প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া করায় যুবক কে ডেকে নিয়ে খুন
প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক থাকায় ইসরাফিল হোসেনকে তার বাড়ি থেকে ডেকে গলায় তোয়ালে জড়িয়ে হত্যা করা হয়। এরপর প্রবাসীর বোন এবং তার সহযোগীরা স্থানীয় কবরস্থানে লাশ দাফন করে।
ঘটনার সাত দিন পর পুলিশ হত্যার সাথে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করে এবং লাশ উদ্ধার করে। ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার-ডিএসবি) জাহাঙ্গীর আলম বৃহস্পতিবার বিকেলে যশোর জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে এ কথা বলেন।
নিহত ইসরাফিল হোসেন যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিয়াডাঙ্গা গ্রামের বজলু মিয়ার ছেলে। তিনি শার্শার কাশিয়াডাঙ্গায় আকিজ বিড়ি কারখানায় দিনমজুর হিসেবে কাজ করতেন।
আটকরা হলেন, শার্শার কাশীডাঙ্গা গ্রামের কাশিয়াডাঙ্গা ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন, একই গ্রামের নুর মোহাম্মদের ছেলে আলম এবং ইসমাইলের স্ত্রী মর্জিনা বেগম।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, ইসরাফিল হোসেন ২৭ আগস্ট নিখোঁজ হন। পরে ২৯ আগস্ট তার পরিবারের পক্ষ থেকে একটি জিডি করা হয়। জিডি করার ৫ দিনের মধ্যেও কোনো সন্ধান না পাওয়ায় ডিবি কে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ১ সেপ্টেম্বর দুপুরে কাশিয়াডাঙ্গা গ্রামে অভিযান চালানো হয় এবং তিনজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নিখোঁজ ভুক্তভোগী ইসরাফিলের লাশ কাশিয়াডাঙ্গা গ্রামের মোড়ালবাড়ি বড় কবরস্থানে চাপা পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, মর্জিনার এক ভাই বিদেশে বসবাস করছিলেন। প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে ইসরাফিলের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। এজন্য মর্জিনা তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। মর্জিনা হত্যার জন্য মোশাররফের সাথে দেড় লাখ টাকায় চুক্তি করেছিলেন। সে অনুযায়ী ইসরাফিলকে বাড়ি থেকে ডেকে হত্যা করা হয়। হত্যার আগে তিনি মাদকাসক্ত ছিলেন এবং অজ্ঞান ছিলেন।
বিদেশি ছাড়াও, পারিবারিক জমি ও রাস্তা নিয়ে বিরোধ এবং মাদক ব্যবসার আধিপত্য নিয়ে ইসরাফিলকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। নূর আলম ও মেহেদী নামে দুই যুবক এই হত্যা মিশনে অংশ নেয়।
মেহেদী ওই গ্রামে গৃহিণী হিসেবে থাকেন। তবে তাকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি। এদিকে, নিহত ইসরাফিলের স্ত্রী রোজিনা বেগম শার্শার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় গ্রেপ্তার তিনজন ছাড়াও আরও তিনজন এবং অজ্ঞাতনামা দুই -তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) বেলাল হোসেন, যশোর ডিবি পুলিশের ওসি রূপম কুমার সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।