যে কারনে সৌদি আরবের পরের দিন ঈদ পালন করা হয় বাংলাদেশে !!
বছরের ২টি ঈদ হলো বিশ্বের সকল মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। ধনী গরীব নির্বিশেষে সকলের কাছেই যেন ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে। সকলের কাছেই ঈদের অর্থ এক। ঈদ মানেই আনন্দ। কিন্তু এখানে একটা বিষয় খুব অবাক করার মতো।
পৃথিবীর অনেকেই সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করে থাকে। বাংলাদেশের কয়েকটি অঞ্চলেও এ রকমটি দেখা যায়। কিন্তু আমরা রাষ্ট্র হিসেবে সৌদি আরবের পরের দিন ঈদ করে থাকি। কিন্তু এই রকমটা হয় কেন? কেন সারা বিশ্বের মুসলিম একসাথে ঈদ উদযাপন করতে পারে না? চলুন এই বিষয়ে কিছু বিষয় জেনে নেই।
ইসলামের বিধি বিধানগুলো চন্দ্র মাসের উপর নির্ভর করে। আর এই চাঁদ কিন্তু পৃথিবীর সকল অংশে একসাথে উঠে না। এই বিষয়টা ভৌগোলিক এলাকার উপর নির্ভর করে। যারা সৌদি আরবের সাথে ঈদ করেন, তাদের জানা উচিত যে মাসয়ালা ভৌগোলিক অবস্থানের উপর প্রযোজ্য? সৌদির সাথে রোজা ও ঈদ পালন করা শরীয়ত মতে ভ্রান্ত। কেননা রোজা ও ঈদ চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল। সৌদিতে চাঁদ দেখা গেলে সে মাসয়ালা আমাদের জন্য প্রযোজ্য নয়। কারণ চাঁদের বিভিন্ন মেরুকরণ রয়েছে। প্রত্যক মেরু আলাদা আলাদা অবস্থান করে।
বাংলাদেশ ও সৌদির মেরু অবস্থান ভিন্ন। আলাদা মেরু হওয়ার কারণেই চাঁদ বাংলাদেশে একদিন পরে দেখা যায় আর এ চাঁদ দেখার উপরেই রোজা ও ঈদ হবে। চাঁদের গুরুত্ব প্রসঙ্গে বুখারি ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত হাদীস থেকে জানা যায় নবী করীম (সা.) বলেন, যতক্ষন পর্যন্ত তোমরা (রমযানের) চাঁদ না দেখতে না পাবে, ততক্ষন পর্যন্ত তোমরা রোজা আরম্ভ করবেনা। আবার যতক্ষন পর্যন্ত তোমরা (শাওয়ালের) চাঁদ দেখতে না দেখতে পাবে ততক্ষন পর্যন্ত তোমরা রোজা ভঙ্গ করবেনা। তবে যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে তবে তোমরা ত্রিশ দিন পূর্ণ করে নিবে। আবু হোরায়রা বর্ণিত অন্য আরেকটি হাদীসে নবী করীম (সা.) বলেন, তোমরা চাঁদ দেখে রোজা পালন কর এবং চাঁদ দেখে রোজা ভঙ্গ করবে।
এই বিষয়ে একাধিক আলেম বলেন, সৌদির সাথে মিল রেখে এ ধরণের কাজ শুদ্ধ নয়। কারণ, ঈদের ঘোষণা না এলে ঈদ পালন করা জায়েজ না। একটি সামষ্টিক বিষয় এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে। রাসূল (সা.) হাদিসের মধ্যে বলেন, যেদিন মানুষ রোজা শুরু করবে, সেদিন থেকে রোজা পালন করা হবে আর ইফতার বা ঈদ, যেদিন মানুষ ইফতার বা ঈদ পালন করবে সেদিন। এটি সামষ্টিক ঘোষণার সঙ্গে সম্পৃক্ত। এ বিষয়ে ঘোষণা দেবেন সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধান।
সৌদি আরব ও বাংলাদেশে একই সময় সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত হয় না। চাঁদও একই সময় উদয় হয় ও অস্ত যায় না। কেউ বলতে পারেন, সৌদি আরবের সঙ্গে ঈদ পালন করছি। কারণ, তারা আগে চাঁদ দেখেছে। এটি সহিহ নয়। কারণ যদি তাই হয় তাহলে সৌদি আরবের আগে যারা চাঁদ দেখেছে, তাদের সঙ্গে ঈদ পালন করা উচিত। এখানে বড় ধরনের ভুল এবং বিভ্রাট রয়েছে।এটি ভৌগোলিক বাস্তবতা। কোনো ব্যক্তি যদি চাঁদ দেখে রোজা রাখে এবং ঈদ পালন করে, তাহলে চোখ বন্ধ করে সে সুন্নাহ অনুসরণ করেছে। আর যদি কোনো ব্যক্তি সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা ও ঈদ পালন করে, তাহলে সে চাঁদ না দেখে তা পালন করছে। এটি সম্পূর্ণ ভুল।