পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে বাড়ি নির্মাণ করলেন কুমিল্লার শফিকুল !!
ইট-পাথরের সঙ্গে সুরকি-সিমেন্ট মিশিয়ে বাড়ি তৈরির কথাই এতদিন সবাই জানত। তবে এবার কুমিল্লার হোমনা উপজেলার সীমান্তবর্তী লটিয়া গ্রামের মো. শফিকুল ইসলামের বাড়িটি পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল আর সিমেন্ট দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে।
হোমনা সদর থেকে তিন কিলোমিটার রাস্তা পাশে উপজেলার লটিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী মোল্লার ছেলে মো. শফিকুল তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে ঢাকার রাজারবাগ পুলিশলাইনে কর্মরত আছেন।
তিনি প্লাস্টিকের পরিত্যক্ত বোতল দিয়ে বাড়ি নির্মাণ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। এখন ছাদ ঢালাইয়ের বাকি। তবে প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে নির্মাণাধীন বাড়িটি এখন হোমনার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। যেখানে একটি ইটের দাম প্রায় ১০ টাকা, সেখানে প্রতি বোতলের দাম ২ টাকা বলে জানা গিয়েছে। এত কম খরচে বাড়ি তৈরির পদ্ধতিতে খুশি গ্রামবাসীরাও। দূর দূরান্ত থেকে এই ব্যতিক্রম বাড়িটি দেখার জন্য প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন তার বাড়িতে।
সরেজমিন হোমনা পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের লটিয়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কের ডান পাশে ছোট-বড় নানা রঙের প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে পাঁচ কক্ষবিশিষ্ট একটি বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। সড়কটি দিয়ে যাতায়াতকারী পথচারীরা এক পলক দেখে থেমে যান। বাড়িটির কাছে এগিয়ে গিয়ে ছুঁয়ে দেখেন। পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে এত মজবুত ও দর্শনীয় ডিজাইনের বাড়ি নির্মাণ করা যায় তা ভেবেই নানান প্রশ্ন করেন পথচারীরা। আর এসব প্রশ্নের যৌক্তিক সব উত্তর দেন শফিকুল ইসলাম।
বোতলবাড়ির উদ্যেক্তা শফিকুল ইসলাম জানান, ২০১১ সালে একটি জাতীয় পত্রিকায়, ইউটিউবে দেখি জাপানে প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে তিনতলা বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। তা দেখে আমি বোতল বাড়ি নির্মানের জন্য বোতল সংগ্রহের কাজে বেরিয়ে পড়েন। প্রায় ৬০ হাজার বোতল সংগ্রহের পর রাজমিস্ত্রিকে নিয়ে নিজে নিজেই নকশা তৈরি করে বাড়ির কাজ শুরু করি।
রাজমিস্ত্রি মো. আলমগীর জানান, বাড়ি শফিকুল ইসলামের নকশা করা। আমাকে যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, সেভাবে করা হয়েছে। বোতল-বালি ইটের চেয়ে ১৫ থেকে ২০ গুণ বেশি শক্ত। বালু গরমে তাপ শোষণ করে ঘরকে অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা রাখে। গরমের দিনে অন্যান্য ঘরের তুলনায় এটা শীতল থাকে। পরিবেশবান্ধব, তাপশোষক, অগ্নিনিরোধক ও ভূমিকম্প সহনীয় এ বাড়ি তৈরিতে ইটের বাড়িটি ৪০ শতাংশ কম টাকা খরচ হবে।