনক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।’করোনায় আ’ক্রান্ত হয়ে কেউ পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়ার আগে ব্যর্থ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কথা শুনতে চান না উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্টের এ আইনজীবী বলেন, ‘আমরা যারা সুস্থ আছি বা করোনা আ’ক্রান্ত আছি এই দেশে আমাদের একটা শেষ ইচ্ছা এরকম একটা ব্যর্থ মন্ত্রী রেখে আমরা এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে চাই না।’
তিনি বলেন, ‘আপনি ছাড়া আওয়ামী লীগ এবং এই সরকারের কেউ অপরিহার্য না। একটা লোক অপরিহার্য না, আপনি চাইলেই একটি পরিবর্তন করতে পারেন।’তিনি আরও বলেন,‘এমন একটা ক্রাইসিস মোমেন্টে যে লোকটা সামান্য হিসাব বলতে পারে না। ক্যামেরার সামনে যে লোকটা হিসাবের কথাই বলতে পারে না এ পর্যন্ত কত লোক আ’ক্রান্ত হয়েছে। যে মন্ত্রী বারবার ভুল করেন। তার কথা আর কি বলব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আর কোনো কথা বলার নেই আমাদের। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আর একটা কথা বলতে চাই যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী পিপিই বলতে পারে না বলেন পিপিপি, তার মাথায় পার্টনারশিপ বিজনেস। বিজনেস ছাড়া আর তার মাথায় কিছুই নেই।’
সুমন বলেন, ‘আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে করজোড়ে বলতে চাইছি। যে এরকম একটি ক্রাইসিস মুহূর্তে যদি একজন বিশ্বাস করার মতো মন্ত্রী না থাকে, তাহলে আমরা মরেও শান্তি পাব না।’প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণ কামনা করে তিনি বলেন, ‘আবারো আপনার জন্য শুভকামনা। অন্তত আমি জানি, আপনি আমার থেকেও বেশি ভালো জানেন। এটা আমাদের মনের কথা, বেশিরভাগ মানুষই মনে করে ভুল হোক শুদ্ধ হোক এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং যারা আছেন তারা সিন্ডিকেট করে আপনাকে ডুবানোর প্রচেষ্টায় লিপ্ত।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে পরিবর্তনের অনুরোধ জানিয়ে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাকে একটি রিকোয়েস্ট করি, এই মুহূর্তে যদি অন্তত তাকে (স্বাস্থ্যমন্ত্রী) একটু পরিবর্তন করা যায়। অন্তত বিশ্বাস করার মতো যদি কোনো মন্ত্রী দিতেন। যুদ্ধক্ষেত্রে যদি সেনাপতি ঠিক থাকে সেখানে যুদ্ধ করে শহীদ হলেও মনে কষ্ট থাকে না। এই বলে আমি বিদায় নিলাম, সবাইকে ধন্যবাদ।’
সূত্রঃ বিডি২৪ রিপোর্ট