কাশ্মীরে কৌশল পাল্টেছে পাকিস্তান, সতর্ক ভারত !!
ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টায় ভেতরে-বাইরে অনেক ধরনের তৎপরতা চলছে। কিন্তু সমাধানসূত্রে বারবার প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীর। সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেপথ্য চেষ্টায় অনেকদূর এগিয়েছিল শান্তি-প্রক্রিয়া। দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ে ইতিবাচক পদক্ষেপও ছিল। নতুন করে ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু হতে চলছিল। কিন্তু সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ রদ করে জম্মু-কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নেওয়ার কারণে সে সম্পর্কে সায় দেয়নি পাকি মন্ত্রিসভা। তারা বলেছেন, আগে জম্মু ও কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন ফিরিয়ে দেওয়া হোক, তারপর বাণিজ্য শুরু হবে; এর আগে নয়।
এরপর থেকে দুই দেশের মধ্যে সন্দেহ-সংশয় আরও ডালপালা মেলেছে। ভারত বলছে, জম্মু ও কাশ্মীরে ‘সন্ত্রাস চালানোর’ পন্থা বদল করেছে পাকিস্তান। এবার স্থানীয় জঙ্গিদের সামনে রেখে অভিযান চালাচ্ছে পাক মদতপুষ্ট জেহাদি সংগঠনগুলো। এমনটাই জানিয়েছেন ভারতীয় সেনার চিনার কোরের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডি পি পাণ্ডে।
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পাণ্ডে বলেন, “কাশ্মীরে সন্ত্রাস ছড়ানো নিয়ে পাকিস্তানের উদ্দেশ্য পালটায়নি। কিন্তু তাদের পন্থা বদল হয়েছে। এবার সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের অগ্রভাগে বিদশি জঙ্গিদের না রেখে কাশ্মীরের স্থানীয় সন্ত্রাসীদের উসকানি দিচ্ছে তারা। অর্থাৎ, সন্ত্রাসবাদকে স্থানীয় পরিচিতি দিতে চাইতে তারা।”
সাক্ষাৎকারে সেনার সাফল্যের কথা তুলে ধরে লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডি পি পাণ্ডে আরও বলেন, “উপত্যকায় সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ কমছে। জঙ্গি হামলার ঘটনায় প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। অনুপ্রবেশকারীদের মদত দিতেই সীমান্তে গোলাবর্ষণ করে পাক সেনাবাহিনী। তবে আমরা সীমান্তে শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”
উল্লেখ্য, ভারতের সঙ্গে সম্মুখ সমরে না নেমে জম্মু ও কাশ্মীরে ছায়াযুদ্ধ চালাচ্ছে পাকিস্তান আর্মি ও গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। সীমান্তের অপার থেকে সন্ত্রাসবাদীদের ঢুকিয়ে এবং স্থানীয় যুবকদের মগজধোলাই করে ভারতকে রক্তাক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে পড়শি দেশটি। তবে ভারতীয় সেনার লাগাতার অভিযান ও আন্তর্জাতিক মহলের চাপের মুখে অনেকটা বিপাকে ইসলামাবাদ।
বিশ্লেষকদের মতে, কাশ্মীরে জঙ্গি অনুপ্রবেশ নিয়ে আমেরিকার মন্তব্যে চাপের মুখে পাকিস্তান। কারণ, জইশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তইবা-সহ প্রায় সমস্ত জেহাদি সংগঠনগুলির রাশই পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এবং আইএসআইয়ের হাতে। ফলে এদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে কার্যত অপারগ প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকার।তাছাড়া, জঙ্গিদের সমর্থন করার রাস্তা থেকে সরে না এলে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনায় বসা যে সম্ভব নয়, সেকথা বারবার জানিয়েছে নয়াদিল্লি। ফলে আপাতত দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন।