১৩ কোটি টাকা লেনদেনের ফোনালাপ ফাঁস, মুখ খুললেন ভিপি নুর !!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর ফাঁস হওয়া ফোনালাপকে বিকৃত বলে অভিযোগ করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে ফাঁস করা হয় ভিপি নুরের একটি ফোনালাপের অডিওক্লিপ। এরপর আরো কয়েকটি ইলেকট্রনিক মিডিয়াসহ বিভিন্ন অনলাইনে বিষয়টি প্রচারিত হয়।
ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিপি নুরের সেই অডিওক্লিপটি ভাইরাল হয়ে পড়ে। এ নিয়ে নুরের সমালোচনায় মেতে ওঠেন নেটিজেনদের একাংশ। ফোনালাপের একটি কণ্ঠ যে তারই তা ইতিমধ্যে স্বীকার করেছেন ভিপি নুর। তবে টেলিভিশন চ্যানেলটি উদেশ্যপ্রণোদিতভাবে তার ফোনালাপকে আংশিক প্রচার করে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ডাকসুর এই ভিপি।
এ বিষয়টি পরিস্কার করতে ভিপি নুর মঙ্গলবার রাতেই ফেসবুক লাইভে আসেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, ‘আমার একটি ফোনালাপ ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমার পুরোপুরি কথা না শুনিয়ে এর আংশিক প্রচার করা হয়েছে। এট সাংবাদিকতার নীতি বিরুদ্ধ। আমি এর বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদলিপি ও উকিল নোটিশ পাঠাব। টেলিভিশন চ্যানেলটি ফোনালাপের আংশিক তথ্য তুলে ধরেছে। ওখানে কিন্তু ক্লিয়ার করা নেই যে আমি কাউকে কাজের কথা বলছি বা কারো কাছে কাজ চাচ্ছি বা কাউকে সুপারিশ করছি। এমনভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে তারা অডিওক্লিপটি প্রচার করেছে যেন বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়।’
তাছাড়া ওই ব্যক্তির কাছে তিনি কি বিষয়ে সাহায্য চেয়েছেন তা লাইভে পরিস্কার করেন ভিপি নুর। তিনি বলেন, ‘আমার এক আন্টি আগে থেকেই কন্সট্রাকশনের বিজনেস করেন। তার একটি প্রকল্পে ১৩ কোটি টাকার কাজ ছিল। কাজটির জন্য ব্যাংক গ্যারান্টি দেয়ার লাস্ট তারিখের আগের দিন আন্টি আমাকে ফোন দেন। এসময় তিনি পরিচিত কারো মাধ্যমে যাদের লাইসেন্স আছে, তাদের মাধ্যমে যেন ব্যাংক গ্যারান্টার করে রাখি। শেষ দিন হওয়ায় আমি আমার পরিচিত এক কন্ডাক্টরকে কাজটি করতে পারবে কি-না সেটা জিজ্ঞেস করি। এটাই ছিল ফোনালাপ।’
এ সময় তিনি বলেন, ‘বিষয়টা আমাদের পারিবারিক ব্যবসাসংক্রান্ত। আর সেটাকেই এভাবে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হলো। আমি ডাকসুর ভিপি। আমার ফোন নম্বর লাখো মানুষের কাছে আছে। এখন ছাত্রলীগের কেউ যদি ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসানোর জন্য টাকা দেবে বলে ই-মেইল অ্যাড্রেস চায় তো আমি জবাবে কি বলেছি সেটা ফোনালাপে নেই। আমি কী বলছি সেটা অডিওতে যোগ না করে আমাকে কি বলেছে সেটা যোগ করা হয়েছে। এটা কেউ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমাকে বিব্রত করতেই করেছে।’
নুর যোগ করেন, ‘আমি সেখানে কী বলছি সেটার রিপ্লাইও শোনানো উচিত। এমন ফোনতো যে কেউ করতে পারে। শুধু তার অংশটুকু শুনেই জাস্টিফাই করা উচিত নয়। কিন্তু আমি তাকে বলে দিছি, অপরিচিত কারও কাছ থেকে সহযোগিতা নেব না। যদি প্রয়োজন হয়, আপনাকে জানাব। আমার উত্তরটা ছিল এমন। অডিওতে এটা যোগ করা হয়নি। এখানে কোন আর্থিক লেনদেনের ঘটনা ঘটেনি।’
এ সময় লাইভে নুরের দাবি, ‘আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ক্ষমতাধরদের বিভিন্ন দুর্বৃত্তায়ন নিয়ে কথা বলছি, বিভিন্ন বাহিনী দিয়ে নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরছি বলেই এই ষড়যন্ত্র। আমাদেরকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই এই ফোনলাপ ফাঁস করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এর আগেও বিভিন্ন সংবাদসম্মেলনে আমি বলেছি, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় আমাদেরকে হোটেল রেডিসনে নিয়ে বড় চাকরি দেয়াসহ বিভিন্ন প্রলোভন দেখানো হয়েছিল। তারা বলেছিল, আমরা যেন কোটা সংস্কার নিয়ে কোনো নাড়াচড়া না করি। এছাড়াও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকেও পদ-পদবি দেয়ার প্রলোভন দেখানো হয়েছিল। তবে আমরা সেসব লোভে সাড়া দিইনি। এখন মিডিয়ার মাধ্যমে বিকৃতভাবে ফোনালাপ ফাঁস করে আমাদের হেয় ও বিব্রত করার চেষ্টা করা হয়েছে।’