মুজিববর্ষের ঘর পছন্দ না হওয়ায় ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিলেন!
তার নাম ইসমাইল বিশ্বাস (৫)। পেশায় একজন ভ্যান চালক। স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে একটি কুঁড়েঘরে বসবাস। একটু বৃষ্টি হলেই ঘরটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের দোরগোড়ায় গিয়েছেন অনুদানের জন্য একটি বাড়ির জন্য। কিন্তু কেউ তার জন্য একটি বাড়ির ব্যবস্থা করেনি। তিনি এই কুঠুরিতে পরিবারের সঙ্গে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। ইসমাইল বিশ্বাস বর্ষাপাড়া গ্রামের নুর ইসলাম বিশ্বাসের ছেলে।
অন্যদিকে, একই গ্রামের মৃত রাঙ্গা মিয়া বিশ্বাসের ছেলে ওবায়দুল বিশ্বাস মুজিববর্ষের একটি বাড়ি পান। তিনি সম্প্রতি এই বাড়িতে প্রবেশ করেছিলেন কারণ তিনি এটি পছন্দ করেননি। যাইহোক, তার বাড়িতে তার পরিবারের থাকার জন্য একটি বড় টিন-কাঠের ঘর আছে। ওবায়দুল বিশ্বাস একজন আর্থিকভাবে সচ্ছল ব্যক্তি। এই ব্যক্তি কীভাবে মুজিববর্ষের বাড়ি পেলেন সেই প্রশ্ন এখন এলাকাবাসীর মুখে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি সদস্য লায়েকুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, ওবায়দুল বিশ্বাস আমাদের এলাকার একজন ভালো মানুষ। তিনি কোনোভাবেই মুজিবের বাড়ি পেতে পারেন না। আমাদের এলাকায় অনেক দরিদ্র মানুষ আছে। ওবায়দুল বিশ্বাসকে তাদের ছাড়া বাড়ি দেওয়া উচিত হয়নি। যাইহোক, শুনেছি স্থানীয় একজন আওয়ামী লীগ নেতা ৫০,০০০ টাকা দিয়ে এই বাড়ি নিয়ে এসেছেন। তিনি ঘরটি ভেঙে ফেলেছিলেন কারণ বাড়ি তৈরি হওয়ার পরে তিনি এটি পছন্দ করেননি।
ওবায়দুল বিশ্বাস টাকা দিয়ে বাড়ি পাওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, “হিরণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬ নং ওয়ার্ডের সভাপতি কামরুল বিশ্বাস আমাকে ভালোবাসা দিয়ে এই বাড়ি দিয়েছেন।” এই বাড়ি আনতে আমার কোন টাকার দরকার ছিল না। আমি ঘরটি ভেঙে দিয়েছিলাম কারণ এটি নির্মাণের পর আমি এটি পছন্দ করিনি।
যাইহোক, ওবায়দুল বিশ্বাসের স্ত্রী লাইলি বেগম স্বীকার করেছেন যে তিনি ৫০,০০০ টাকা দিয়ে বাড়ি পেয়েছেন এবং বলেন, “আমার স্বামী ৫০,০০০ টাকা দিয়ে বাড়ি নিয়ে এসেছিলেন।” কিন্তু টাকা কে দিয়েছে জানি না।
হিরণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের 8 ওয়ার্ডের সভাপতি কামরান বিশ্বাস বলেন, আমি এই বাড়িটা দেইনি। বাড়িটি দিয়েছে হিরণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান খান।
হিরণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান খান বলেন, আমরা হিরণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের 8 নং ওয়ার্ডের সভাপতি কামরুল বিশ্বাসের সুপারিশে মুজিববর্ষের বাড়ি পেতে ওবায়দুল বিশ্বাসের নাম বেছে নিয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, যেহেতু মুবিবর্ষের ঘরগুলো সরকারি অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে। তাই ইচ্ছা করলে এই ঘরগুলো ভেঙে ফেলা যাবে না। আমি বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।