হাওরে নৌকায় নববধূকে গণধর্ষণের অভিযোগে আটক ছাত্রলীগ নেতা!
হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার টিক্কাপুর হাওরে নৌকায় নববধূকে গণধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন ছাত্রলীগ নেতা সোলায়মান রনি, মিঠু মিয়া ও শুভ।
র্যাব-৯ এর শায়েস্তাগঞ্জ ক্যাম্পের লেফটেন্যান্ট কমান্ডার নাহিদ হাসান যুগান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার অভিযানে তিনজন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ছাত্রলীগ নেতা সোলায়মান রনি ও মিঠু মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। শুভকে লাখাই পুলিশ গ্রেফতার করে।
ভিকটিমের পরিবার বৃহস্পতিবার রাতে হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছে।
২৫ আগস্ট, স্বামীর সঙ্গে হাওরে বেড়াতে যাওয়ার সময় নববধূ গণধর্ষণের শিকার হন। এ সময় ধর্ষকরা কনের স্বামী ও তার বন্ধুকে মারধর করে গুরুতর আহত করে। শুধু তাই নয়, ধর্ষকরা গণধর্ষণের ঘটনা ভিডিওতে ছড়িয়ে দিয়েছে।
বর্তমানে নববধূ হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বুধবার রাতে তার স্বামী জানান, এক মাস আগে পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয়েছে। বিয়ের একদিন পর তিনি কাজের জন্য ঢাকায় চলে যান। কিছুদিন আগে তিনি দেশে ফিরেছিলেন। তারপর ২৫ আগস্ট দুপুরে তিনি, তার স্ত্রী এবং তার বন্ধু হাওরে নৌকা ভ্রমণে যান।
একপর্যায়ে মুসা মিয়া, সুজাত মিয়া, হৃদয় মিয়া, ইব্রাহিম মিয়া ও জুয়েল মিয়াসহ ৫-৬ জন যুবক একটি নৌকায় এসে তাদের নৌকা থামায়। তারা এটা জানার আগেই তারা তাকে এবং তার বন্ধুকে মারধর করে এবং পালাক্রমে তার স্ত্রীকে ধর্ষণ করে। ধর্ষকরা তার স্ত্রীকে নির্যাতনের ঘটনা ভিডিও করে। তারা তাকে ঘটনা সম্পর্কে কাউকে না বলার জন্য বলেছিল এবং ইন্টারনেটে কথাটি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে গিয়েছিল।
তিনি বলেন, প্রকাশ্যে বিব্রত হওয়ার ভয়ে বাড়িতে আসার পর তিনি কাউকে বলেননি এবং কারণ ধর্ষকরা প্রভাবশালী। তবে গত কয়েকদিন ধরে মুসা মিয়া, সুজাত মিয়া, হৃদয় মিয়া, ইব্রাহিম মিয়া ও জুয়েল মিয়া ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছিল।
এক পর্যায়ে তারা ভিডিওটি এলাকায় ছড়িয়ে দেয়। আক্রান্তরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। বর্তমানে নববধূ হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এদিকে, ঘটনার খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
লাখাই থানার ওসি মো। সাইদুর রহমান জানান, তিনি বিষয়টি শুনেছেন। নিহতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা হয়েছে। তারা কোন লিখিত অভিযোগ করেনি। কোনো অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার। নাদিরা বেগম বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে এক নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে কি না, তা পরীক্ষার পরই বলা যাবে।