আল্লাহর তরফ থেকে জীন দ্বারা এক রাতেই নির্মাণ করা হয়েছে মসজিদটি!
সুরা মসজিদ দিনাজপুর জেলার একটি স্থাপত্য ঐতিহাসিক নিদর্শন। ১৯১৭ সালে মুঘল আমলে সম্রাট শাহাজান এবং সম্রাট সুজা উদ্দিনের মধ্যে দুটি এলাকায় যুদ্ধ শুরু হয়েছিল।
সম্রাট সুজা উদ্দিনের ঘোড়ার ঝাঁক যুদ্ধ করতে ঘাট পার হত এবং যুদ্ধ শেষে ঘোড়ার পালকে পানি খাওয়ানো হতো। একই সময়ে সেই ঘোড়ার ডকে স্নান করা হয়েছিল। এখানে ৫ জন পীর শুয়ে আছেন। তারা হলেন কাজী সদর উদ্দিন, বদরে আরিফিন, শাহ ইসমাইল, দরিয়া বোখারী এবং নূর উদ্দিন।
এই মসজিদের নাম সম্পর্কে বিভিন্ন বক্তব্য রয়েছে। কেউ বলে সৌর মসজিদ, কেউ বলে সুরা মসজিদ, কেউ বলে শাহ সুজা মসজিদ। মেলোডি শব্দের অর্থ অসুর বা জ্বিন।
স্থানীয়রা জানান, জিনাররা এক রাতে এটি তৈরি করে। তাই এর নাম সূরা মসজিদ। সৌর শব্দের অর্থ হল স্বর্গীয় বা অদৃশ্য, অর্থাৎ অদৃশ্য যা ঘটে বা মানুষের চোখের আড়ালে ঘটে। অর্থাৎ মসজিদটি গোপনে নির্মিত হয়েছে।
যে বাড়িতে সম্রাট সুজা উদ্দিন তার সৈন্যদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করতেন, পরবর্তীকালে সেখানকার উপাসকেরা এটি নির্মাণ করেন। সেই থেকে এই মসজিদটিকে সুজা মসজিদও বলা হয়। এরকম আরো অনেক কিছু জনসমক্ষে শোনা যায়।
মসজিদটি দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলা থেকে ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে এবং ঘোড়াঘাট-হিলি পাকা রাস্তা সংলগ্ন প্রাচীন দীঘি সংলগ্ন। এটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের তালিকাভুক্ত একটি সাইট। এই মসজিদে গ্রানাইট সহ বিভিন্ন মূল্যবান পাথর পাওয়া গেছে।
মসজিদের দীর্ঘ পূর্ব-পশ্চিমে। বাইরের এলাকা ১২.১২ মিটার এবং ভিতরের ঘর ৪.৪৪ মিটার। মসজিদের প্রধান কক্ষে চারটি মিনার এবং বারান্দার দুই কোণে বাইরের দিকে একটি মিনার রয়েছে। এগুলো কালো পাথরের তৈরি। মূল কক্ষ এবং বারান্দার পূর্ব দেয়ালে ৩ টি প্রবেশপথ রয়েছে। মূল কক্ষের উপরে একটি গম্বুজ আছে। বারান্দায় রয়েছে ৩ টি ছোট গম্বুজ।
মসজিদের কথা বলতে গিয়ে এলাকার ৯৫ বছর বয়সী আজগর আলী বলেন, আমি আমার পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে এই মসজিদের ইতিহাস শুনে আসছি। সুজা মসজিদ ৪০০ বছরেরও বেশি পুরনো হবে। এটি সুলতানি আমলের একটি মসজিদ। আমি আমার পিতামহদের কাছ থেকে শুনেছি যে, মসজিদটি রাতারাতি আল্লাহ কর্তৃক নির্মিত হয়েছে। প্রতিদিন দূর -দূরান্ত থেকে বহু মানুষ এখানে আসেন বিভিন্ন বিষয়ে মানত নিতে। তিনি বলেন, এই মসজিদে নামাজ পড়ার পর যদি সে আল্লাহর কাছে কিছু চায়, আল্লাহ তার আশা পূরণ করেন।