মুসলিমবিদ্বেষী ভারতে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতে জাতিসংঘ !!
ভারতে বহুল বিতর্কিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপ কামনা করে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার কার্যালয় বিতর্কিত আইনটিকে সাংবিধানিক বৈধতা মামলায় পক্ষভুক্ত করার আবেদন দাখিল করেছে। জাতিসংঘের এমন পদক্ষেপ নজিরবিহীন ও এর মাধ্যমে মোদি সরকারের বিড়ম্বনা বেড়েছে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে। খবর এনডিটিভির।
সিএএ বিরোধী আন্দোলনের এমনিতেই বেশ চাপের মধ্যে রয়েছে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার। এর মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের মামলাগুলোয় তৃতীয় পক্ষ হওয়ার আবেদন দাখিল করে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ। বিষয়টি জানার পরই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এটি আইন প্রণয়নকারী সংসদের সার্বভৌম অধিকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবীশ কুমার বলেছেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল বাখেলেটের কার্যালয় জেনেভায় অবস্থিত ভারতীয় স্থায়ী মিশনকে সোমবার সন্ধ্যায় আবেদনটির বিষয়ে অবহিত করেছে। রবীশ কুমার বলেন, সিএএ ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ভারতের সার্বভৌমত্বের সঙ্গে জড়িত কোনও ইস্যুতে বিদেশি কোনও পক্ষের হস্তক্ষেপের অধিকার নেই।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানান, ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার চলছে। তাদের আশ্রয় দেয়া ভারতের সনাতন অধিকার। এ নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন কিছুতেই হস্তক্ষেপ করতে পারে না। ইতোমধ্যে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আইন আকারে পাস হওয়ার পর এর সাংবিধানিক বৈধতাও খতিয়ে দেখছে সুপ্রিম কোর্ট। ফলে এখানে জাতিসংঘের নাক গলানো কাম্য নয়। বরং তাদের উচিত সম্মান প্রদর্শন করা।
উল্লেখ্য, ভারতে মুসলিমবিদ্বেষী নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ)-এর বিরুদ্ধে শুরু থেকেই প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে দেশটির মুসলিম তথা সুশীল জনগণ। এ নিয়ে সম্প্রতি দিল্লিতে মুসলিমবিরোধী সহিংসতায় ৪৩ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এখনও ড্রেনে, নালায় পাওয়া যাচ্ছে লাশ। মোদী সরকারের এমন সাম্প্রদায়িক মনোভাবকে ধিক্কার জানিয়েছেন বিশ্ব মোড়লরা। এরইমধ্যে দিন কয়েক আগে ভারত সফর করে গেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দিল্লির সহিংসতাকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা নয়, ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের ‘পরিকল্পিত গণহত্যা’ বলে দাবি করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।