করোনা নিয়ে ফের ইউরোপের চিন্তা বাড়াচ্ছে রাশিয়া !!
বিশ্ব জুড়ে করোনা-সংক্রমণের তালিকায় ঝড়ের গতিতে উপরের দিকে এগোচ্ছে রাশিয়া। গত ২৩ ঘণ্টায় ভ্লাদিমির পুতিনের দেশের নোভেল করোনাভা’ইরাসে অ’ক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ১১ হাজারের কাছে। সে দেশে মোট ১০ হাজার ৮৯৯ জন আ’ক্রান্ত হয়েছেন এই ভা’ইরাসে।
স্পেন, ব্রিটেন, ইটালি, ফ্রান্স বা জার্মানিকে পিছনে ফেলে সংক্রমণের নিরিখে বিশ্বে এই মুহূর্তে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে রাশিয়া। বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী বিকেল ৫টায় রাশিয়ায় করোনা-আ’ক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লক্ষ ৩২ হাজার ২৪৩। জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটি এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বে করোনা-সংক্রমণের নিরিখে আমেরিকার পরেই রয়েছে রাশিয়া।
কেন রাশিয়ার সংক্রমণের হার বাড়ছে? এ নিয়ে ইতিমধ্যেই সাফাই দিয়েছেন দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁর দাবি, দেশ জুড়ে কোভিড-১৯ টেস্টের সংখ্যাবৃদ্ধিই এর অন্যতম কারণ। প্রতি দিনই দেশে করোনা-পরীক্ষার হার বাড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। রাশিয়ায় ইতিমধ্যেই ৫৬ লক্ষ মানুষের করোনা সংক্রমণের পরীক্ষা করানো হয়েছে বলে একটি সূত্রের খবর। তবে সংক্রমিতের সংখ্যা উদ্বেগ বাড়ালেও আমেরিকা বা ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় পুতিনের দেশে করোনার কারণে মৃতের সংখ্যায় তুলনামূলক ভাবে অনেক কম। সে দেশে করোনায় আ’ক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ১১৬ জনের।
রাশিয়ার করোনা-পরিস্থিতি উদ্বেগের কারণ হলেও এ বিষয়ে আরও বড় অশনি সংকেত দিচ্ছে আমেরিকা। বিশ্বের মোট করোনা-আ’ক্রান্তের সংখ্যা যেখানে ৪১ লক্ষ ৯৪ হাজার ৩২৬ জনের মধ্যে শুধুমাত্র আমেরিকাতেই রয়েছেন ১৩ লক্ষ ৪৭ হাজার ৯৩৬ জন আ’ক্রান্ত। তবে আ’ক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি স্টেটে লকডাইনের বিধিনিষেধ শিথিল করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সে দেশে ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ৮০ হাজার ৬৮৪ জন সংক্রমিতের।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অবশ্য দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার লক্ষ্যেই সওয়াল করেছেন। করোনাভা’ইরাসের জন্য আমেরিকায় ১ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হবে ধরে নিয়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড দ্রুত আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার পক্ষে মত দিয়েছেন ট্রাম্প। যদিও তাতে দেশে আ’ক্রান্তের পরিসংখ্যানে যে আরও বৃদ্ধি ঘটবে, সে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পর্যবেক্ষকেরা।
আমেরিকা বা রাশিয়ার মতোই স্পেনেরও করোনা-পরিস্থিতি বেশ সঙ্কটজনক। জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সে দেশে ২ লক্ষ ২৭ হাজার ৪৩৬ জনের দেহে কোভিড-১৯-এর সন্ধান মিলেছে। এর মধ্যে স্পেনের মৃত্যু হয়েছে ২৬ হাজার ৭৪৪ জনের।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আগামী ১৫ মে থেকে স্পেনে আসা সমস্ত পর্যটকদের বাধ্যতামূলক ভাবে ১৪ দিনের কোয়রান্টিনে থাকার নির্দেশ দিয়েছে সে দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ১৪ মার্চ থেকে সে দেশে লকডাউন শুরু হয়েছে। আগামী ২৩ মে পর্যন্ত তার সময়সীমা। তবে দেশের যেখানে সংক্রমণের হার কম, সেখানে ধীরে ধীরে লকডাউনের বিধিনিষেধ শিথিল করতে শুরু করেছে স্পেন সরকার।
স্পেনের মতো না হলেও ধাপে ধাপে লকডাউন শিথিল করার নীতি নিয়ে এগোচ্ছে ব্রিটেনের বরিস জনসন সরকার। ইতিমধ্যেই সে দেশে সংক্রমিতের সংখ্যা ছুঁয়েছে ২ লক্ষ ২৪ হাজার ৩৩২-এ। করোনা-আ’ক্রান্তদের মৃত্যুর নিরিখেও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ব্রিটেন। সে দেশে ৩২ হাজারেরও বেশি আ’ক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। অন্য দিকে, চীনের যে জায়গা থেকে সংক্রমণ ছড়িয়েছিল, সেই উহানে করোনাকে রুখতে অভিনব পন্থা নিয়েছে প্রশাসন। উহানে নতুন করে সংক্রমণ ছড়ানোয় সে প্রদেশের সমস্ত বাসিন্দাদেরই কোভিড-১৯ টেস্ট করানো হবে বলে জানিয়েছে চীনের সরকারি সংবাদমাধ্যম।