পদ্মা সেতুর চীনা কর্মীরা দেশে আসা-যাওয়া করতে পারবেন না !!
করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় পদ্মা সেতু প্রকল্পে কর্মরত চীনা কর্মীদের ওপর নিজ দেশে ছুটি কাটাতে যাওয়া ও পরে আসার উপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প ব্যবস্থাপক দেওয়ান আবদুল কাদের এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, “এ প্রকল্পে কর্মরত চীনা কর্মীদের মধ্যে যারা ছুটি কাটাতে দেশে গেছেন আপাতত তাদের বাংলাদেশে ফেরা বন্ধ করা হয়েছে। আবার চীনা কর্মীদের মধ্যে যারা প্রকল্প এলাকায় রয়েছেন তাদের কেউ যেন চীনে যেতে না পারেন সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
তবে এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে দেশি-বিদেশি কোনও কর্মী আক্রান্ত হননি বলে নিশ্চিত করেছেন পদ্মা সেতু প্রকল্পের সিনিয়র অক্যুপেশনাল অ্যান্ড হেলথ স্পেশালিস্ট মাহমুদ হোসেন ফারুক।তিনি জানান, “করোনা ভাইরাসে পদ্মা সেতু প্রকল্পের কোনও কর্মী আক্রান্ত নন। তবে এই ভাইরাসের যেহেতু কোনও ভ্যাকসিন নেই, তাই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা যেগুলো নিতে হয়, সেগুলো নেওয়া হচ্ছে।
যেমন−স্টাফদের নিয়ে পর্যায়ক্রমে সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম করা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও হাইজিন ব্যবস্থা ও মাস্ক পরিধান করা, সময়ে সময়ে আইইডিসিআর (ইনস্টিটিউট অব এপিডেমিওলজি ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ) এর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা। তারাও (আইইডিসিআর) বিষয়গুলো মনিটর করছে।”
চীনা কর্মীদের আলাদা ক্যাম্প আছে জানিয়ে মাহমুদ হোসেন ফারুক বলেন, “চীনা কর্মকর্তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা আলাদা। যারা তাদের সার্ভ করেন তারা যেন সবসময় সেফটি ড্রেস (মাস্ক ও গ্লাভস) পরে থাকেন, সেগুলোতে জোর দেওয়া হচ্ছে। অন্যদের সঙ্গে যেন অতিরিক্ত মেলামেশা না করেন, সে বিষয়গুলো দেখা হচ্ছে।”
আর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প ব্যবস্থাপক দেওয়ান আব্দুল কাদের জানান, “করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত নই। তবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা খুব সতর্ক অবস্থায় আছি যেন কোনও ঝামেলা না হয়। চীনারা যারা চীনে গেছে তাদের আসতে দেওয়া হচ্ছে না। আর বাংলাদেশ থেকে কেউ যাচ্ছে না।’
তবে পদ্মা সেতু প্রকল্পের মোট ১১০০ জন চীনা কর্মীর মধ্যে কতজন বর্তমানে ছুটিতে চীনে আছেন, তা জানাতে পারেননি এই প্রকৌশলী।প্রসঙ্গত, চীনের উহান শহরে শুরু হওয়া করোনাভাইরাস এখন দেশটির প্রত্যেকটি শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত এতে আক্রান্ত হয়ে ৪ বিদেশিসহ ১০৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা লাখের কাছাকাছি। চিকিৎসাধীন ৫০ হাজারের বেশি।
মহামারি আকার ধারণ করার আগে নিয়ন্ত্রণে সবধরণের চেষ্টা চালাচ্ছে দেশটিতে। এমন অবস্থায় দেশটিতে নতুন করে প্রবেশে অনেকটা নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। সতর্কাবস্থায় রয়েছে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোও। বাংলাদেশেও প্রধান দুই বিমানবন্দর ছাড়াও স্থল বন্দরগুলোতে নেয়া হয়েছে সতর্ক ব্যবস্থা। ভ্রমণ না করতে পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।