জেনে নিন পুরুষের যৌ’ন শক্তি বৃদ্ধির ১০০ ভাগ কার্যকর প্রাকৃতিক উপায় !!
সাধারণত খাবারে ভিটামিন এবং মিনারেলের ভারসাম্য ঠিক থাকলে শরীরে এন্ড্রোক্রাইন সিস্টেম সক্রিয় থাকে। আর তা শরীরে এস্ট্রোজেন এবং টেস্টোস্টেরনের তৈরি হওয়া নিয়ন্ত্রণ করে। এস্ট্রোজেন এবং পারফরমেন্সের জন্য জরুরি।
তাই যৌ’ন শক্তি শুধুমাত্র প্রাকৃতিকভাবেই পাওয়া সম্ভব। আজকাল অনলাইনে, পথে-ঘাটে, হাট-বাজারে যে গল্প বা ঔষধ পাওয়া যায় সেইগুলির বৈজ্ঞানিক ভিত্তি দেখে তবেই কেন উচিত। ভেজালময় জীবনে কি খেলে বাড়বে যৌ’ন কামনা আসুন একবার চোখ বুলিয়ে দেখে নেই।
খেজুর
প্রতিদিন প্রাতরাশ খাওয়ার সময় খেজুর খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। মাখনের সাথে খেজুর মিলিয়ে খেলে যৌ’নশক্তি বৃদ্ধি পায়, সেই সাথে শরীরের গঠন বাড়ে ও কন্ঠস্বর পরিস্কার হয়। খেজুর চুষলে তেষ্টা কম হয়।খেজুর দেহের শিরা কোমল করে এবং প্রসব ও শিরায় খিচুনির ফলে “আকটান পেইন” নামক যে ব্যাথা সৃষ্টি হয় তা দূর করে। মহিলাদের মধ্যে যৌ’ন উত্তাপ সৃষ্টি করে।
মধু
মাখন ও মধু একত্রে মিশ্রণ করে খেলে Pleurisy তথা বক্ষাবরক ঝিল্লি প্রদাহ রোগের উপকার হয় এবং শরীর মোটা করে। খাঁটি মধুতে পাওয়ারের সকল উপাদান বিদ্যমান। এছাড়াও সকালে খালি পেটে জিহ্বা দ্বারা মধু চেটে খেলে কফ দূর হয়, পাকস্থলী পরিস্কার হয়, দেহের অতিরিক্ত দূষিত পদার্থ বের হয়, গ্রন্থ খুলে দেয়, পাকস্থলী স্বাভাবিক হয়ে যায়, মস্তিস্ক শক্তি লাভ করে, স্বাভাবিক তাপে শক্তি আসে, রতি শক্তি বৃদ্ধি হয়, মূত্রথলির পাথর দূর করে, প্রস্রাব স্বাভাবিক হয়, গ্যাস নির্গত হয় ও ক্ষুধা বাড়ায়। প্যারালাইসিসের জন্যও মধু উপকারি।
কলিজা
যৌ’ন জীবনে খাদ্য হিসেবে কলিজার গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ, কলিজায় প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক থাকে। আর এই জিঙ্ক শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা বাড়ায়। যথেষ্ট পরিমাণ জিঙ্ক শরীরে না থাকলে পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে হরমোন নিঃসৃত হয় না। পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে যে হরমোন নিঃসৃত হয় তা টেস্টোস্টেরন তৈরি হওয়াতে সাহায্য করে। তাছাড়া জিঙ্ক এর কারণে আরোমেটেস এনজাইম নিঃসৃত হয়। এই এনজাইমটি অতিরিক্ত টেস্টোস্টেরোনকে এস্ট্রোজেনে পরিণত হতে সাহায্য করে। এস্ট্রোজেনও যৌ’নতার জন্য প্রয়োজনীয় একটি হরমোন।
রসুন
ডাক্তারদের মতে রসুনে অনেক উপকারিতা রয়েছে। রসুন ফোড়া ভালো করে, ঋতুস্রাব চালু করে, পেশাব জারী/স্বাভাবিক করে, পাকস্থলী থেকে গ্যাস নির্গত করে, নিস্তেজ লোকদের মধ্যে যৌ’ন ক্ষমতা সৃষ্টি করে, বীর্য বৃদ্ধি করে, গরম স্বভাব লোকদের বীর্য গাঢ় করে, পাকস্থলী ও গ্রন্থর ব্যাথার উপকার সাধন, এ্যাজমা এবং কাঁপুনি রোগেও উপকার সাধন করে। তবে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অধিক রসুন ব্যাবহার ক্ষতিকর।
সব্জির বীজ
কুমড়োর বীজ, সূর্যমূখীর বীজ, শিম বীজ, ইত্যাদিতে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট আছে এবং এগুলো শরীরে উপকারী কোলেস্টেরল তৈরী করে। হরমোন গুলো ঠিক মতো কাজ করার জন্য এই কোলেস্টেরল অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। শিমের বীচিতে প্রচুর ফাইটোস্ট্রোজেন থাকে। এটা আপনার যৌ’ন ইচ্ছা এবং যৌ’ন সামর্থ্য বাড়ায়। জাপানিরা যৌ’ন ইচ্ছা বাড়ানোর জন্য খাবারে প্রচুর শিমের বীচি ব্যবহার করে থাকে। ওটমিল এবং কুমড়ার বীচির মত সূর্যমুখীর বীজ হরমোন বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে আপনার যৌ’ন আকাঙ্ক্ষাও বাড়ে। সূর্যমূখীর বীজে যে তেল থাকে তা এই কাজটি করে। কুমড়ার বীচি জিঙ্ক-এর অন্যতম সেরা প্রাকৃতিক উত্স। এই জিঙ্ক টেস্টোস্টেরোনের মাত্রা বাড়ায়। আপনার যৌ’ন ইচ্ছা বাড়ানোতে কুমড়ার বীচির কার্যকারিতা অনেক।
