দোকানে টাকার পরিবর্তে পেঁয়াজ ভিক্ষা চাচ্ছেন ভিক্ষুকরা !!
সারাদেশের মতো ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলায় পেঁয়াজের দাম বেড়েই চলছে। দুদিনের ব্যবধানে ১৪০ টাকার পেঁয়াজ এখন ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আজ ১৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে গফরগাঁওয়ের আড়তদাররা পাইকারি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। খুচরা বাজারে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজের কেজি।
ইতোমধ্যে পেঁয়াজ সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। এ অবস্থায় বাজারে দেখা গেছে দুজন ভিক্ষুক টাকা চাইছেন না, টাকার পরিবর্তে পেঁয়াজ ভিক্ষা চাইছেন তারা।
এদিকে সরেজমিনে দেখা যায়, গফরগাঁওয়ের অধিকাংশ দোকানে পেঁয়াজ নেই। দু-একটি দোকানে অল্প পরিমাণে দেশি পেঁয়াজ থাকলেও ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ অবস্থায় নিম্ন আয়ের কেউ কেউ পেঁয়াজ না কিনে ফিরে গেছেন। আবার কেউ কেউ ২৫০ গ্রাম পেঁয়াজ ৪০ টাকা দিয়ে কিনেছেন।
এ সময় পেঁয়াজ ক্রেতা আলমগীর হোসেন নামের একজন বলেন, ‘কাল পেঁয়াজের কেজি ছিল ১৪০ টাকা। আজ ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। ৪০ টাকা দিয়ে ২৫০ গ্রাম পেঁয়াজ কিনেছি। তরকারিতে পেঁয়াজ খাওয়া কমিয়ে দিয়েছি আমরা।’
এ সময় খুচরা ব্যবসায়ী মীর আবু হোসেন বলেন, ‘বুধবারও ১৫০ টাকা দরে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। একদিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি প্রায় ৪০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের কিছুই করার নেই। পেঁয়াজের আমদানি খুব কম। দেশি পেঁয়াজ ছাড়া বাজারে কোনো পেঁয়াজ নেই। যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে তাতে বোঝা যায় পেঁয়াজের দাম আরও বাড়বে।’
পেঁয়াজের পাইকারি বিক্রেতা কামরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিন আমার ১০০ বস্তা পেঁয়াজ লাগে। কিন্তু এখন মাত্র ৪০ বস্তা পেঁয়াজ আমদানি করি। বিদেশি পেঁয়াজ যেগুলো দেশে আসছে তা ঢাকা-চট্টগ্রামে শেষ হয়ে যায়। এখানে পৌঁছে না।’
এ সময় পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা কামরুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলা অবস্থায় দুই নারী ভিক্ষুক এসে বলেন, ‘আল্লারস্তে দুইডা পেঁয়াজ ভিক্কা দেনগো বাবা।’ এ সময় কামরুল ইসলাম দুই ভিক্ষুককে দুই টাকা করে দিতে চাইলে তারা টাকার বদলে পেঁয়াজ চান। পরে একটি করে পেঁয়াজ দিয়ে তাদের বিদায় করেন পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা কামরুল।
এ ব্যাপারে গফরগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী মাহবুব উর রহমান বলেন, ‘বাজার মনিটরিংয়ের ব্যাপারে আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা আসেনি। নির্দেশনা এলে বাজারে অভিযান চালানো হবে।’