প্রবাসে বাংলাদেশি নারী কর্মীর ঝুলন্ত ম’রদেহ !!
লেবাননে হামিদা বেগম নামে এক বাংলাদেশি নারীকর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৯ মে) দিবাগত রাতে রাজধানী বৈরুতের নাভা এলাকায় শয়নকক্ষে ওড়না প্যাঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।এ সময় তার শিশুপুত্র বিছানায় ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল আর স্বামী পলাতক। তাই এটি আ’ত্মহ’ত্যা, নাকি হ’ত্যাকাণ্ড তা এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি দেশটির পুলিশ। আসল রহস্য বের করতে জোর তদন্ত চালাচ্ছে প্রশাসন। প্রাথমিকভাবে পারিবারিক কলহের জের ধরেই এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটেছে বলে স্থানীয় প্রবাসী বাংলাদেশিরা ধারণা করছে।
এক প্রবাসী বাংলাদেশি জানায়, কিশোরগঞ্জ জেলার সুমন ও পিরোজপুর জেলার হামিদা বেগম দু’জনেই লেবানন প্রবাসী। কয়েক বছর আগে তারা উভয়েই বৈধভাবে লেবানন আসেন।পরিচয় থেকে ভালোবাসা। পরে বিয়ে করলে গত বছর তাদের কোলজুড়ে আসে একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তান। সুমন প্রতিনিয়ত জুয়া, মদ্যপানসহ বিভিন্ন অনৈতিক কাজে যুক্ত ছিল। রাতের পর রাত অর্থের বিনিময়ে বাইরে জুয়া খেলতো।
তিনি জানান, অর্থের জন্য প্রায়ই হামিদাকে শারীরিকভাবে প্রহার করতো। ঘটনার ২ দিন আগেও সুমন তার স্ত্রী হামিদাকে অর্থের জন্য চাপ দিচ্ছিল। অর্থ না পেয়ে কাজলকে মারধর করলে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে নিজের ওড়না গলায় প্যাঁচিয়ে আত্মহ’ত্যা করে। আবার মারধরে মৃত্যু হলে আত্মহ’ত্যা ঘটনার সাজানো চেষ্টা করা হয়েছে কিনা তাও দেখা দেখছে পুলিশ। ঘটনার পরে স্বামী সুমন বর্তমানে পলাতক রয়েছে।
স্থানীয় বাংলাদেশিরা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ রোববার সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়। নবজাতক ছেলে সন্তানটি বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। এই ঘটনায় নাভা এলাকায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই পুলিশের ভয়ে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে যায়।
এদিকে নাভা এলাকায় বসবাসরত কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশি জাগো নিউজকে জানায়, এলাকাটিতে প্রায় কয়েক হাজার বাংলাদেশির বসবাস। বেশিরভাগই অবৈধ। বাংলাদেশিদের পাশাপাশি সিরিয়ান, মিশরীয়, সুদানী, ইথিওপিয়া, ফিলিপাইন, ভারতসহ আরো কয়েকটি দেশের প্রবাসীরা অল্প টাকায় এই ব্যস্ততম এলাকাটিতে বাস করে।
বিগত কয়েক বছর ধরে এখানে প্রবাসী বাংলাদেশিরা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে জুয়া, মদ ও দেহ ব্যবসার আখড়া গড়ে তুলেছে। এসব অনৈতিক কর্মকান্ডকে কেন্দ্র করে বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশিদের দ্বারা কয়েকটি হ’ত্যাকান্ড এখানে সংঘটিত হয়। এ ধরনের ঘটনায় স্থানীয় লেবানিজ ও প্রশাসনের নিকট বাংলাদেশিদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে নাভা এলাকায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ দূতাবাসকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে তারা অনুরোধ জানিয়েছেন।