দেওবন্দের বুদ্ধিজীবী ও আলেমগণ বাবরি মসজিদ নিয়ে যা বলছেন !!
ভারতের বাবরি মসজিদ ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টের গতকাল শনিবার দেয়া সিদ্ধান্তের পরে আজ রোববার ভারতের দারুল উলূম দেওবন্দ এর আলেমগণ ও আইনজীবীগণ বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।
গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে দারুল উলুম দেওবন্দ বলেছেন, বাবরি মসজিদের অকাট্য প্রমাণ দেয়ার পরও আদালতের সিদ্ধান্ত পুরোপুরি বোধগম্য নয়। দারুল উলূম দেওবন্দ দেশের মুসলমানদের আইনশৃঙ্খলাপরিস্থিতি শান্ত রাখার আবেদন করেছেন।
দারুল উলূম দেওবন্দের মুহতামিম মুফতি আবুল কাসিম নোমানি বলেন, বাবরি মসজিদ সম্পর্কিত সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত আশ্চর্যজনক। সুস্পষ্ট প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও এ সিদ্ধান্তটি আমাদের বোধগম্যের বাইরে।
দ্বিতীয়ত, মামলাটি বিতর্কিত জমির মালিকানা অধিকার নিয়ে ছিল। আদালত এ জমিটির মালিকানা স্পষ্ট না করেই রায় দিয়ে দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, যতদূর আমরা মসজিদ সম্পর্কে জানি, ইসলাম ধর্মে মসজিদ আল্লাহর ঘর। এর মালিকানা আল্লাহরই থাকে।
মসজিদের জমির মালিকানা মুসলিমদেরও নেই। মসজিদটি নির্মিত হওয়ার পরে এটি মসজিদ হিসেবেই থেকে যায় আজীবন। কোনওভাবেই এর মালিকানা মোছা যাবে না।
দেওবন্দের বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ পীরে কামেল, মাওলানা হাসান আল হাশেমি বলেন, বাবরি মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির বলতে কোনো কিছুর অস্তিত্ব নেই। রাম জন্মভূমি বিরোধে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত হতাশাজনক। ভারতের মুসলিমরা এ রায়ে হতবাক হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, প্রত্নতাত্ত্বিক প্রতিবেদনে উল্লিখিত স্থানে মন্দির ছিলো এ কথা কোথাও উল্লেখ করা হয়নি, এক্ষেত্রে আদালতের সিদ্ধান্ত অবাক করা।
দেওবন্দের প্রবীণ আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাসিম আনসারী এ সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ভারতীয় আইনের অধীনে ধর্মীয় ব্যবহারের জন্য জমি বরাদ্দ দেওয়ার বা কোনও সরকারী জমিতে মসজিদ নির্মাণের প্রস্তাব নেই।
বর্তমান বিরোধটি একটি মালিকানাধীন জমির অধিকার বিষয়ে ছিল, যার কোনও ভিত্তি নেই। এ ক্ষেত্রে মুসলিম দলের পক্ষে মসজিদের পাঁচ একর জমির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। তারপরও কোর্ট এটা কি ধরণের রায় দিলো আমার বুঝে আসে না।
ভারতের ইউপি যোগাযোগ কমিটির সেক্রেটারি ডা. ওবায়েদ ইকবাল অসীম বলেন, আমরা অযোধ্যা ইস্যুতে আদালতের সিদ্ধান্তকে সম্মান করি তবে আদালতের সিদ্ধান্ত পরিষ্কার নয়, অনেক প্রশ্ন রেখে থেকে যায় এ রায়ে।
তিনি আরো বলেন, দ্বাদশ শতাব্দীতে উল্লিখিত স্থানে কোনও বিল্ডিং নেই বলে আদালত স্বীকৃতি দিয়েছে, এটি স্পষ্ট যে বাবরি মসজিদ কোনও ভবনের উপর নির্মিত হয়নি।
তিনি বলেছিলেন যে প্রত্নতাত্ত্বিক প্রতিবেদনে উল্লিখিত স্থানে মন্দিরের কথাও উল্লেখ করা হয়নি, এক্ষেত্রে আদালতের সিদ্ধান্ত অবাক করা।