মামলা কমাতে পুলিশ কর্মকর্তার অভিনব কৌশল !!
হবিগঞ্জে সালিশের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তিতে মনযোগী হয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা। বিরোধপূর্ণ পক্ষগুলোকে নিয়ে বসে উভয়ের কথা শুনেন। সাক্ষীদেরও সাক্ষ্য নেন। এরপর তা মীমাংসা করে দেন।
এমনভাবে বিরোধ নিষ্পত্তি করেন উভয়পক্ষই তাতে সন্তুষ্ট থাকে। অনেক সালিশ করেন গল্পের ছলেও। যে কেউ দেখলে মনে করবেন, যেন কোনো গ্রাম্য মুরব্বি সালিশ করে দিচ্ছেন।
এমন অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলাম। সালিশে তিনি উভয়পক্ষের মুরব্বিদেরও পরামর্শ নেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলাম জানান, মানুষের সমস্যাগুলোকে নিজের সমস্যা মনে করেই দেখি। তাদের সুখ দুঃখের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনি। মানুষ যখন তার ক্ষোভের কথা মন খুলে বলতে পারে তখন তার ক্ষোভ অনেকটাই কমে যায়।
তিনি বলেন, ছোটখাটো বিষয়ে মামলা মোকদ্দমায় মানুষ জড়িয়ে তার সহায় সম্পদ সব নষ্ট করে। এগুলো আমাকে পীড়া দেয়। আদালতে দৌড়ে মানুষ সব নষ্ট করে। এমন তাড়না থেকেই আমি সালিশে বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্যোগী হয়ে উঠি। এতে পুলিশের প্রতিও মানুষের আস্থা বাড়ে। এখন পুলিশকে ভয় নয়, আপন মনে করে মানুষ।
জানা গেছে, গত এক বছরে সদর, লাখাই ও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় শতাধিক বিরোধ সালিশে নিষ্পত্তি করেছেন পুলিশ কর্মকর্তা। দিনরাত তিনি বিভিন্ন স্থানে চষে বেড়ান মানুষের বিরোধ খোঁজে। স্থানীয় কমিউনিটি পুলিশ, বিট পুলিশ কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, গ্রাম্য মুরব্বিসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন। তাদের মাধ্যমে বিরোধীয় পক্ষগুলোকে খুঁজে বের করে সালিশের আয়োজন করা হয়।
হাটবাজার, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় সচেতনতামূলক সভা করেন। সব শ্রেণির মানুষের কাছে নিজের মোবাইল নম্বর ছড়িয়ে দেন। কেউ যেন কোনো বিরোধে জড়ালেই তাকে জানানো হয়। নির্ধারিত কোনো সোর্স নিয়োগ না করে স্থানীয় মানুষের সহায়তায় অপরাধ দমনে কাজ করছেন। এতে বেশ সারাও পাওয়া যাচ্ছে।
মানুষও উৎফুল্ল হয়ে তাকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলাম বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন মানুষের কাছে। আর স্থানীয় মানুষের সহায়তা নিয়ে ইতিমধ্যে ৩০ জন ডাকাত গ্রেফতার করেছেন।
এ ছাড়াও ২ জন ডাকাত পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে। ৫টি খুনের রহস্য উদ্ঘাটন করা হয়েছে। এগুলোর কোনো ক্লু ছিল না পুলিশের কাছে। বিভিন্ন স্থানে সচেতনতামূলক সভা করেছেন ৫০০টি।