‘নিয়তিই আমাদের দেশে এনেছে’ – করোনা উপসর্গ নিয়ে স্ত্রী হারানো এক স্বামীর প্রলাপ !!
খোদেজা বেগম রেনু। ৩৯ বছর বয়সী এই নারী স্বামীর সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে কানাডায় বসবাস করতেন। বাংলাদেশে করোনাভা’ইরাস সং’ক্রমণের আগেই গত ১৭ ফেব্রুয়ারি তিন বছর পর কানাডা থেকে দেশে এসেছিলেন।পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে আবারও কানাডা চলে যাওয়ার কথা ছিল তাদের। কিন্তু গত রাতেই করোনাভা’ইরাসের উপসর্গ নিয়ে প্রা’ণ হারান রেনু। স্বামী হয়তো কানাডায় ফিরবেন, তবে সঙ্গে যাবেন না শুধু রানু।
করোনাভা’ইরাসের উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে রেনু মা’রা যান বলে জানিয়েছেন তার স্বামী ফারুক ইকবাল। তিনি জানান, দুই দিন আগে রেনুর জ্ব’র ও কাশি শুরু হয়েছিল। পরে পরিচিত একজন চিকিৎসক বন্ধুর কাছ থেকে ফোনে পরামর্শ ও ওষুধ নেন। একই সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকেন রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে।
রেনুর স্বামী জানান, জ্ব’র, কাশি কিছুটা কমলেও শ্বা’সকষ্ট দেখা দেয় রেনুর। গত সোমবার দুপুর ৩টার দিকে চিকিৎসক বন্ধুর পরামর্শে এবং আ’প্রাণ চেষ্টায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে একটি বেড পান তিনি। এরপর সেখানেই চলছিল রেনুর চিকিৎসা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে নেওয়ার পরেও রেনুর শ্বা’সক’ষ্ট কমছিল না। অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৮০ তে নেমে গিয়েছিল। যেখানে স্বাভাবিক অবস্থায় ৯৬-১০০% থাকার কথা। এরপর শুরু হয় আইসিইউ ম্যানেজের চেষ্টা। কিন্তু মাত্র ১০টা আইসিইউ বেড সেখানে তাই চাইলেও আইসিইউতে নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ওই চিকিৎসক আরও জানান, অবশেষে গতকাল অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমতে থাকে। একসময় তা ৬০ এ নেমে আসে। তবুও কৃত্রিমভাবে অক্সিজেন সাপ্লাইয়ের ব্যবস্থা করা যায়নি। এরপর গতরাত আড়াইটার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক রেনুকে মৃ’ত ঘোষণা করেন।
রেনুর এক নিকট আত্মীয়র দাবি, আইসিইউ বা অন্যান্য জরুরি সেবা দেওয়া গেলে হয়তো রেনুকে বাঁ’চানো যেত। বিশ্বের অন্যান্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশে আ’ক্রা’ন্তের হার কম। তাই রোগীদের সুস্থ হয়ে বাড়ির ফেরাতে হাসপাতালগুলোতে সব ধরনের সাপোর্টই থাকা দরকার।
রেনুর স্বামী ফারুক ইকবাল আজ বুধবার দুপুরে কা’ন্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘নিয়তিই আমাদের তিনবছর পর দেশে নিয়ে এসেছে, না হলে এমন হবে কেন।’জানা যায়, রেনুর পরিবার মগবাজার নয়াটোলা এলাকায় বসবাস করেন। তাদের সংসারে তিন ছেলে রয়েছে। আজ রেনুর লা’শ দা’ফনও সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে তার পরিবার। উৎস: দৈনিক আমাদের সময়।