পুতিনকে যে প্রশ্ন করায় চাকরি গেল সাংবাদিকের !!
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে প্রশ্ন করে বেকায়দায় পড়ে গেলেন এক সাংবাদিক। শেষ পর্যন্ত চাকরিও খোয়াতে হয়েছে তাকে। প্রতি বছর বড় করে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন রুশ প্রেসিডেন্ট। সেখানে তার বক্তব্য শোনার পর তাকে নানা বিষয়ে প্রশ্ন করার জন্যে সাংবাদিকদের ডাকা হয়। রাশিয়ার ইয়ামাল এলাকার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের সাংবাদিক অ্যালিসা ইয়ারাভস্কিয়া প্রেসিডেন্ট পুতিনের বাৎসরিক সংবাদ সম্মেলনে গিয়েছিলেন। কোন সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করতে পারবেন সেটি প্রেসিডেন্ট পুতিনের মুখপাত্র ডিমিত্রি পেসকভ বাছাই করে থাকেন।
দীর্ঘ প্রশ্ন-উত্তর পর্বের এক সময়ে মাইক হাতে পান অ্যালিসা ইয়ারাভস্কিয়া। যদিও মাইক্রোফোনটি যাওয়ার কথা ছিল ডিমিত্রি পেসকভের বাছাই করা একই চ্যানেলের অন্য এক সাংবাদিকের কাছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ে কথা বলেন সেই সাংবাদিক। জানান, তার এলাকা ইয়ামালের জন্য এটি সৌভাগ্য বয়ে আনছে। এর ফলে আর্কটিক সাগরের বরফ গলে যাচ্ছে আর তাতে স্থানীয় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হচ্ছে। কিন্তু একটি সেতু নির্মাণে অনেক দেরি হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন অ্যালিসা ইয়ারাভস্কিয়া।
তিনি বলেন, ‘শহরের গভর্নর এই ব্রিজকে বাস্তবে রূপান্তরিত করার কম চেষ্টা করছেন না। কিন্তু আমরা শুনেছি, সরকারের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে বিষয়টি কম গুরুত্ব পাচ্ছে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে বড়সড় উদ্যোগ নেয়া যায়?’ এর যুক্তিসঙ্গত উত্তরই দেন পুতিন। তিনি বলেন, ‘শুধু একটি প্রকল্পকে গুরুত্ব দিয়ে বাছাই করা কেন্দ্রীয় সরকারের জন্য মানানসই হবে না। এই ব্রিজটি আঞ্চলিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় খুব গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল হিসেবে কাজ করবে সে প্রসঙ্গে তিনি ওয়াকিবহাল আছেন। এর দিকে বাড়তি মনোযোগ দেয়া হবে।’
এ ঘটনার পরপর চাকরি হারাতে হয় সেই সাংবাদিককে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে তার এই প্রশ্নে নাখোশ হয়েছেন ইয়ামাল অঞ্চলের কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি তার টেলিভিশন চ্যানেল তার উপর ক্ষুব্ধ হয়েছে কারণ যে সাংবাদিককে প্রশ্ন করার জন্য বাছাই করা হয়েছিলো তাকে মাইক্রোফোনটি না দিয়ে তিনি নিজেই প্রশ্ন করছেন। সেই চ্যানেলটিও স্থানীয় প্রশাসনের মালিকানাধীন। কেউ কেউ বলছেন সংবাদ সম্মেলনে তোলা ভ্লাদিমির পুতিনের একটি ছবি তিনি ফেসবুকে পোষ্ট করেছিলেন।
যেখানে তিনি প্রেসিডেন্টকে কেমন দেখাচ্ছিল সেটি নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। লিখেছিলেন, আমি কোন বোটক্সের চিহ্ন দেখছি না। তাকে (পুতিন) দেখে তার বয়সের মতোই মনে হচ্ছে। রাশিয়ায় চেহারায় বয়সের ছাপ লুকানোর জন্য ‘বোটক্স’ জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি। তবে ওই পোষ্টটি অবশ্য পরে ডিলিট করে ফেরা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট কোন কারণে অ্যালিসা ইয়ারাভস্কিয়ার চাকরি গেছে সেটি নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও পুতিনকে প্রশ্ন করাই যে তার কাল হয়েছে তাতে কোনো সংশয় নেই।