আসামিদের সঙ্গে ছবি তুলে বিপাকে ওসি !!
দ্রুত বিচার আইনের মা’মলার আসামিদের সঙ্গে ছবি তুলে বিপাকে পড়েছেন পটুয়াখালীর বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান।মা’রামারি ছিনতাই, মাদক মা’মলার আসামিদের সঙ্গে সেলফি ও ফটো সেশন করে বিতর্কিত হলেন বাউফল থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান। আসামিরা রোববার রাতে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে ওসির সঙ্গে ওই সেলফি ও ফটো সেশনের ছবি পোস্ট করার সঙ্গে সঙ্গে তোলপাড় শুরু হয়।
জানা গেছে, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশপ্রাপ্তিতে সারাদেশের মতো বাউফল থানা চত্বরে আনন্দ উৎসবের আয়োজন করা হয়। এতে দ্রুত বিচার আইনের একটি মা’মলার তালিকার এক নম্বর আসামি মো. ফয়েজ বিশ্বাস (২৫),দুই নম্বর আসামি মো. মামুন হাওলাদার (৩২), তিন নম্বর আসামি মো. কবির মৃধা (৩০), ৯ নম্বর আসামি মো. হাসান দফাদার (৩০), ১০ নম্বর আসামি আলাউদ্দিন খান (৩০) ও তাদের সমর্থকরা উপস্থিত হন। সেখানে ওসির সঙ্গে ছবি তোলেন তারা। পরে সেসব ছবি নিজেদের ফেসবুকে পোস্ট করে ওসির প্রশংসা করেন।
মামুন হাওলাদারের ছবিতে দেখা যায়, বাউফল থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান মাঝখানে দাঁড়িয়ে এবং পরে ছবিটি পোস্ট করে ছবির ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন,‘আমার খুব ভালোবাসার একজন অফিসার, মো. মোস্তাফিজুর স্যার বাংলাদেশ পুলিশ ইনচার্জ বাউফল থানা।ওসির সঙ্গে সেলফি ও ফটো সেশন করা ওইসব আসামিদের বিরুদ্ধে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতে নওমালা ইউনিয়নের বটকাজল গ্রামে মিজান মৃধার বাড়িতে হামলার অভিযোগে মা’মলা রয়েছে। ওই সময় হামলাকারীদের ভয়ে মিজানের বড় ভাই শাহিন আলম (৪০) স্ট্রোক করেন।
অন্যদিকে, ফয়েজ বিশ্বাসের আইডি থেকে পোস্ট করা সেলফিতে দেখা যায়, ওসি মোস্তাফিজুর রহমান ও ফয়েজ হাস্যোজ্জ্বল। ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন,‘একজন সৎ পুলিশ অফিসার, স্যার আপনার হাতেই নিরাপদ আমাদের এই বাউফল। স্যারের জন্য অনেক শুভকামনা রইল।মা’মলার বিবরণ থেকে জানা যায়, পূর্ববিরোধ ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতে ফয়েজ বিশ্বাসের (২৫) নেতৃত্বে ১৮-১৯ জনের একটি দল বাউফলের নওমালা ইউনিয়নের বটকাজল গ্রামের ব্যবসায়ী মো. মিজান মৃধার বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটায়। ওই সময় হামলাকারীদের ভয়ে মিজানের বড় ভাই শাহিন আলম (৪০) স্ট্রোক করেন।
ওই ঘটনায় দ্রুত বিচার আদালতে ১৮ ফেব্রুয়ারি মিজান বাদী হয়ে অভিযুক্তদের নাম উল্লেখ করে পাঁচ-সাতজন অজ্ঞাত ব্যক্তির নামে নালিশি অভিযোগ করেন। আদালত অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করে বাউফল থানার ওসিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দেন। বাউফল থানার ওসি ২৫ ফেব্রুয়ারি মা’মলাটি এজাহার হিসেবে তালিকাভুক্ত করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ মোহাম্মদ মোহসিন বলেন,‘মা’মলা তদন্তকালে আসামিদের নিয়ে আনন্দ উদযাপন। তাও আবার দ্রুত বিচার আইনের ধারার মা’মলায়। এটা খুবই দুঃখজনক, যা সঠিক বিচারের জন্য হুমকিস্বরূপ।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন,‘আনন্দ উদযাপন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হাজারো মানুষ উপস্থিত হয়েছিলেন। অনেকেই আমার সঙ্গে ছবি ও সেলফি তুলেছেন। তাদের মধ্যে কে আসামি, আর কে আসামি নয়, তা আমার ঠিক চেনার কথা নয়। যেহেতু আসামিদের উপস্থিতি এবং তাদের ছবি নিয়ে আলোচনা উঠেছে সে কারণে এখন তাদের গ্রেফতারে পুলিশের জন্য সহজ হবে।’