নতুন ড্যাপে ২৫টি পার্ক-খেলার মাঠ করার পরিকল্পনা !!
রাজধানী ঢাকাকে আধুনিক শহর হিসেবে গড়ে তুলতে চায়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। সে লক্ষ্যে ঢাকাকে আরও বাসযোগ্য এবং উন্নত শহর হিসেবে গড়ে তুলতে রাজউকের তত্ত্বাবধানে ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানের (ড্যাপ) কাজ চলছে। সংশোধিত ড্যাপে নতুন কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে- রাজউকের আওতাধীন এলাকার বিদ্যমান চেহারা বদলে যাবে। এর মধ্যমে পুরান ঢাকাসহ রাজধানীর অনেক ঘিঞ্জি ও অপরিকল্পিত এলাকা নতুন করে সাজানো হবে। নতুন ড্যাপে জোনভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রস্তাবিত নতুন ড্যাপে ২৫টি পার্ক ও খেলার মাঠের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
রাজউকের ২০১৬ থেকে ২০৩৫ সালের জন্য প্রণীত ঢাকা মহানগর বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার (খসড়া) আওতায় বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে ঢাকাকে মোট ১১ ধরনের ভূমি ব্যবহার জোনে বিভক্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষের বোঝার উপযোগী করে মাতৃভাষা বাংলায় প্রণয়ন হবে সংশোধিত ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান বা বিশদ নগর অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ)। রাজউকের এক হাজার ৫২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকার জন্য ২০ বছর মেয়াদের এ পরিকল্পনা ২০৩৫ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
১৯৯০ সালে ঢাকা সিটি করপোরেশন হিসেবে প্রতিষ্ঠার পর এ পর্যন্ত নতুন করে কোনো পার্ক, খেলার মাঠ বা উদ্যানের কোনো পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়নি। ফলে ঘনবসতিপূর্ণ রাজধানী ঢাকা শহর ক্রমেই বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। বড় আকারের উদ্যান ছাড়াও রাজধানীতে সিটি করপোরেশনের হিসেব মতে, পার্ক রয়েছে ৪১টি। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাধীন ১৯টি, আর উত্তরে (ডিএনসিসি) ২২টি পার্ক রয়েছে। যে কারণে নতুন করে পার্ক ও খেলার মাঠের পরিকল্পনা করা হচ্ছে নতুন ড্যাপে।
পাঁচ বছর মেয়াদে ড্যাপ মাস্টার প্ল্যান প্রথম প্রণয়ন হয়েছিল ২০১০ সালে। ২০১৫ সালে প্রথম ড্যাপের মেয়াদকাল শেষ হয়। বর্তমানে ওই ড্যাপের সময় বৃদ্ধি করে নগরীর উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে রাজউক। সংশ্লিষ্টদের মতে, ভূমি পুনঃ উন্নয়নের মাধ্যমে পুরান ঘিঞ্জি জনপদকে ভেঙে নতুন করে গড়ে তোলা সম্ভব হবে। সিঙ্গাপুর, জাপান, কোরিয়াসহ পৃথিবীর অনেক দেশ এমন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে পুরান শহরগুলোকে আধুনিক শহরে রূপ দিয়েছে।
নতুন ড্যাপে ২৫টি পার্ক-খেলার মাঠ বিষয়ে ড্যাপ পরিচালক আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকায় আগে যতগুলো পার্ক ছিল সেগুলোই রয়ে গেছে, নতুন করে কোনো পার্ক করা হয়নি। দিন দিন মানুষ বাড়ছে এবং শিশু-কিশোরদের মানসিক-শারীরিক বিকাশে পার্ক খেলার মাঠ খুব জরুরি। যে কারণে প্রস্তাবিত নতুন ড্যাপে ২৫টি পার্ক করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত পার্ক, খেলার মাঠগুলো পরিকল্পনা অনুযায়ী জলকেন্দ্রিক পার্কের মধ্যে রয়েছে- গোড়ান চটবাড়ি, শিয়ালবাড়ি (রূপনগর), কালশী-মাটিকাটা, আটিবাজার, হেমায়েতপুর, গাবতলী, বাউনিয়া, মিরেরগাঁও, বেগমপুর,পাগলা, নাসিরাবাদ, এবং বেরাইদ পার্ক।
এছাড়া ইকোপার্কগুলোর মধ্যে রয়েছে- গাজীপুর, উত্তরখান এবং সাঁতারকুল-নাসিরাবাদ ইকোপার্ক। আঞ্চলিক পার্ক হিসেবে থাকবে- নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পার্ক, সাভার আঞ্চলিক পার্ক, রূপগঞ্জ-কালীগঞ্জ আঞ্চলিক পার্ক, কেরানীগঞ্জ আঞ্চলিক পার্ক এবং গাজীপুর আঞ্চলিক পার্ক।
অন্যদিকে, অন্যান্য পার্ক হিসেবে রয়েছে- বাউনিয়া খেলার মাঠ, সাভার বংশী পার্ক, সাভার পার্ক, নারায়ণগঞ্জ পার্ক। এছাড়া হাজারীবাগ ট্যানারি এলাকায় জীববৈচিত্র্য পুনঃস্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।