একের পর এক ডলফিনের মৃত্যুতে উদ্বিগ্ন পরিবেশবাদীরা !!
করোনা ভা’ইরাসের কারণে বিশ্ব যখন টালমাটাল, তখন কক্সবাজার সৈকতে একের পর এক ভেসে আসছে মৃ’ত ডলফিন। ভেসে আসা ডলফিনগুলোর দেহ ক্ষত-বিক্ষত। আসছে মৃত কাছিমও। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবেশবাদীরা। সাগর পাড়ের জেলেরা জানান, গত এক সপ্তাহে কক্সবাজার সাগর উপকূলের বিভিন্ন পয়েন্টে ভেসে এসেছে অন্তত ১৫টি ডলফিনের মৃতদেহ। পাশাপাশি পাওয়া গেছে ৪ কাছিমের মরদেহও। এরমধ্যে, টেকনাফের শাপলাপুর সৈকতে ৪ টি, দরিয়া নগর পয়েন্টে ৩টি, সান প্যারাস্যুট পয়েন্টে ৪টি ডলফিন ও দুইটি কাছিমসহ বিভিন্ন পয়েন্টে মোট ছোট-বড় ১৫ টি ডলফিনের মৃ’তদেহ দেখেছে স্থানীয়রা। এসব মৃত ডলফিনের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানায় স্থানীয়রা।
টেকনাফের বাহারছড়া এলাকার বোট মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমাদেরগুলো ছোট ট্রলার। বড় বড় ট্রলারের জেলেরা জালে এসব ডলফিন আটকা পড়লে তাদের আঘাত করে। কারণ ডলফিন জালে প্রবেশ করলে তাদের মাছ আহরণে ব্যাঘাত ঘটে।কক্সবাজার ফিশিংবোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ৭ থেকে ৮ বামের ( ৭-৮ মাইল) ভেতরে ডলফিনরা খেলা করে। এসময় জালে আটকা পড়লে জেলেরা অনেক সময় তাদের হত্যা করে। উখিয়ার ইনানী এলাকার জেলে আব্দুল গফুর বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে মৃত ডলফিনগুলো ভেসে আসতে দেখেছি।
প্রাণ প্রকৃতি রক্ষার আহবান জানিয়ে পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন এনভ্যায়ারমেন্ট পিপলের প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ বলেন, প্রাণ প্রকৃতির উপর এমন আঘাত মেনে নেয়া যায় না। বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ এর এমন ভয়াবহ দাপটেও আমরা থামছি না। এখনও আমরা কেন বুঝতে চাই না যে, প্রাণ প্রকৃতি না থাকলে শুধু মানুষ নয় পৃথিবীর অস্তিত্বই থাকবে না। কক্সবাজার উপকূলে ডলপিনের এমন মৃত্যু চাই না। এটা আমাদের জন্য অশনি সংকেত। পরিবেশবিদ ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, এ ডলফিনগুলোকে কারা হত্যা করছে তা দেখতে হবে। এসব ডলফিন মারা পড়লে আমাদের পরিবেশও হুমকির মুখে পড়বে।
সৈকতে ডলফিনের মৃতদেহ ভেসে আসার কথা স্বীকার করে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, ডলফিন হত্যায় কারা জড়িতে সে বিষয়ে তদন্ত করছে জেলা প্রশাসন। কিছুদিনের মধ্যে এ রহস্য বেরিয়ে আসবে। এছাড়াও কয়েকটি এলাকাকে বিশেষ জোন ঘোষণা করে সকল প্রকাশ মাছ আহরণ ও মানুষের চলাচল বন্ধ করা হবে, পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষার জন্য।