ডিম
ডিম যৌ’ন স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি খাবার। ডিমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি-৫ ও বি-৬ আছে যা শরীরের হরমোনের কার্যক্রম ঠিক রাখে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিনের সকালের নাস্তায় একটি করে ডিম রাখুন। এতে আপনার শরীর শক্তি পাবে এবং যৌ’ন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
দুধ
দুধ রতিশক্তি সৃষ্টি করে দেহের শুস্কতা দূর করে এবং দ্রুত হজম হয়ে খাদ্যের স্থলাভিষিক্ত হয়ে যায়; বীর্য তৈরি করে, চেহারা লালচে হয়, দেহের অপ্রয়োজনীয় দূষিত পদার্থ বের করে দেয় এবং মস্তিস্ক শক্তিশালী করে। বেশি পরিমাণ প্রাণিজ-ফ্যাট আছে এ ধরনের প্রাকৃতিক খাদ্য পাওয়ারের উন্নতি ঘটায়। যেমন, খাঁটি দুধ, দুধের সর, মাখন ইত্যাদি। বেশিরভাগ মানুষই ফ্যাট জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে চায়। কিন্তু আপনি যদি শরীরে হরমোন তৈরি হওয়ার পরিমাণ বাড়াতে চান তাহলে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট জাতীয় খাবারের দরকার। তবে এই ফ্যাট হতে হবে প্রাকৃতিক এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাট।
সামুদ্রিক মাছ
সামুদ্রিক বা তৈলাক্ত মাছে রয়েছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড যা সুস্থ যৌ’ন জীবনের জন্য অত্যন্ত উপকারী। সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড থাকে। ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড DHA O EPA শরীরে ডোপামিন বাড়িয়ে দেয় এবং মস্তিষ্কে উদ্দীপনা জাগিয়ে তোলে। তৈলাক্ত ও সামুদ্রিক মাছ খেলে শরীরের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় এবং গ্রোথ হরমোনের নিঃসরন হয়। ফলে যৌ’ন স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং যৌ’ন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
রঙিন ফল
পাওয়ার ঠিক রাখতে চাইলে প্রতিদিন খাবার তালিকায় রঙিন ফলমূল রাখুন। আঙ্গুর, কলা, কমলা লেবু, তরমুজ, পিচ ইত্যাদি ফল যৌ’ন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত উপকারী। ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাসের মেডিকেল টিমের গবেষণা অনুযায়ী, একজন পুরুষের প্রতিদিনের খাবার তালিকায় অন্তত ২০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকলে তার স্পার্মের কোয়ালিটি উন্নত হয়। আবার টেক্সাসের A&M ইউনিভার্সিটির মতে, তরমুজ শরীরে যৌ’ন উ’দ্দীপনা বৃদ্ধি করে। তারা যৌ’ন উদ্দীপক ওষুধ ভায়াগ্রার সাথে তরমুজের তুলনা করেছেন।
জয়ফল
গবেষকদের মতে, জয়ফল থেকে এক ধরনের কামোদ্দীপক যৌগ নিঃসৃত হয়। সাধারণভাবে এই যৌগটি স্নায়ুর কোষ উদ্দীপিত করে এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। ফলে যৌ’ন ইচ্ছা বৃদ্ধি পায়। আপনি কফির সাথে মিশিয়ে জয়ফল খেতে পারেন, তাহলে দুইটির কাজ একত্রে পাওয়া সম্ভব।
টাটকা সবজি
