অন্ধ আম্মার তিন ভাষায় মুখস্ত করলেন পুরো কুরআন !!

আব্দুল্লাহ আম্মার মুহাম্মাদ আস-সাঈদ। জন্মগতভাবেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এ বিস্ময় বালক। ৮ বছর বয়সে মাত্র ৩ মাসে পুরো কুরআন মুখস্ত করে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। ৯ বছর বয়সে আরবি ভাষায় ছাড়াও আরও ২টি ভাষায় পবিত্র কুরআনুল কারিম আয়ত্ব করেছেন আম্মার।তীক্ষ্ন মেধার অধিকারী আম্মার শুনে শুনেই ৮ বছর বয়সে পুরো কুরআন মুখস্ত করেন। পরবর্তী এক বছরে ইংরেজি ও ফরাসি ভাষায় কুরআনের অনুবাদ শেখেন। ৯ বছর বয়সেই তিনি ৩ ভাষায় পবিত্র কুরআন আয়ত্ব করেন।

মিসরের ২০১৮ সালে ২৫তম আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার পর সবাই জানতে পারে যে অন্ধ আম্মার ৮ বছর বয়সে মাত্র ৩ মাসে পুরো কুরআন মুখস্ত করেছিলেন। পরবর্তী এক বছরের নিরলস পরিশ্রমে ধীরে ধীরে ইংরেজি ও ফরাসি ভাষায় পবিত্র কুরআনের অনুবাদও আয়ত্ব করেন আম্মার।

মিসরের এক সাধারণ পরিবারে আম্মারের জন্ম। বাবার উৎসাহ উদ্দীপনা এবং আগ্রহেই আম্মার খুব দ্রæত কুরআন হেফজ সম্পন্ন করেন। আম্মারের বাবা তার জন্য ইংরেজি ও ফরাসি ভাষার ২ জন উস্তাদ ঠিক করে দেন। যারা তাকে এ দুই ভাষায় কুরআনের অনুবাদ শেখাবেন। কুরআনের জ্ঞান লাভে সন্তানের জন্য পিতার এ অবদান ছিল অনন্য আগ্রহ।ছোট্ট আব্দুল্লাহ আম্মার তার পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে বেশি সময় নেয়নি। মাত্র ৯ বছর বয়সেই ইংরেজি ও ফরাসি অনুবাদসহ পুরো কুরআন মুখস্ত করতে সক্ষম হন।

২০১৬ ও ২০১৮ সালে আব্দুল্লাহ আম্মার মিসরের জাতীয় হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে শ্রেষ্ঠ হাফেজ নির্বাচিত হন। শ্রেষ্ঠ হাফেজ নির্বাচিত হওয়ায় মিসরের তৎকালীন ধর্মমন্ত্রী মুহাম্মাদ মুখতার জুমআহ তাকে সম্মাননা প্রদান করেন এবং প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল-সিসিও তাকে নগদ আর্থিক পুরস্কার এবং সার্টিফিকেট প্রদান করেন।

মিসরের জামেয়া আল-আজহারের প্রক্টর শায়খ ড. আহমাদ আত-তাইবি তার অসাধারণ কৃতিত্বের প্রশংসা করেন। জামেয়া আল-আজহার তার ও তার পরিবারের পবিত্র হজ সম্পাদনের ব্যবস্থা করেন।আব্দুল্লাহ আম্মার ৩ ভাষায় পুরো কুরআন আয়ত্ব করে থেমে থাকেন নি। তিনি ১১ বছর বয়সে হাদিসের প্রসিদ্ধ ৬ কিতাবের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের হাদিসগুলো মুখস্ত করতে সক্ষম হন। আব্দুল্লাহ আম্মার বাস্তবে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হলেও শুনে শুনে জাহেলি ও উমাইয়া যুগের শ্রেষ্ঠ কবিদের কবিতা ও শেষ আয়ত্ব করেন।

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আম্মার ছোট থাকা অবস্থায় রেডিওতে কুরআন শুনে তা শেখার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তারপরই তার আকাঙ্খা পূরণে এগিয়ে আসেন তার বাবা। সেই থেকেই শুরু। তারপর একে একে ৩ ভাষায় কুরআন আয়ত্বসহ হাদিস ও কবিতা আয়ত্ব করেন আম্মার।

আব্দুল্লাহ আম্মার শুনে শুনে পবিত্র কুরআনের অসাধারণ তেলাওয়াতও আয়ত্ব করেন। আম্মার ১০টি সূর ও ভঙ্গিমায় সাবলিলভাবে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করতে পারেন।১২ বছর বয়সী আব্দুল্লাহ আম্মার বর্তমানে জামেয়া আল-আজহারে পড়াশোনা করছেন। উচ্চতর পড়াশোনায় আম্মারকে আল-আজহার সার্বিক সহায়তা দেবে। জামেয়া আল-আজহার থেকেই আম্মার ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করতে চায়।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *