ঢাকায় যে সব এলাকার ৪০ বাড়ি লকডাউন !!
করোনা ভা’ইরাসের বিস্তার ঠেকাতে মঙ্গলবার পর্যন্ত রাজধানীর ৪০টির বেশি বাড়ি লকডাউন করেছে পুলিশ। কোথাও কোথাও স্থানীয়রাও কয়েকটি বাড়ি ও সড়ক লকডাউন করে দিয়েছে। তবে পুলিশের করা লকডাউন এলাকা থেকে নানা অজুহাতে মানুষকে বের হতে দেখা গেছে। রাজধানীর টোলারবাগ আবাসিক এলাকা এখনও লকডাউন আছে। মঙ্গলবার টোলারবাগের ১নং গেটে গিয়ে পুলিশি বাধা ও নিরাপত্তা ডিঙ্গিয়ে অনেককেই বাইরে বের হতে দেখা গেল। অথচ মঙ্গলবারও ওই এলাকার একটি ভবনের ৬ জন বাসিন্দার নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর নিয়ে গেছে। এছাড়া মিরপুর এলাকার আরও তিনটি বাড়ি লকডাউন করা আছে।
এর মধ্যে মিরপুর-১ নম্বর এলাকায় এক পরিবারে দুইজন করোনা আ’ক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ায় দুটি ভবন ও একটি টিনশেড বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। ওভারব্রিজ সংলগ্ন গলির ওই তিনটি বাড়ি লকডাউন করে জনসাধারণের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে পুলিশ। সেখানে প্রায় ২৫টি পরিবার বসবাস করছে। পুলিশ জানায়, একটি পরিবারের দুইজন সদস্য জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। নমুনা পরীক্ষায় করোনা ধরা পড়ার পর রোববার তাদেরকে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছেন। এরপরই দু’টি বহুতল ভবন ও একটি টিনশেড বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। এছাড়া পলবীতে ৩টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পল্লবী জোনের সহকারী কমিশনার ফিরোজ কাওসার।
এছাড়া তেজগাঁও বিভাগে ৯টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিসি বিজয় বিপ্লব তালুকদার। আর গুলশান জোনের ডিসি সুদীপ চক্রবর্তী বলেছেন, ভাটারা থানাধীন ৫ নম্বর সড়কের বি-ব্লকের একটি ভবন লকডাউন করা হয়েছে।
সেখানকার একজন নারী করোনা ভা’ইরাসে আ’ক্রান্ত হয়ে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এদিকে ওয়ারী জোনের ডিসি শাহ ইফতেখার আহমেদ জানিয়েছেন, ওয়ারী বিভাগে ৭টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। সেখানকার কয়েকজন করোনাভা’ইরাস সংক্রমিত হওয়ায় পর ৭ বাড়ি লকডাউন করা হয়। এসব বাড়ির মধ্যে বনগ্রামের একটি ভবন, রেংকিং স্ট্রিটে একটি বাড়ি, গেণ্ডারিয়ার গুরুদাস লেনের একটি বাড়ি, যাত্রাবাড়ীর মিরহাজীরবাগের একটি বাড়ি, কদমতলীর মুরাদপুরের একটি বাড়ি, শনির আখড়ায় একটি বাড়ি এবং ডেমরার ধার্মিকপাড়ায় একটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। এদিকে বংশাল থানার ওসি শাহীন ফকির জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফুলবাড়িয়ার পশু হাসপাতাল রোডের একটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।
লালবাগ জোনের ডিসি মুনতাছিরুল ইসলাম বলেন, লালবাগের বড়ভাট মসজিদ এলাকা ও নবাবগঞ্জ রোডের দুটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। এছাড়া চকবাজারের খাজে দেওয়ান রোড-১ ও খাজে দেওয়ান রোড-২ এলাকা লকডাউন করা হয়েছে। সেখানকার ১ জন পুরুষ ও একজন নারী করোনা সংক্রমিত হয়েছেন।এছাড়া সূত্রাপুরে ২টা ও প্যারিদাসলেনে একটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। এদিকে সবুজবাগ থানার দক্ষিণগাঁও এলাকায় দুই পরিবারের ৭ জন করোনাভা’ইরাসে আ’ক্রান্ত হওয়ায় রোববার থেকে স্থানীয় প্রশাসন ওই এলাকার মোট ৯টি ভবন লকডাউন করে দিয়েছে। এছাড়া জিরো গলি নামে একটি গলি লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে নজরদারি।
এদিকে বাসাবোর এলাকাবাসী গত সোমবার থেকে অঘোষিত ঐ এলাকাকে লকডাউন ঘোষণা করেছে। মঙ্গলবার বাসাবো এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রশাসনের অপেক্ষা না করেই এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন সড়ক বন্ধ করে দিয়েছে। বাঁশ আর দড়ি দিয়ে রাস্তা আটকে দেয়া হয়েছে। আর তাদের এ কাজে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। উত্তর বাসাবো এলাকার সাত নম্বর সড়কে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয়রাই এলাকাটি লকডাউন করেছে। বের হওয়া ও ভেতরে ঢোকার সময় নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ।
বাসাবো এলাকায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা বারবার মানুষকে ঘরে থাকতে বলছি। জরুরি কাজ থাকলে তো বের হতেই হবে। তাদেরও আমরা সহযোগিতা করছি। কিন্তু যারা অকারণে ঘর থেকে বের হচ্ছেন, তাদের বিষয়ে আমরা কঠোর অবস্থানেই থাকব।