২০ দিনে নারায়ণগঞ্জে করোনায় বেড়েছে আ’ক্রান্তের সংখ্যা, মৃত্যু ৩০ !!
করোনার হটস্পট ও ডেঞ্জারজোন হিসেবে আইইডিসিআর থেকে চিহ্নিত জেলা নারায়ণগঞ্জের পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ হচ্ছে। প্রতিদিনই একাধিক মৃত্যু ও অর্ধশতাধিক আ’ক্রান্ত হচ্ছেন করোনা ভা’ইরাসে। তারপরেও মানুষের মধ্যে সচেতনতা আসছে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর তৎপরতার মধ্যেও প্রতিদিনই লকডাউন ভঙ্গ করে নানা অজুহাতে মানুষকে দিনভর বাইরে ঘোরাফেরা করতে দেখা যাচ্ছে। শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় দেখা যায় চায়ের দোকানে ও মাঠে অস্বাভাবিক জনসমাগম। দেখলে মনে হবে যেন, বৈশাখি উৎসবে মেতে উঠেছে সবাই। আইইডিসিআর ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত ২০ দিনে জেলায় প্রাণঘাতী করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩০ জনের। এর মধ্যে ৭ জন ছিলেন নারী। এছাড়া এ পর্যন্ত আ’ক্রান্ত হয়েছেন ৪১১ জন। পাশপাশি চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হয়েছেন ১৬ জন। আ’ক্রান্তদের মধ্যে সিভিল সার্জন, জেলা করোনা ফোকাল পার্সন ও সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কর্মকর্তা, ১০ জন চিকিৎসক, ত্রিশের অধিক স্বাস্থ্যকর্মী, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিকও রয়েছেন। এর মধ্যে করোনার সর্বোচ্চ ছোবল পড়েছে সিটি কর্পোরেশন এলাকায়। সিটির আওতায় আ’ক্রান্ত হয়েছেন ২৯৭ ও মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের।
করোনা ভা’ইরাসে সদ্য আ’ক্রান্ত হয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের তিন জন ম্যাজিস্ট্রেট। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে আ’ক্রান্ত হন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) জেলা নেতা ও নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের নেতা। আ’ক্রান্ত হয়েছেন শহরের চাষাড়ার ফার্মেসী ব্যবসায়ীসহ ৩ মাসের একটি শিশুও।করোনায় মৃত্যু হওয়া ৩০ জনের মধ্যে ব্যান্ডদলের গিটারিস্ট, রাজনীতিবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজা উৎযাপন পরিষদ নেতা, জেলা প্রশাসনের কর্মচারী ও ব্যবসায়ী মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হয়েছেন।
জেলায় এখন পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ৯৫৭ জনের। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথ কেয়ারের মাধ্যমে নমুনা সংগ্রহ হচ্ছে দুইটি স্কুলে। এছাড়া শহরের খানপুরে ৩শ’ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে আইসিইউ সুবিধায় করোনা রোগিদের চিকিৎসাসেবা শুরু হয়েছে। পাশাপাশি সোনারগাঁও উপজেলার কাঁচপুরে বেসরকারি ক্লিনিক সাজেদা হাসপাতালেও করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জের করোনার এই আশঙ্কাজনক পরিস্থিতি মোকাবিলার বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সেলিম রেজা জানান, এ মুহূর্তে একমাত্র উপায় হচ্ছে স্যাম্পল কালেকলন (নমুনা সংগ্রহ) বাড়ানো। নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো গেলে মহামারি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।তিনি জানান, ইতোমধ্যে জেলায় অনলাইনের মাধ্যমে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হচ্ছে। মোবাইল ফোনে কেউ তাদের শারীরিক অসুস্থতা ও উপসর্গের কথা জানালে সাথে সাথে আমরা আইইডিসিআরে তার সিরিয়াল দিয়ে দেই। পরদিন বাড়িতে লোক পাঠিয়ে স্যাম্পল সংগ্রহ করে ঢাকায় আইইডিসিআরে পাঠাই।