সৌদির মসজিদে পড়ে থাকা বাংলাদেশি অবশেষে হাসপাতালে ভর্তি (ভিডিওসহ)
সৌদি আরবে মসজিদে পড়ে থাকা আবুল অবশেষে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর, ফুটপাত থাকা তসলিম পেয়েছে মাথা গোজাঁর ঠাঁই।লাখ লাখ টাকা খরচ করে প্রবাসে এসে মানবেতর জীবনযাপন করছেন অনেকে। কেউ ফুটপাতে কেউ মসজিদের বারান্দায় কেউবা অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে। চাঁদপুরের আবুল হোসাইনকে দেশটির রাজধানী রিয়াদের বন্ধ একটি মসজিদের বারান্দা থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। করোনা মহামারির এই সময়ে সৌদি আরবের মসজিদগুলোতে শুধুমাত্র আজান হলেও জামায়াতে কোন মসজিদে নামাজ হয়না প্রায় দু’মাস যাবৎ। তাই, মানুষের চলাফেরা নেই মসজিদে। ওরকমই একটি বন্ধ মসজিদে অসহায় এবং অসুস্থ আবুল হোসাইনকে কেউ রেখে যায়। খবর পেয়ে সোশ্যাল এক্টিভিস্ট আব্দুল হালিম নিহন তাকে উদ্ধার করে রিয়াদের সেমুছি হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আব্দুল হালিম নিহন জানান, লিটন নামের এক প্রবাসী তাকে সংবাদ দিয়েছেন ওই মসজিদে একজন বাংলাদেশি দীর্ঘদিন পড়ে আছেন। সেখানে উপস্হিত হয়ে তিনি জানতে পারেন, অসুস্থ ব্যাক্তির নাম আবুল হোসাইন, তার বাড়ি চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ উপজেলার নায়েরগাঁও উত্তর ইউনিয়নের বকচর গ্রামে। তার পিতার নাম আলী মিয়া। সে ২ মাস যাবৎ শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। প্রথমে স্থানীয় একটি মেডিক্যালের চিকিৎসা নিলেও উন্নতি হয়নি কিছুদিন পর প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে প্যারালাইসিস হয়ে অচল হয়ে যান, তার উপরে মহামারি করোনাভাইরাসের হানা। যার ফলে সঠিকভাবে আর চিকিৎসা নিতে পারেননি তিনি। সর্বশেষ তার বড় ভাইসহ কয়েকটি মেডিক্যালে গেলেও তাকে ভর্তির সুযোগ দেয়া হয়নি।
এ অবস্থায় তাকে কে বা কারা মসজিদে রেখে গেলেন সেই তথ্য উঠে না আসলেও আবুল হোসাইনের শরীরের অবস্থা তেমন কোন দিক দিয়ে ভালো ছিলোনা। শুয়ে থাকতে থাকতে তার কোমরের নিচে ঘা হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে আহ্বান জানানোর পর, ব্যাপকহারে লাইক শেয়ার এবং ভিউ হলেও কারো কাছ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। তাই, আবুলকে নিয়ে যাওয়া হয় রিয়াদের সেমুছি হাসপাতালে। সেখানে অনেক প্রক্রিয়া শেষে তাকে ভর্তি করাতে সক্ষম হন আব্দুল হালিম এবং তার সহকারি লোকজন। গত ১৪ই মে (বৃহস্পতিবার) থেকে আবুল হোসাইন সেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
এদিকে, তিনমাস ধরে রিয়াদের ফুটপাতে পড়ে থাকা নওগাঁর তসলিমকেও গত ১২ই মে মঙ্গলবার সেখান থেকে তুলে নিয়ে একটি রুমে আশ্রয় দিয়েছেন আব্দুল হালিম। তসলিমের বাড়ি জেলার সদর উপজেলার তিলোকপুর ইউনিয়ন চৌধুরী পাড়ায়। তার বাবার নাম তোফাজ্জল হোসেন। দেশে পাঠানো পর্যন্ত তার দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। এভাবে অনেক প্রবাসী বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুমুখে পতিত হলেও নজরে আসছেনা প্রবাসীদের সুখ দুঃখ দেখার দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষের।