কাজ শেষ না হতেই নদীতে ধসে গেল পাউবোর ব্লক !!
কাজ শেষ হতে না হতেই রংপুরেরপীরগঞ্জে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে করতোয়া নদীর ভাঙ্গন ঠেকাতে স্থাপন করা ব্লক (বোল্ডার) ধসে নদীতে গেছে। উপজেলার চতরা ইউনিয়নের বড়বদনারপাড়া টোংরারদহ নামক স্থানে ঘটনাটি ঘটেছে।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রংপুরের মিঠাপুকুর, পীরগাছা, পীরগঞ্জ ও রংপুর সদর উপজেলায় যমুনেশ্বরী, ঘাঘট ও করতোয়া নদী সংরক্ষণ ও নদী প্রকল্পের আওতায় রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) পীরগঞ্জের করতোয়া নদী শাসনে ব্লক বসানো ও খনন কাজ করছে। এ প্রকল্পের আওতায় পীরগঞ্জ উপজেলার চতরা ইউনিয়নের বড়বদনারপাড়ায় নদীর ৪০০ মিটার বাম তীর রক্ষায় ‘মেসার্স খায়রুল কবির রানা’ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ব্লক বসানোর জন্য গত বছরের ১৯ মার্চ কার্যাদেশ পায়। প্রতিষ্ঠানটি কাজটির প্রাক্কলিত মূল্য ৪ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৩ সাইজের ১৮ হাজার করে ৩৬ হাজার এবং ২৭ হাজার ৯০০সহ মোট ৬৩ হাজার ৯০০টি ব্লক পিসিং (স্থাপন) করে। বাঁধে ‘জিওটেক্স’ (মোটা কাপড়ের মতো) দিয়ে তার ওপর খোয়া বিছিয়ে ব্লক বসানো হয়েছে। ৩১ মে কাজটি শেষ হওয়ার তারিখ ছিল। কিন্তু কাজ শেষ হতে না হতেই ব্লক ধসে গেছে।স্থানীয়দের অভিযোগ, জিওটেক্সটি নিম্নমানের হওয়ায় এবং বালু দুরমুজ (কমপ্যাক্ট) না করায় ব্লক দেবে ধসে গেছে।
জানা গেছে, ওই এলাকায় নদী শাসনে দুর্নীতি ও অনিয়ম এবং ১০-১২ বিঘা জমিতে জোরপূর্বক বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি, এডিসি, ইউএনও, এসিল্যান্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।এ ব্যাপারে ওই এলাকার বাসিন্দা চতরা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন, শুরু থেকেই টোংরারদহে নদী খনন ও ব্লক নির্মাণে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা ঘাপলা করছে। আমরা বাঁধা দিলেও তারা শোনেনি।
জমি রক্ষায় এলাকাবাসীর পক্ষে অভিযোগকারী আবু জাফর আহম্মেদ জানান, আমাদের পৈত্রিক ১০-১২ বিঘা জমিতে জোরপূর্বক ব্লক বসানোর চেষ্টা করছে। প্রতিবাদ করায় ঠিকাদার ও স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতকারী আমাদেরকে মামলায় জড়ানোর হুমকি দেয়। আমরা তদন্তসাপেক্ষে বিচার চাই।ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে আশরাফুল আলম বলেন, পানির কারণে ব্লকগুলো ধসে গেছে। তবে তিনি নিম্নমানের কাজের ব্যাপারে মুখ খোলেননি।
করতোয়া নদীর টোংরারদহে ব্লক ধসে যাওয়ার ব্যাপারটি নিশ্চিত করে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান বলেন, আগাম বন্যা এবং করোনার কারণে আমরা এখনও কাজ বুঝে নেইনি। কাজ চলমান রয়েছে। আগামী বছরের জুন পর্যন্ত কাজটির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।তিনি আরও বলেন, ধসে যাওয়া অংশটি ঠিকাদারকে মেরামত করার নির্দেশ দিয়েছি।
সূত্র- যুগান্তর