দশম শ্রেণিতে পড়েই অতিরিক্ত সচিব, অস্ত্র নিয়ে চলেন বিলাসবহুল গাড়িতে
নাম আব্দুল কাদের মাঝি। তিনি দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। কিন্তু তিনি নিজেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে পরিচয় দেন। প্রতারণার মাধ্যমে তিনি একটি পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) তৈরি করেন। মুদ্রিত ভিজিটিং কার্ড। তিনি গাড়িতে স্টিকার এবং ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ড ব্যবহার করেছিলেন।
এই ভুয়া অতিরিক্ত সচিবের জন্ম নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচরের একটি ভূমিহীন কৃষক পরিবারে। তার বাবা জীবিকার সন্ধানে সন্দ্বীপে চলে যান। মাছ ধরা ও মাছ ধরার মাধ্যমে তিনি জীবিকা নির্বাহ করেন। মূলত ভূমিহীন ভাসমান আবদুল কাদের এখন ১২ মিলিয়ন টাকার একটি গাড়িতে নিজেকে অতিরিক্ত সচিব আবদুল কাদের চৌধুরী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। গাড়িতে বাংলাদেশ সচিবালয়ের কাচের স্টিকার এবং সামনে পতাকা দাঁড়িয়ে আছে।
গুলশানের ১ নম্বর জব্বার টাওয়ারে তার অফিস আছে প্রায় ৬ হাজার বর্গফুটের। কাওরান বাজারেও তার অফিস আছে। মিরপুর ৬ নম্বরে বাস করে। গুলশান এবং মিরপুরে একাধিক ফ্ল্যাট আছে। তিনি গাজীপুরের বোর্ড বাজারে নয় তলা বাড়ি এবং গাজীপুরের পূবাইলে-বিঘা বাগান বাড়ি কিনেছিলেন। ডাচ-বাংলা ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, সিটি ব্যাংক সহ বেশ কয়েকটি ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট রয়েছে। একাউন্টে লক্ষ লক্ষ টাকা। কিন্তু তার কোন বৈধ আয় নেই। প্রতারণাই তার মূল পুঁজি। অবশেষে তিনি একটি গোয়েন্দা জালে ধরা পড়লেন।
কাদের ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে পালবি থানায় অস্ত্র মামলা এবং তেজগাঁও থানায় প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়েছে। কাদেরকে ইতিমধ্যেই সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে এবং তার তিন সহযোগীকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। কাদের-চক্রের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট জালিয়াতি, জালিয়াতি এবং ভুয়া নিয়োগপত্র জারি করার জন্য ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে।