কে এই তাম্বাদু ?? যে সু’চিসহ মিয়ানমারের বি’চার করালেন !!
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দেশটির মুসলিম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের ওপর নি’ধ’ন’য’জ্ঞ চালিয়ে তাদের হ’ত্যা করে। বাড়িঘর পু’ড়ি’য়ে দেয় অনেকের। ধ’র্ষ’ণ, লু’ট, জীবন্ত পু’ড়ি’য়ে মা’রা’সহ নৃ’শং’স’তা’র শি’কা’র হন রোহিঙ্গারা।
আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও মিয়ানমার সরকার সেই নি’ধ’ন’য’জ্ঞ বন্ধ করে নি। অবশেষে জীবন বাঁচাতে পা’লি’য়ে প্রতিবেশি বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয় কয়েক লাখ রোহিঙ্গা। জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত আইসিজেতে এ ঘটনায় মা’ম’লা করেন গাম্বিয়ার এক মন্ত্রী।
দেশটির বিচারমন্ত্রী আবুবাকার তাম্বাদুর মামলায় মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি হেগের আদালতে যেতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তার দেশের বি’রু’দ্ধে আনা গ’ণ’হ’ত্যা’র অ’ভি’যোগ প্রশ্নে বক্তব্য দিতে বাধ্য হয়েছেন।
জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত বৃহস্পতিবার এই গণহত্যার আদেশ দিয়েছে। যে ব্যক্তিটির উদ্যোগে রোহিঙ্গা নি’ধ’নের বিচার হচ্ছে তার সম্পর্কে জানান আগ্রহ পাঠকেন। বিবিসির এক প্রতিবেদনে গাম্বিয়ার বিচারমন্ত্রী আবুবাকারকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাম্বাদুর জন্ম ১৯৭২ সালে। তিনি গাম্বিয়ার রাজধানী বানজুলে বড় হন। তিনি ছিলেন ১৮ ভাইবোনের মধ্যে একজন। তাম্বাদুর পিতার তিন স্ত্রী ছিলেন।
তরুণ বয়সে তাম্বাদু খেলাধুলায় খুব ভালো করেন। ফুটবলে তার দেশের জন্য শিরোপা এনে দিয়েছিলেন। তাম্বাদুর মধ্যবিত্ত পরিবার দেশে একটি প্রাইভেট স্কুল এবং ব্রিটেনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তাকে পড়ালেখা করায়।বাবাকে অসন্তুষ্ট করার ভয়ে তিনি খেলাধুলার স্বপ্ন বাদ দিয়ে দেন এবং একাডেমিক পথে হাঁটতে শুরু করেন।
আইনের স্নাতক তাম্বাদু বলেন, আমি কখনই আইন নিয়ে পড়তে চাইনি। কিন্তু ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম যে বিষয়টি পড়ার জন্য আমাকে বলা হয়, সেটা ছিল আইনবিদ্যা।পড়াশোনা শেষ করে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং একজন সরকারি কৌঁসুলি হিসেবে কাজ শুরু করেন।
পরে রাজনীতিতে জড়িত হন। ২০০০ সালে এপ্রিল মাসে গাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া জাম্মেহর নিরাপত্তা বাহিনী শান্তিপূর্ণ বি’ক্ষো’ভ’কা’রীদের ওপর গু’লি করে, এতে ১৪জন শিক্ষার্থী, একজন সাংবাদিক এবং একজন রেডক্রস স্বেচ্ছাসেবী ‘নি’হ’ত হন।তাম্বাদু দেখতে পান যে, এ ঘটনায় তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হচ্ছে এবং নি’র্যা’তন করা হচ্ছে। তখন তিনি আন্তর্জাতিক বিচারের ক্ষেত্রে কাজ করতে শুরু করেন।
এই স্বেচ্ছা নির্বাসন তাকে জাতিসংঘের সেই আদালতে কাজ করার সুযোগ এনে দেয়। যেটি রোয়ান্ডা গ’ণ’হ’ত্যা’র কুশীলবদের বি’চা’র করার জন্য স্থাপিত হয়েছিল।পরে সময়ের পরিক্রমায় তিনি গাম্বিয়ার মন্ত্রী হন। তাম্বাদুর বর্তমান বয়স ৪৭ বছর।বিবিসির প্রতিবেদনে তাম্বাদুর বাংলাদেশ সফর নিয়েও বলা হয়েছে। মা’ম’লা করার আগে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির সফর করেন আবুবাকার তাম্বাদু।
তিনি রোহিঙ্গাদের দুর্দশার চিত্র শোনে স্থির থাকতে পারেননি। মিয়ানমারের সীমান্তের অন্য পাশ থেকেও যেন তিনি গণহত্যার দু’র্গ’ন্ধ টের পাচ্ছিলেন।রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া, মায়ের কোল থেকে শিশুদের ছিনিয়ে নিয়ে জ্ব’ল’ন্ত আ’গু’নে ছুঁ’ড়ে মা’রা, নারীদের ধ’র্ষ’ণ ও সবরকমের নি’র্যা’ত’নের কথা শুনে ব্যথিত হন গাম্বিয়ার এই মন্ত্রী।
এই দৃশ্যগুলি মিস্টার তাম্বাদুকে ১৯৯৪ সালে রোয়ান্ডা গণহত্যার ঘটনাগুলোকে মনে করিয়ে দিচ্ছিল, যেখানে আট লাখের বেশি মানুষকে হ’ত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়।এ বিষয়ে তাম্বাদু বলেন, আমি বুঝতে পারলাম, রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীকে চিরতরে ধ্বং’স করার জন্য এটা মিয়ানমারের সরকারের একটা চেষ্টা।’
‘যা আমি শুনেছি আর দেখেছি, ব্যক্তিগতভাবে তাতে আমি ক্ষু’ব্ধ হয়েছিলাম। পেশাগতভাবে আমি চিন্তা করলাম, এসব কাজের জন্য মিয়ানমারকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। আর সেটা করার মাধ্যম হলো আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে একটি মা’ম’লা করা।’এরপরই মা’ম’লা করার সিদ্ধান্ত নেন তাম্বাদু।