৫ ভাইয়ের স’ঙ্গে সংসার, জানুন গা শি’উরে ওঠার মত কা’হিনী !!
একজনের স্ত্রী’ হয়েই শ্বশুর বাড়ি গিয়েছিলেন ওই তরুণী। কিন্তু, শ্বা’শুড়ির ইচ্ছেতেই স্বামীর চারভাইকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। ছে’লে বাড়িতে নতুন বৌকে নিয়ে গেলে অন্ধ মা আদেশ করেন, ‘যা এনেছ বাবা, পাঁচভাই মিলে ভাগ করে নাও।’ ছে’লে মায়ের কথায় অনেক ক’ষ্ট পান।
কিন্তু, মায়ের আদেশ ফেলতে পারেননি। তাই নিজে’র স্ত্রী’কে সহোদর চারভাইয়ের স’ঙ্গে ও বিয়ে দেন তিনি। এরপর পাঁচভাই এক নারীর স’ঙ্গে সংসার করেন।পুরুষদের একাধিক স্ত্রী’ থাকার কা’হিনী পুরাণ, ইতিহাস, গল্পে শোনা যায়। কিন্তু মহাভা’রতের দ্রৌপদীই একমাত্র নারী চরিত্র যার একের বেশি বিয়ে হয়েছিলো। অর্জুনের
স্ত্রী’ হয়েই শ্বশুর বাড়িতে যান দ্রৌপদী। অর্জুনের প্রতিই দ্রৌপদীর একমাত্র অনুভূতি ছিলো। মন থেকে স্বামী হিসেবে তাকেই শুধু মেনেছিলেন তিনি। কিন্তু বাকি যুধিষ্ঠির,ভীম, নকুল ও সহদেবের স’ঙ্গে তার সমীকরণ কেমন ছিলো তা অজা’না। শোনা যায়, যে মনের আদান প্রদান না হলেও প্রত্যেকের স’ঙ্গে একটি করে সন্তানের জ’ন্ম দিয়েছিলেন
দ্রৌপদী। অর্জুনও চাননি তার স্ত্রী’কে ভাইদের স’ঙ্গে ভাগ করে নিতে। কিন্তু, মায়ের আদেশ ফেলতে পারেননি অর্জুন। তাই আবেগকে দূ’রে ঠেলে নিজে’র স্ত্রী’কে ভাগ করেনিয়েছিলেন তিনি। মনে মনে অর্জুন ভাবতেন দ্রৌপদী শুধুই তার। কিন্তু আদেশ রাখতে গিয়ে স্ত্রী’র উপর থেকে অধিকারবোধ বিসর্জন দিয়েছিলেন। দ্রৌপদীর মনে শুধু একজন
পুরুষেরই নাম ছিলো। তা হলো অর্জুন। তাই অর্জুন শুভদ্রাকে বিয়ে করলে ভে’ঙে প’ড়েছিলেন দ্রৌপদী। যুধিষ্ঠির যেহেতু জ্যেষ্ঠ সেহেতু তিনি স্থির করেন, দ্রৌপদীর সান্নিধ্যতিনিই সবার আগে উপভো’গ করবেন। অন্য ভাইয়েরা তার এ সিদ্ধা’ন্ত মেনে নেন।কেমন ছিলো পাঁচ স্বামীর স’ঙ্গে তার গৃহ’জীবন? মহাভা’রত ঘাঁটলে এই বিষয়ে পাওয়া যায় কয়েকটি চ’মকে ওঠার মতো তথ্য।
১. পত্নী হিসেবে দ্রৌপদী ছিলেন নিষ্ঠাবতী। প্রত্যেক স্বামীকেই তৃপ্ত করার ক্ষ’মতা ছিলো তার। একজন স্বামী টানা এক বছর দ্রৌপদীর ঘরে কা’টানোর পরে দ্রৌপদীর সান্নিধ্যলাভের সুযোগ মিলত দ্বিতীয় স্বামীর। এই নিয়মে পর্যায়ক্রমে চলত তাদের গৃহ’জীবন।
২. এক স্বামীর স’ঙ্গে এক বছর কা’টানোর পরে দ্বিতীয় স্বামীর কাছে যাওয়ার আগে অ’গ্নিতে প্রবেশ করে নিজেকে শা’রীরিকভাবে শুদ্ধ ও পুনরায় কুমা’রী করে নিতেন দ্রৌপদী। প্রত্যেক স্বামীর ঔরসে পাঁচটি করে পুত্র সন্তানের জননী হয়েছিলেন দ্রৌপদী।
৩. বিবাহের আগেই যুধিষ্ঠির তার ভাইদের ডেকে শোনান সুন্দ-উপসুন্দ নামে দুই রাক্ষস ভ্রাতার গল্প। জা’নান, কিভাবে এক সু’ন্দরী নারীর প্রে’মে পড়ে তারা পরস্পরের ধ্বং’সেরকারণ হয়েছিলো। তিনি বোঝাতে চান, দ্রৌপদী যেন তাদের ভাতৃবিবাদের কারণ না হন। সেই বিষয়টি মা’থায় রেখেই, তিনি এই নিয়ম চালু করেন যে, এক এক ভাই একটা নির্দিষ্ট
