তীব্র শীতে মৌলভীবাজারে ৫ জন নিহত !!
দেশে প্রচন্ড শৈত্যপ্রবাহে মৌলভীবাজার কমলগঞ্জের জনজীবন কাহিল। শীতজনিত কারনে গত দু’দিনে চাশ্রমিকসহ ৫ জনের মৃ’ত্যুর খবর পাওয়া গেছে। কুয়াশা, প্রচন্ড ঠান্ডা ও মৃদু বাতাসে শিশু ও বয়স্ক মানুষরা দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। গরম কাপড়ের অভাবে চা শ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের মানুষেরা ভীষন কষ্ট পাচ্ছেন। খড়কুটা জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন তারা। সরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরনের কাজ তেমন দৃশ্যমান নয়। আজ ২১ ডিসেম্বর শনিবার সন্ধ্যায় কমলগঞ্জে ১১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে চা বাগানসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় ঘন কুয়াশার মাঝেও বিপুল সংখ্যাক মানুষ কাজে নিমগ্ন। হতদরিদ্ররা যেখানে সেখানে খড়খুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন। কূয়াশার কারণে শনিবার দিনভর কোথাও সূর্যের আলো দেখা যায়নি।
তাছাড়া ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে শনিবার সকাল দশটায় মারা গেছেন ডবলছড়া বাগানের রাজেন্দ্র তুলিয়ার স্ত্রী বুলেশ্বরী তুলিয়া (৬০)। এর একঘন্টা পর মারা গেছেন কানিহাটি চা বাগানের মিরা বীনের ছেলে হরিয়া বীন (৬০), আলীনগর ইউনিয়নের কামুদপুর আশ্রায়ন প্রকল্পের বাসিন্দা আঞ্জব আলী (৬৫)।
এর আগে গতকাল শুক্রবার দুপুরে শমশেরনগর ইউনিয়নের ফাঁড়ি ডবলছড়া চা বাগানের সুবল চাষার ছেলে রাখাল চাষা (৪৬) ও আপ্পালু কূর্মীর স্ত্রী দাঙ্গামা কূর্মী (৬০) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
এ ব্যাপারে শমসেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সীতারাম বীন জানান, শীতের কারণে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। কানিহাটি চা বাগান ও ডবলছড়া চা বাগনে প্রচন্ড ঠান্ডায় তাদের মৃত্যু হয়। চা শ্রমিকদের গরম কাপড়ের অভাব রয়েছে। সীতারাম স্থানীয় কানিহাটি চা বাগানের শ্রমিক নেতা।
এ বিষয়ে শব্দকর সমাজ উন্নয়ন পরিষদের সম্পাদক উপেন্দ্র শব্দকর বলেন, ‘উপজেলার মুন্সীবাজার, আলীনগর, আদমপুর ও পতনঊষার এলাকায় বেশ কিছু শব্দকর পরিবার রয়েছে। আয় রোজগার কম ও পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায় হিসাবে তাদের গরম কাপড়ের তীব্র সঙ্কট রয়েছে। শীতে তাদের চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে।’
এদিকে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক বিশ্বজিৎ সিংহ বলেন, ‘ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ২ শিশু ভর্তি রয়েছে। তবে ঠান্ডায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনা জানা নেই।’
এ ব্যাপারে কমলগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশেকুল হক বলেন, ‘ঠান্ডাজনিত রোগে দুইদিনে কমলগঞ্জে ৫ জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ চলমান। শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম জোরদার করা হবে।’