চট্টগ্রাম-৮ঃ ককটেল, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যদিয়ে চলছে ভোটগ্রহণ !!
চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনের উপনির্বাচনে সকাল থেকে ভোটারের উপস্থিতি কম। কয়েকটি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ফলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একটি কেন্দ্রের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে। আজ সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে এসব চিত্র পাওয়া গেছে। তবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগসহ সরকার সমর্থকদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। অনেক কেন্দ্রে বিএনপির সমর্থকদের দেখা যায়নি। আজ সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া এ ভোটগ্রহণ চলবে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত। এই আসনের সবগুলো কেন্দ্রেই ইভিএম-এ ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের সমর্থকদের দাবি, কুয়াশার কারণে সকালের ভোটারের উপস্থিতি কম। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারের উপস্থিতি বাড়বে। অপরদিকে বিএনপি প্রার্থী আবু সুফিয়ান দাবি করেছেন, ভোটারদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। তবে ভোট শুরু প্রথম দেড় ঘণ্টায় বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, কোথাও একেবারে ফাঁকা আবার কোথাও ভোটারদের লম্বা লাইন। এদিকে এখলাছুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে একটু পর পর ককটেল ফাটানো হচ্ছে, এমনটাই অভিযোগ করেছেন বিএনপি প্রার্থী আবু সুফিয়ান। ভোটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেখতেই তো পাচ্ছেন কেন্দ্রের বাইরে বোমা ফাটানো হচ্ছে। আমার এজেন্টদেরও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।’ তবে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকবেন জানালেন তিনি। সুফিয়ান বলেন, ‘ভোটের মাধ্যমে যে ফল আসবে, তা অবশ্যই মেনে নেব। তবে এখন যা হচ্ছে, ভোট ডাকাতি হলে তো মানা যায় না।’ এ বিষয়ে নগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাক বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। ভোটাররা যাতে নিজের ভোট নিজের পছন্দের প্রার্থীকে দিতে পারেন, তা তারা নিশ্চিত করছেন।’ নির্বাচনে ৬ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করছেন। তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে।
আরও জানা গেছে, ভোট শুরু হওয়ার পর নগরীর চাঁন্দগাঁও এলাকার এনএমসি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পুলিশ-বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া নগরীরর রাবেয়া বশর ইনস্টিটিউট ও আল হুমায়রা মহিলা মাদরাসায় বিএনপি প্রার্থীর এজেন্টদের ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিএনপি সমর্থকদের অভিযোগ, চাঁন্দগাঁও এলাকার এনএমসি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ধানের শীষের এক সমর্থককে পিটিয়ে ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে ছাত্রলীগের কর্মীরা। এরপর সেই সমর্থককে পুলিশ গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ধানের শীষের এক সমর্থককে পুলিশ গাড়িতে তুলে নিলে তাকে ছাড়িয়ে নিতে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে ধানের শীষের ওই সমর্থককে ছেড়ে দেয় পুলিশ। এদিকে পুলিশের অভিযোগ, বিএনপির সমর্থকরা তাদের ওপর হামলা চালিয়ে দুই কনস্টেবলের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে যায়। পরে অবশ্য সেগুলো ফেরত পাওয়া গেছে।
রাবেয়া বশর ইনস্টিটিউট ভোটকেন্দ্রের বিএনপির প্রার্থীর এজেন্ট সালাউদ্দিন শাহেদ অভিযোগ করে জানান, তাদের এজেন্টদের বের করে দেয়া হচ্ছে। ধানের শীষ সমর্থিত ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। কেবলমাত্র নৌকার সমর্থকরা ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে পারছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমেদ ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে বলেন, ‘বিএনপি আসলে আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচন করছে। তাদের কাজই হলো অভিযোগ করা। এখন পর্যন্ত কোথাও কারচুপির কোনো ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে। আর এতে যে ফলাফল আসবে আমি মেনে নেবো।’ এদিকে বিএনপির প্রার্থী আবু সুফিয়ানের অভিযোগের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (উত্তর) উপ-কমিশনার বিজয় বসাক বলেন, নির্বাচনে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটেছে। তবে বোমাবাজির অভিযোগ সঠিক না। আমার কাছে এরকম কোনো তথ্য নেই। যেকোনো ধরনের সংঘাত ঠেকানো এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের সব প্রস্তুতি নেয়া আছে। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।
সূত্রঃ বিডি২৪লাইভ