জেনে নিন, করোনায় ডায়াবেটিস রোগী যেভাবে সতর্ক থাকবেন !!
বিশ্বব্যাপী করোনা ভা’ইরাস ম’হামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। আমাদের দেশে প্রা’ণঘাতী করোনায় প্রতিদিন আ’ক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছেই। যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের বেলায় কোভিড-১৯-এর ছোবল অন্যদের তুলনায় বেশি মারাত্মক বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। তাই বাঁচার উপায় বলতে রোগটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা উচিত। সাধারণত এ রোগের লক্ষণ জ্বর, শুকনো কাশি, গায়ে ব্যথা। তবে খুব কম ক্ষেত্রেই এই রোগ মারাত্মক হয়। কিন্তু কিছু সংখ্যক লোকের ক্ষেত্রে এই ভা’ইরাসের সংক্রমণ মারাত্মক হতে পারে। যারা দীর্ঘমেয়াদী রোগ ডায়াবেটিস, কিডনি জটিলতা, হৃদরোগ, হাঁপানি বা ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস রোগে ভুগছেন তাদের সংক্রমণের ঝুঁকির মাত্রা সবচেয়ে বেশি।
সাধারণত বেশিরভাগ ডায়াবেটিস আ’ক্রান্তের মধ্যেই বিশেষ করে যাদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, তাদের উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি জটিলতা, হৃদরোগ প্রভৃতি রোগের জটিলতা বেশি। তাছাড়া ডায়াবেটিস রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই কম। আবার অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থাকলে যে কোনো সংক্রমণ ও জটিলতার ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়।তাই করোনা সংক্রমণের এই সময় ডায়াবেটিসে আ’ক্রান্ত রোগীদের অধিক সতর্কতা জরুরি। কী ভাবে নিবেন এই সতর্কতা, তা এবার জেনে নিন…
* অবশ্যই রক্তের শর্করার মাত্রা পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। কখনই ওষুধ বাদ দেওয়া যাবে না। এর সঙ্গে নির্দেশিত খাদ্য তালিকা অনুসরণ করতে হবে। সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খাবেন। এই তালিকায় রাখুন প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি ও ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফল। কোনো অবস্থাতেই মিষ্টি জাতীয় খাবার গ্রহণ করা যাবে না।
* ডায়াবেটিস রোগীর বাইরে বের না হওয়াই ভাল। হাঁটা বা ব্যায়ামের জন্য রাস্তা বা পার্কে না গিয়ে বাড়ির আঙিনা বা ছাদে হাঁটুন। বাসায় ফ্রিহ্যান্ড এক্সারসাইজ করতে পারেন।
* অবশ্যই বাসায় সপ্তাহে দু-তিনবার রক্তের শর্করার মাত্রা চেক করুন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের সঙ্গে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে পরামর্শ নিন।* পারিবারিক কোন অনুষ্ঠান, বাজার, শপিংমল, জনবহুল স্থান যথাসম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।
* একান্ত প্রয়োজনে বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস পরিধান করুন। বাইরে থেকে ফিরে যে কোনো বস্তু স্পর্শ করার আগে ভালো করে হাত সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। বাইরে পরে যাওয়া জামা-কাপড় দ্রুত বদলে সেগুলো যথাসম্ভব তাৎক্ষণিক সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।* হাত মেলানো, কোলাকুলি, বাচ্চাদের চুমু দিয়ে আদর করা থেকে বিরত থাকুন।
* ঘরে অবস্থানকালে অযথা নাকে-মুখে ও চোখে হাত দেবেন না। হাঁচি-কাশি দেওয়ার সময় হাতের কনুইয়ের ভাঁজে বা টিস্যু দিয়ে নাক-মুখ ঢাকুন। ব্যবহৃত টিস্যু যেখানে সেখানে না ফেলে বদ্ধ ডাস্টবিনে ফেলুন।
* টয়লেট ব্যবহারের পর, হাঁচি-কাশির পর, খাবার তৈরি ও পরিবেশনের আগে, খাওয়ার আগে অবশ্যই সাবান ও পরিস্কার পানি দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে।* ধূমপান ত্যাগ করুন, আর দুশ্চিন্তামুক্ত থাকুন।* প্রয়োজনীয় ওষুধ বা ইনসুলিন যথাযথভাবে মজুদ রাখুন। তবে অতিরিক্ত ওষুধ বা ইনসুলিন কিনে ফেলার দরকার নেই। বাজারে এগুলোর কোনো ঘাটতি নেই।
* সতর্কতার পরেও যদি করোনা সংক্রমণের লক্ষণ যেমন- সর্দি, জ্বর, কাশি, গলাব্যথা বা শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে সরকার নির্দেশিত করোনা স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে দ্রুত যোগাযোগ করুন। প্রয়োজনে টেলিমেডিসিন সেবা নিতে পারেন।* নিজের বা পরিবারের অন্য কারও করোনা সংক্রমণের লক্ষণ প্রকাশ পেলে এক্ষেত্রে ডায়াবেটিস রোগী আলাদা থাকার ব্যবস্থা নিন।