‘আমি মুসলিম নই, তবুও আমি প্রতিবাদ-বিক্ষোভের প্রথমে আছি’ !!
ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে সহিংস বিক্ষোভ চলছে। আর এই বিক্ষোভ চলার সময় দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা চালায় পুলিশ। প্রাণ বাঁচাতে শিক্ষার্থীরা গ্রন্থাগার ও ঝোপের মধ্যে লুকিয়ে পড়ে। পরে অনেককেই দেখা যায় রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। ঝাড়খণ্ডের রাঁচি থেকে আসা এক নারী শিক্ষার্থী কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন। তিনি এবং আরও অনেকেই আতঙ্কে হোস্টেল ছেড়ে যাচ্ছেন বলে জানান।
তিনি বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম শিক্ষার্থীদের জন্যে দিল্লি সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা এবং এটি একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়। আমি ভেবেছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ই সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা হবে, আমাদের কিছুই হবে না। আমরা সারারাত ধরে কেঁদেছিলাম, কী হচ্ছে এসব।’ ক্ষুব্ধ ছাত্রীটি বলেন, ‘আমি এই গোটা দেশে নিরাপদ বোধ করছি না। কোথায় যাব এবং কোথায় গিয়ে আশ্রয় নেব তা আমি জানি না। আগামিকাল আমার বন্ধুরা ভারতীয় থাকবে কিনা তা জানি না।’ তিনি বলেন, ‘আমি তো মুসলিম নই। তবুও আমি প্রথম দিন থেকে এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভের প্রথম সারিতে রয়েছি। কেন? আমার পরিবারের কী হয়েছে তা নিয়ে কেউ প্রশ্ন করতেই পারেন। কিন্তু আমি মনে করি আমরা যদি ন্যায়ের পাশে দাঁড়াতেই না পারি তবে আমাদের পড়াশুনা কী কাজে লাগবে!’
নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে দিল্লি, আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় চলছে প্রতিবাদ বিক্ষোভ। ওই আইনের ফলে পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে ভারতে বসবাসরত ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব লাভে সুবিধা হবে। রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভ মিছিল ক্রমেই সহিংস হয়ে ওঠে। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা ভাঙচুর চালায় ও যানবাহন জ্বালিয়ে দেয়। সেই সময়েই পুলিশ এলে তাঁদের সঙ্গেও সংঘর্ষ বাঁধে শিক্ষার্থীদের। লাঠিচার্জ করে ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করে প্রায় ১০০ জন শিক্ষার্থীকে আটক করে। যদিও পরে আটক করা সব শিক্ষার্থীকেই ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ ছেড়ে দেওয়া হয়।