সময়ের জন্য দ্রৌপদীর স’ঙ্গে যাপন করবেন। তারপর দ্রৌপদীর সান্নিধ্য পাবেন দ্বিতীয় ভাই। কেউ এই নিয়ম অমান্য করলে মিলবে শা’স্তি। একবার ক্ষাত্রধ’র্ম পা’লনের দায়েঅর্জুন এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটান। শা’স্তিস্বরূপ তাকে ১২ বছর নির্বাসনে কা’টাতে হয়।
৪. যুধিষ্ঠির যেহেতু জ্যেষ্ঠ সেহেতু তিনি স্থির করেন, দ্রৌপদীর সান্নিধ্য তিনিই সবার আগে উপভো’গ করবেন। অন্য ভাইয়েরা তার এই সিদ্ধা’ন্ত মেনে নেন। যুধিষ্ঠির তৃপ্তহয়েছিলেন দ্রৌপদীকে কাছে পেয়ে। কিন্তু দ্রৌপদীর মনে হয়েছিলো, যুধিষ্ঠিরের মধ্যে বড় বেশি আধিপত্য বি’স্তারের মা’নসিকতা ক্রিয়াশীল। নারীর সূক্ষ্ম অনুভূতি বোঝার ক্ষ’মতাও তার কিঞ্চিৎ কম বলেই মনে হয়েছিলো দ্রৌপদীর।
৫. যুধিষ্ঠিরের পর একে একে ভীম, অর্জুন ও নকুল ও সহদেব দ্রৌপদীর সঙ্গ লাভ করেন।৬. দ্রৌপদীর প্রতি ভীমের ভালোবাসা ছিলো প্রগাঢ়। পাঁচ স্বামীর মধ্যে তিনিই সর্বাধিক ভালোবাসতেন দ্রৌপদীকে। দ্রৌপদীর সমস্ত ছোটখাটো ইচ্ছেপূরণের ব্যাপারে ভীম ছিলেন সদাতৎপর। তিনি দ্রৌপদীকে কুবেরের বাগান থেকে ফুল এনে উপহার দিতেন।
৭. ভীম বাহ্যত কর্কশ ও ক্রো’ধী প্রকৃতির হলেও দ্রৌপদীর প্রতি তার ব্যবহার ছিলো সদা কোমল। দ্রৌপদীকে মৎস্য রাজ্যের রানি সুদেষ্ণার দাসীর ভূমিকা পা’লন ক’রতে হবে জে’নে ভীম কেঁদে ফে’লে ছিলেন। দ্রৌপদীও অ’ত্যন্ত ভরসা ক’রতেন ভীমকে। মৎস্য রাজ্যে কিচকের হাতে লা’ঞ্ছিত হওয়ার পরে প্রতিবিধানের আশায় দ্রৌপদী ছুটে গিয়েছিলেন ভীমের কাছেই।
৮. পাঁচ স্বামীর মধ্যে দ্রৌপদী সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতেন অর্জুনকে। কারণ অর্জুনই তাকে স্বয়ম্বর সভায় জিতে নিয়েছিলেন। যদিও অর্জুনের প্রিয়তমা পত্নী দ্রৌপদী ছিলেন না। অর্জুন তার স্ত্রী’দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতেন সুভদ্রাকে, যিনি ছিলেন
কৃষ্ণের ভগিনী। সুভদ্রার গর্ভজাত অ’ভিমন্যু ছিলেন অর্জুনের প্রিয়তম পুত্র। দ্রৌপদীর গর্ভজাত নিজে’র সন্তানদের তুলনায় অ’ভিমন্যুকে সবসময়েই বেশি গু’রুত্ব দিয়েছেন অর্জুন।
৯. অন্যান্য স্বামীরা যখন একাধিক বিবাহ ক’রেছেন, তখন দ্রৌপদীকে খুব একটা ব্যথিত হতে দেখা যায় না মহাভা’রতে। কিন্তু অর্জুন যখন সুভদ্রাকে বিয়ে করলেন, তখনমা’নসিকভাবে ভে’ঙে পড়েছিলেন দ্রৌপদী। সুভদ্রা দাসীর বেশে দ্রৌপদীর সামনে হাজির হয়েছিলেন শুধু এইটুকু বোঝানোর জন্য যে, সামাজিক ম’র্যাদায় তিনি সর্বদাই দ্রৌপদীর নিম্নবর্তী।
১০. ভাইদের মধ্যে যুধিষ্ঠিরের প্রতি নকুল ও সহদেবের আনুগত্য ছিল সর্বাধিক। ম’দ্রদেশ শাসনের সুযোগ তারা হেলায় ছেড়ে দিয়েছিলেন যুধিষ্ঠিরের সান্নিধ্য পাওয়ার লো’ভে। দ্রৌপদীর স’ঙ্গে নকুল ও সহদেবের স’ম্পর্কও সর্বদাই নিয়ন্ত্রিত হয়েছে যুধিষ্ঠিরের নির্দে’শ ও পরাম’র্শের দ্বারা।