তরতাজা ও ফরমালিনমুক্ত শাক সবজিতে প্রচুর পরিমানে প্রয়োজনীয় অনেক ভিটামিন পাওয়া যায়। পালং শাকে আছে প্রচুর পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম। ম্যাগনেসিয়াম শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে। জাপানের গবেষকদের মতে, শরীরে রক্ত চলাচল বাড়লে যৌ’ন উদ্দীপনাও বাড়ে। পালং শাক ও অন্যান্য বিভিন্ন রকম শাক, ব্রকলি, লেটুস, ফুলকপি, বাঁধাকপি এগুলোতে রয়েছে ফলেট, ভিটামিন বি সহ অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। মোটকথা হচ্ছে যে, তাজা শাক সবজি সুস্থ যৌ’ন জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলু শুধু শর্করার ভালো বিকল্পই না, মিষ্টি আলু খুব ভালো ধরনের একটি ‘সে’ক্স’ ফুড। শরীর কোনো সবজিতে বিটা-ক্যারোটিন পেলে তা ভিটামিন-এ তে রূপান্তরিত করে। এই ভিটামিন-এ নারীদের যোনি এবং ইউটেরাসের আকার ভালো রাখে। তাছাড়া এটা হরমোন তৈরিতেও সহায়তা করে।
ডার্ক চকলেট
ডার্ক চকোলেটে আছে ফেনিলেথ্যালামাইন নামক একটি উপাদান যা শরীরে বাড়তি যৌ’ন উদ্দীপনা তৈরী করে। গবেষণায় জানা গেছে যে, ডার্ক চকোলেট খেলে সঙ্গীর প্রতি আকর্ষণবোধ বেড়ে যায়। এছাড়াও ডার্ক চকোলেটে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে। তাই প্রতিদিন শতকরা ৭০ ভাগ কোকোযুক্ত ডার্ক চকোলেটের ২ ইঞ্চির একটি টুকরো খেয়ে নিন। মাত্র ১০০ ক্যালরী আছে এই আকৃতির একটি টুকরো, আপনার যৌ’ন স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
কালো জিরা
এটা যৌ’নতার ভারসাম্য রাখার পাশাপাশি শিশুর জন্য মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি ও স্তন্যকে সুগঠিত করে। পক্ষাঘাত বা প্যারালাইসিস ও কম্পন রোগে কালোজিরার তৈল মালিশ করলে আশ্চর্যজনক ফল পাওয়া যায়। কালোজিরা যৌ’ন ব্যাধি ও স্নায়ুবিক দুর্বলতায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য উত্কৃষ্ট মানের ঔষধ। সর্দি, কাশি, বুকের ব্যাথা, পাকস্থলীতে বায়ু সঞ্চয় (অম্লপিত্ত) শুলবেদনা ও প্রসূতি রোগে অত্যধিক উপকারী। ব্রনের জন্যও উত্তম ঔষধ। এবং এতে শ্লেষ্মা, পুরাতন জ্বর, মূত্রথলির পাথর ও পান্ডুরোগ (কামিলা, জন্ডিস) আরোগ্য লাভ করে। তাছাড়া এটা মুদরে হায়েজ বা অধিক ঋতু স্রাব, মুদরে বাওল বা মাত্রাতিরিক্ত পেশাব প্রতিরোধক ও ক্রিমিনাশক।
বাদাম
চিনা বাদাম, কাজু বাদাম, পেস্তা বাদাম ইত্যাদিতে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট আছে। এগুলো শরীরে প্রয়োজনীয় কোলেস্টেরল তৈরী করার পাশাপাশি হরমোন গুলোকে সঠিকভাবে পথনির্দেষ করে। তাই প্রতিদিন অল্প করে হলেও বাদাম খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে যৌ’ন স্বাস্থ্য স্বাভাবিক থাকবে। চীনা বাদামে প্রচুর জিঙ্ক থাকে। এই জিঙ্ক শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়ায় এবং শক্তিশালী শুক্রাণু তৈরি করে। জিঙ্ক কম থাকলে শরীরে শতকরা ৩০ ভাগ কম বীর্য তৈরি হয়। যারা খাদ্যের মাধ্যমে শরীরে কম জিঙ্ক গ্রহণ করে তাদের বীর্য এবং টেস্টোস্টেরনের ঘনত্ব দুটিই কমে যায়। বাদাম খাওয়ার মাধ্যমে এটা পূরণ হয়ে যায়।
কিসমিস
মানব শরীরে যৌ’ন উদ্দীপনা বা যৌ’ন শক্তি বৃদ্ধিতে কিসমিসের সাথে অন্য কোন কিছুর তুলনা হয় না। আঙ্গুর ফলকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় কিসমিসে রুপান্তর করা হয়। কিন্তু গুনের দিক থেকে আঙ্গুরের চাইতে কিসমিসের অবদান অনেক বেশি।সর্বোপরি চিন্তা বা দুশ্চিন্তা থেকে নিজের মনকে শান্ত রাখতে চেষ্টা করুন অন্তত আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনীর সাথে যখন সময় কাটাচ্ছেন। মনে আনন্দ থাকলে নার্ভগুলো অনেক সচল থাকে। যার সুপ্রভাব পরে আপনার যৌ’ন জীবনে।