বড় ভাইয়ের ভালোবাসার বিয়ের বলি হলেন ছোট ভাই !!
পরিবারের অমতে ভালোবেসে কুমিল্লার তিতাসের মানিককান্দি গ্রামের নিপা আক্তারকে বিয়ে করে ইয়াসিন। কন্যা নিপার অমতের বিয়ে বাবা ডালিম মিয়াসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি। এতে ক্ষিপ্ত হয়। তারা ইয়াসিনকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এ নিয়ে ইয়াসিন ও নিপার পরিবারে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। সেই দ্বন্দ্বে ইয়াসিনের ছোট ভাই আমিন খুন হন বলে অভিযোগ উঠেছে। নিহত আমিন কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার পালাসুতা গ্রামের প্রবাসী নোয়াব মিয়ার ছেলে। ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার দুপুরে পরিবারের কাছে আমিনের লা’শ হস্তান্তর করা হয়।
এসময় পরিবারের সদস্যদের আহাজারিতে নিহতের ভাড়া বাসা নগরীর ঠাকুরপাড়া এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। জানাজার নামাজ শেষে টমসমব্রিজ এলাকায় আমিনের লা’শ দাফন করা হয়। শুক্রবার বিকালে দক্ষিণ ঠাকুরপাড়া এলাকার শেখ ফজিলাতুন্নেসা এমপি মাঠে ক্রিকেট খেলা নিয়ে খুন হন রং মিস্ত্রি মো: আমিন মিয়া। এ ঘটনায় পুলিশ শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারী) সকালে মূল ঘাতক পারভেজ এবং তার ফুফু নাজমা বেগমকে আটক করেছে থানা পুলিশ। ঘাতক পারভেজ নগরীর দক্ষিণ ঠাকুরপাড়া এলাকার মহিলা কাউন্সিলর গলির মেনু খান কলোনীর শাহলম মিয়ার ছেলে এবং নাজমা বেগম একই এলাকার তৌহিদ মিয়ার স্ত্রী।
সূত্র জানায়, শুক্রবার সকালে কুমিল্লা নগরীর শেখ ফজিলাতুন্নেছা মডার্ন হাইস্কুলের পেছনে বিসিক এলাকার ভেতর মাঠে ক্রিকেট খেলছিল ইয়াসিনের ছোট ভাই মোহাম্মদ আমিন। এই খেলায় আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করছিল নিপার মামাতো ভাই পারভেজ। নো বল দেওয়ার দ্বন্দ্বের জের ধরে পারভেজ ছুরিকাঘাতে খুন করে আমিনকে।
এদিকে, গতকাল ঘটনার পরে রাতে অভিযান চালিয়ে ঘাতক পারভেজকে আটক করে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ। তার দেখানো মতে হ’ত্যার কাজে ব্যবহৃত ছোরাও উদ্ধার করা হয়। আমিনের মা শেফালী বেগম সকালে বাদী হয়ে কোতয়ালী মডেল থানার চারজনের নাম উল্লেখ করে একটি হ’ত্যা মা’মলা দায়ের করেন। আসামিরা হলেন-ঘাতক পারভেজ, তার ছোট ভাই আরমান, ঘাতক পারভেজের খালা নাজমা ও খালু জুয়েল।
নিহত মোহাম্মদ আমিনের বড় ভাই ইয়াসিন বলেন, আমি সম্পর্ক করে বিয়ে করেছি। এজন্য আমার ছোট ভাইকে আমার বউয়ের মামাতো ভাই পারভেজ খুন করছে। আমার ভাইকে খুন করার আগের সপ্তাহে পারভেজ আমার সাথেও ঝগড়া লাগে। ওই সময় এলাকার মানুষ ঝগড়া থামিয়েছে।আমিনের মা শেফালী বেগম বলেন, ‘আমার পোলাডা সারাডা সাপ্তাহ কাম করতো। শুধু শুক্কুরবার আইলে খেলতো। কেউর লগে কাইজ্জা ঝগড়া করতো না। আমার ভালা পোলাডারে ছুরি দিয়া মাইরালাইলো।’
কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল হক বলেন, ঘটনার দিন দুপুরে এজাহার নামীয় আসামি নাজমা ও রাতে অভিযান চালিয়ে কুমিল্লা রেলস্টেশন এলাকা থেকে ঘাতক পারভেজকে আটক করা হয়েছে। তার দেখানো মতে হ’ত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছোরা উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন এ ঘটনায় আমিনের ভাই ইয়াছিন বাদি হয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় ৪ জনের বিরুদ্ধে হ’ত্যা মাম’লা দায়ের করেছে।