চীনে বাংলাদেশি তরুণীর আবেগঘ’ন স্ট্যাটাস ভা’ইরাল !!
চীনে অবস্থানরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আপাতত দেশে না ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন চীনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশের ছাত্রী শবনম জেবি দোলা।
চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসে এখন পর্যন্ত দেশটিতে পাঁচ শতাধিক লোকের প্রাণহানি হয়েছে। অন্তত আরও প্রায় ৩০ হাজার লোক এ মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। এরইমধ্যে চীনে অবস্থানরত অনেক বাংলাদেশিকেই দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। যদিও তাদের কারও মধ্যেই এখন করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়নি। তবে প্রতিবেশী দেশ ভারতে একাধিক ব্যক্তির মধ্যে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ফলে ঝুঁকিতে আছে বাংলাদেশও।
এমতাবস্থায় সম্প্রতি ফেসবুকে দেয়া এক ভিডিও বার্তায় চীনে অবস্থানরতদের বাংলাদেশে না ফেরার অনুরোধ জানিয়েছেন শবনম জেবি। চীনের জেজিয়াং প্রদেশের হুজো শহরের হুজো বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রী এক সময় সিলেটের নাট্য সংগঠন ‘একদল ফিনিক্স’-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় তার গ্রামের বাড়ি।
ওই ভিডিও বার্তায় শবনম বলেন, আমার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সব শিক্ষার্থীকে সুরক্ষিত রাখার জন্য সব ধরনের চেষ্টা চালাচ্ছে। হুজো সিটির সঙ্গে অন্য শহরগুলোর যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মূল ফটকসহ সব ফটক বন্ধ। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরমিটরিতে প্রায় বন্দি অবস্থায় আছেন শিক্ষার্থীরা।
সবাইকে ডরমিটরির (আবাসিক হল) বাইরে না যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাবাসিক শিক্ষার্থীদেরও ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই তাদের খাবার সরবরাহ করছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছে।’
চীনে অধ্যয়নরত শবনম ফেসবুক লাইভে আরও বলেন, ‘আমি জেনেছি চীনে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের অনেকে দেশে ফেরার চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ টিকিটও কিনে ফেলেছেন। তবে সবার প্রতি অনুরোধ, এই মুহূর্তে দেশে ফিরবেন না। এখানেই থাকুন। এখানে ভালো চিকিৎসা পাবেন। আপাতত দেশে গিয়ে দেশকে ও নিজের পরিবারকে বিপদে ফেলবেন না।’তিনি বলেন, ‘মানুষের হাঁচি থেকে ছড়াচ্ছে করোনা ভাইরাস। কেউ আক্রান্ত একজনের পাশে গেলেও আক্রান্ত হয়ে যেতে পারে।’
দেশের মানুষকে নিরাপদে রাখার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে শবনম বলেন, ‘চীন থেকে আমরা যদি ১০০ জনও দেশে ফিরে যাই, আর তাদের মধ্যে যদি তিন-চারজনও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত থাকি তবে দেশের অবস্থা খুব ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে। আমারও প্রতিদিনই মনে হচ্ছে, বাংলাদেশে চলে যাই, পরিবারের কাছে চলে যাই। কিন্তু ভাবতে হবে, আমরা যে মানুষগুলোকে ভালোবাসি, আমাদের পরিবার, বাবা-মা, বন্ধুবান্ধব; নিজের অজান্তেই কিন্তু তাদেরকে হুমকিতে ফেলে দিতে পারি।’
শবনম জানান, করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরি করতে চেষ্টা করছে চীন। তাই আক্রান্ত হলে চীনেও ভালো চিকিৎসা পাওয়া যাবে। দেশে ফিরে দেশের মানুষকে ঝুঁকির মুখে ফেলার কোনও কারণ নেই।