করোনার ‘ভ্যাকসিন’ বানর ও ইঁদুরে সফল – যা বলছে বিজ্ঞানীরা !!
করোনা ভা’ইরাসের ভ্যাকসিন কিংবা ওষুধ আবিষ্কার নিয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। দিনরাত গবেষণা করেও কার্যকরী কোনও টিকা এখনও আবিষ্কার করতে পারেননি কোনও দেশের বিজ্ঞানীরা। তবে এবার বোধহয় প্রথম সুখবরটা এলো যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের তরফ থেকে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, নভেল করোনা ভা’ইরাসের একটি ভ্যাকসিন তারা বানরের শরীরে প্রয়োগ করে আশাব্যঞ্জক ফল পেয়েছে। মানবদেশে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা এই ভ্যাকসিন বানরের শরীরে কেমন প্রতিক্রিয়া তৈরি করে সেটিই তারা পরীক্ষা করে দেখতে চেয়েছিলেন। ভ্যাকসিনটি প্রয়োগের পর বানরের শরীরে ব্যাপকভাবে করোনা ভা’ইরাস প্রবেশ করানো হলেও সেটি তার শরীরে সংক্রমণ ঘটাতে পারেনি বলে দাবি বিজ্ঞানীদের।
গবেষকরা জানিয়েছেন, তারা করোনা ভা’ইরাসের সম্ভাব্য ভ্যাকসিনটি স্বল সংখ্যক বানরে পরীক্ষা করে আশাব্যঞ্জক লক্ষণ দেখতে পেয়েছেন। ৬টি রিবাস মাকাককে বানরের শরীরে বর্তমানে মানুষের মধ্যে পরীক্ষা করা ভ্যাকসিনের অর্ধ ডোড দেয়া হয়েছিল।ইঁদুরের শরীরেও ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ করে প্রত্যাশিত ফল পাওয়া গেছে। দেখা গেছে, কয়েকটি প্রাণী টিকা দেয়ার ১৪ দিনের মধ্যে ভা’ইরাসটির বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি করেছিল। ২৮ দিনের মধ্যে সবকটির মধ্যেই অ্যান্টিবডি তৈরির প্রমাণ পাওয়া যায়।
এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, একক টিকাদানের ডোজও প্রাণীগুলোর ফুসফুসের ক্ষতি প্রতিরোধে কার্যকর ছিল। করোনা ভা’ইরাসের সংক্রমণের যে অঙ্গগুলো মারাত্মকভাবে আ’ক্রান্ত হতে পারে টিকাদানের পরে সেগুলোতে ক্ষতি হতে দেখা যায়নি।
এ নিয়ে গবেষকদের দাবি, তারা অন্য প্রাণীদের তুলনায় সার্স-কোভি -২ এর সাথে চ্যালেঞ্জ করা ভ্যাকসিন দেয়া প্রাণীদের মাঝে ব্রঙ্কোয়েলভোলার ল্যাভেজ ফ্লুইড এবং শ্বাস নালীর টিস্যুগুলোতে ভা’ইরাসটির উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাওয়া লক্ষ্য করেছেন। টিকা নেয়া রিসাস ম্যাকাকসে কোনো নিউমোনিয়ার লক্ষণও দেখা যায়নি। গুরুত্বপূর্ণভাবে, টিকা দেওয়া প্রাণীগুলোতে ভা’ইরাল চ্যালেঞ্জের পরে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোয় রোগের কোনও প্রমাণও মেলেনি।
এ বিষয়ে লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের ফার্মাকোসপিডেমিওলজি বিভাগের অধ্যাপক স্টিফেন ইভান্স বলেছেন, ‘ফলাফলগুলো খুবই স্পষ্টভাবে একটি সুসংবাদ দিচ্ছে। আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সন্ধানটি হলো ভা’ইরাল লোড এবং পরবর্তী নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট কার্যকারিতার সংমিশ্রণ। তবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর কোনও প্রমাণ নেই।’তিনি বলেন, ‘আপাতত উৎসাহিত হওয়াই যায়। তবে অক্সফোর্ডের তৈরি এই ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ বানরের মতো মানুষের শরীরেও একইভাবে প্রতিফলিত হবে কিনা তা বলা যাচ্ছে না। কিন্তু তাদের ভ্যাকসিন আশা জাগাচ্ছে।’