লাইলাতুল বারাতের রাত্রিতে আমল ও ফজিলত !!
মুসলিম উম্মাহর জন্য ইবাদত-বন্দেগী তথা আচার-অনুষ্ঠানের মধ্যে লাইলাতুল বরাত (শবে বরাত) অন্যতম। মুসলিম সমাজে শাবান মাস ও লাইলাতুল বরাত নিয়ে যদিও বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ি অবস্থা তথাপিও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিস অনুযায়ী লাইলাতুল বারাতের গুরুত্ব অত্যাধিকএই রজনীতে ইবাদত-বন্দেগীর ব্যাপারে অসংখ্য দলীল প্রমাণ রয়েছে। আমরা কোনো প্রকার বাড়াবাড়িও করি না এবং অবহেলায় ছাড়াছাড়িও ভালোভাবে দেখি না।
বাস্তব কথা হলো- লাইলাতুল বরাতে অনুষ্ঠান তথা ইবাদত করা যাবে না যেমন ছাড়াছাড়ি; তেমনি লাইলাতুল বারাতের ইবাদত করতেই হবে, না করলে নয় তেমন বাড়াবাড়ি। ইসলাম ভারসাম্যতার দ্বীন তথা জীবনব্যবস্থা বিধায় আমরা সহিহ্ হাদিস মোতাবেক সঠিকভাবে লাইলাতুল বারাতের রাত্রিতে ইবাদত-বন্দেগীতে নিজেদেরকে নিয়োজিত করে আল্লাহর নৈকট্য হাসিলে ব্রতী হব ইনশাআল্লাহ্।
লাইলাতুল বারাতের ফজিলত- ১৫ শাবানের ফজিলত ও করণীয় সম্পর্কে আল্লাহর প্রিয় হাবীব রাসুল (সা.) এর অসংখ্য হাদীস রয়েছে। তার থেকে কয়েকটি-
হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, নবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ তাআ’লা অর্ধ-শাবানের রাতে (শাবান মাসের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাতে) সৃষ্টির দিকে (রহমতের) দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতিত আর সবাইকে ক্ষমা করে দেন।’
এই রাতের আমল: হাদিস শরীফের নির্দেশনা অনুযায়ী এই রাতে কি কি আমল করা যায়, এ ব্যাপারে হাদিসে এসেছে- হযরত ইবনুল হারিস (র.) থেকে বর্ণিত- হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, একবার রাসুল (সা.) রাতে নামাজে দাঁড়ান এবং এত দীর্ঘ সেজদা করেন যে, আমার ধরণা হল তিনি হয়তো মৃত্যুবরণ করেছেন। তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল। যখন তিনি সেজদা থেকে উঠলেন এবং নামাজ শেষ করলেন তখন আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে আয়েশা অথবা বলেছেন, ও হুমাইরা, তোমার কি এই আশংকা হয়েছে যে, আল্লাহর রাসুল তোমার হক নষ্ট করবেন? আমি উত্তরে বললাম, না, ইয়া রাসুলুল্লাহ। আপনার দীর্ঘ সেজদা থেকে আমার আশংকা হয়েছিল, আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কিনা। রাসুল (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি জান এটা কোন রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা.) ভাল জানেন। রাসুল (সা.) তখন ইরশাদ করেন-
এটা হলো অর্ধ-শাবানের রাত। (শাবান মাসের চৌদ্দ তারিখের দিবাগত রাত) আল্লাহ তাআলা অর্ধ-শাবানের রাতে তাঁর বান্দার প্রতি মনোযোগ দেন এবং ক্ষমা প্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন এবং অনুগ্রহ প্রার্থীদের প্রতি অনুগ্রহ করেন আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের ছেড়ে দেন তাদের অবস্থাতেই। (শুয়াবুল ইমান, বাইহাকী)
এই হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে-
১. দীর্ঘ নফল নামাজ পড়া, যাতে সেজদাও দীর্ঘ হবে। ২. কোরআন তেলাওয়াত করা ৩. দরুদ শরীফ পড়া ৪. ইসতেগফার পড়া ৫. দোয়া করা ৬. রাতের কিছু সময় ঘুমানো (এমন যেন না হয় যে, সারা রাতের দীর্ঘ ইবাদতের ফলে ক্লান্তিতে ফজরের নামাজ জামায়াতের সাথে পড়া থেকে বঞ্চিত হতে হয়) ৭. পরদিন রোযা রাখা