একই তারিখে কাকতালীয়ভাবে সিরাজগঞ্জের তিন মন্ত্রীর মৃত্যু !!
শনিবার (১৩ জুন) না ফেরার দেশে চলে গেলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। এর আগে একই তারিখে চলে গেছেন সিরাজগঞ্জে জন্ম নেয়া আরও দুই নক্ষত্র। তারাও সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী ও দক্ষ রাজনীতিবিদ ছিলেন।শনিবার বেলা ১১টা ১০ মিনিটে রাজধানীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মোহাম্মদ নাসিম এমপি (৭২)।
সিরাজগঞ্জের এই কৃতি সন্তান বিভিন্ন সময়ে সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর নাসিমকে স্বরাষ্ট্র, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী করা হয়।তিনি আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক ও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। ২০১৪ সালে তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে টানা পাঁচ বছর দায়িত্বপালন করেন। তার বাবা জাতীয় নেতা শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর।এর আগে ২০১২ সালের ১৩ জুন রাজধানীর শান্তিনগরের বাসভবনে বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (মতিন) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এম এ মতিন (৭৮)।
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় জন্ম নেয়া এম এ মতিন ছিলেন একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ। শাহজাদপুর থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে প্রথমে তিনি জিয়াউর রহমান ও পরে এরশাদ সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। দুই সরকারে তিনি স্বরাষ্ট্র, স্বাস্থ্য, যুব ও ক্রীড়া, বেসরকারি বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপালন করেছেন। পরবর্তীতে এরশাদ সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও তিনি দায়িত্বপালন করেন। তিনি সাবেক শিল্পমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের জামাতা ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর ভগ্নিপতি।১৯৭৫ সালের ১৩ জুন মারা যান পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের শিল্প ও প্রাকৃতিক সম্পদমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। তার জন্ম হয়েছিল ১৯০০ সালে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের কয়েলগাঁতী গ্রামে।
ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ অধ্যুষিত ভারতে মুসলিম স্বার্থরক্ষার আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। তিনি সিরাজগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান, পাবনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পাবনা-১ আসনের এমএলএ নির্বাচিত হন। পরে পাকিস্তান কেন্দ্রীয় আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে প্রথমে জয়েন্ট চিফ হুইপ; পরবর্তীতে পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের শিল্প ও প্রাকৃতিক সম্পদমন্ত্রী নিযুক্ত হন। তার বড় ছেলে সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন। তার জামাতা মরহুম ডা. এম এম মতিন জাতীয় পার্টি সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন।বাংলাদেশ সরকারের তিন প্রভাবশালী মন্ত্রী, দক্ষ পার্লামেন্টারিয়ান ও রাজনীতিবিদের অবদান সিরাজগঞ্জবাসীর কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।