টাকা না দিলে ওরা আমায় মেরে ফেলবে, স্ত্রীকে ডাক্তারের আকুতি, এরপর…
পিস্তল ঠেকিয়ে ৫০ লাখ টাকা দাবি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে এক চিকিৎসককে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। অপহরণকারীরা ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ না দিলে হত্যার হুমকি দেয়। সোমবার সকালে হাওড়ার রামরাজাতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভারতীয় একটি গণমাধ্যম জানায়, রামরাজাতলায় বাড়ি লাগোয়া একটি প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি এবং নার্সিংহোম রয়েছে দেবীশঙ্করের।
আমতার একটি চিকিৎসা কেন্দ্রে তিনি প্রতি সোমবার রোগী দেখতে যান ওই ডাক্তার। সকালে তিনি গাড়ি নিয়ে আমতা ও মুন্সিরহাটের মোড়ের দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় হঠাৎ দুটি মোটরবাইকে চার যুবক এসে গাড়ি থামায়। তাদের মুখ ছিল ‘ফুল মাস্ক’ হেলমেটে ঢাকা। জোর করে চার জন গাড়িতে উঠে দেবীশঙ্করের মাথায় রিভলভার ঠেকিয়ে অপহরণ করে। পরে তাকে দিয়েই বাড়িতে ফোন করিয়ে ৫০ লাখ টাকা চায়। ফোনে স্ত্রীকে তিনি জানান, তাকে অপহরণ করা হয়েছে। ৫০ লাখ টাকা জোগাড় করতে না পারলে অপহরণকারীরা মেরে ফেলবে। ঠিক আধ ঘণ্টা পর অপহরণকারীরা ফোন করে হুমকি দিয়ে বলে, ‘ডাক্তারবাবুকে অপহরণ করা হয়েছে। ৫০ লাখ টাকা দিলে তবেই ছাড়া হবে। টাকা রেডি রাখুন। আমাদের লোক যাচ্ছে। পুলিশে খবর দেবেন না।’
এদিকে ডাক্তারের অপহরণ হওয়ার খবর জানতে পেরে স্থানীয় একটি ক্লাবের সদস্যরা সাহায্যে এগিয়ে আসেন। অপহরণকারীরা টাকা নিতে আসলেই হাতেনাতে ধরবেন বলে ক্লাবের ৮-১০ জন সদস্য ছড়িয়ে পড়েন দেবীশঙ্করের বাড়ির আশপাশে। ক্লাবের সদস্য শুভ দাস বলেন, ‘দুপুরের দেখি, দুটি ছেলে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাঘুরি করছে। আর ঘন ঘন ফোন করছে। আমরা কয়েক জন কাছাকাছি গিয়ে ফোনের কথোপকথন শুনে নিশ্চিত হই, তারাই অপহরণকারী। তখনই ধরে ফেলি।’ স্থানীয় বাসিন্দারাই ওই দুই অপহরণকারীকে উত্তম মধ্যম দিয়ে তুলে দেন পুলিশের হাতে। অপহরণের অভিযোগে জিৎ গোরা ও সংগ্রাম দাস ওরফে সুমন দাস নামে দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ কর্মকর্তা স্বাতী ভাঙালিয়া বলেন, ‘আটককৃতদের দিয়ে ফোন করিয়ে বাকি অপহরণকারীদের মিথ্যা খবর দেয়া হয় যে, ২০ লাখ টাকা ইতিমধ্যেই তারা পেয়ে গেছে। তাই ডাক্তারবাবুকে ছেড়ে দেয়া হোক। এরপর ওই চিকিৎসককে ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা।’