মেয়েকে বাঁচাতে ইরাকি মায়ের আকুতি, এগিয়ে এলেন দুবাই শাসক !!

ইরাকি একজন মা তার সন্ত্রানের বাঁচানোর আকুতি ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সহায়তার আকুতি জানিয়েছিলেন। এক বিরল রোগে আ’ক্রান্ত ১৯ মাস বয়সী তার মেয়ে। সন্তানকে বাঁচানোর আকুতি ভিডিওতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের শাসক শেখ মুহাম্মদ বিন রাশেদ আল মাকতুমকে ট্যাগ করেছিলেন তিনি। ভিডিওটি নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই ইরাকি ওই শিশুকে দ্রুত দুবাইয়ে আনার ব্যবস্থা করেন দেশটির শাসক। ইরাকি নাগরিক ইব্রাহিম জব্বার মোহাম্মদ এবং তার স্ত্রী মাসার মুন্ধা আ র মেয়ে লাভেন ইব্রাহিম জব্বার আল কুতায়শি মেরুদণ্ডের পেশী অ্যাট্রোফি (এসএমএ) নামে একটি বিরল জিনগত রোগে আ’ক্রান্ত। দুবাইয়ের আল-জলিলা হাসপাতালে এই রোগের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। অত্যন্ত ব্যয়বহুল এই চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ১৮ কোটির বেশি টাকা।

বাবা-মা মেয়েটির চিকিৎসার এই অর্থ সংগ্রহ করতে না পেরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস-প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও দুবাইয়ের শাসক শেখ মুহাম্মাদ বিন রাশেদ আল মাকতুমের উদ্দেশে একটি আবেগময় ভিডিও তৈরি করেন। দুবাই শাসকের দৃষ্টিগোচর হলে গত ৯ ফেব্রুয়ারি তাদের দুবাই নিয়ে আসা হয়।

ভিডিওতে তিনি বলেন, শেখ মুহম্মাদ বিন রাশেদ আল মাকতুম। আমার মেয়ের জন্য আপনার উদারতা প্রার্থনা করছি। আমার মেয়ে বিরল রোগে আ’ক্রান্ত। মেয়েটি যন্ত্রণায় ছটফট করছে। আমাদের দেশে এই রোগের দক্ষ চিকিৎসক এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকায় তাকে দুবাইয়ের আল জলিলা হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে। তবে আমরা তার চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে পারছি না। সময়ও শেষ হয়ে যাচ্ছে। কারণ দুই বছর বয়সের মধ্যে এই রোগের চিকিৎসা করাতে হয়।

তিনি বলেন, ছোট লাভেনের দু’বছর পূর্ণ হতে মাত্র তিন মাস বাকি। আমি তাকে জীবনের নতুন আলো দেয়ার জন্য আপনার সহায়তা চাই। আপনাকে অনুরোধ করছি আমার মেয়েকে আপনার দেশের কনিষ্ঠতম অতিথি হিসেবে বিবেচনা করুন।ভিডিওটি প্রায় ১০দিন আগে পোস্ট করা হয়েছিল এবং পরিবারটি সাহায্যের জন্য যে প্রার্থনা করেছিল তা সোমবার পেয়ে যায়। আল-জলিলা চিলড্রেনস স্পেশালিটি হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, শেখ মুহাম্মাদ ভিডিওটি দেখেছেন এবং বলেছেন যে তিনি আর্থিক সহায়তা দেবেন এবং চিকিৎসার ব্যয় বহন করবেন।

লাভেনের বাবা ইব্রাহিম দুবাই শাসকের উদারতায় আবেগপ্রবণ হয়ে বলেন, এই মহানুভবতা তাকে ও তার পরিবারকে গভীরভাবে ছুঁয়ে গেছে।তিনি বলেন, আমরা দুবাইয়ের শাসকের প্রতি কৃতজ্ঞ তিনি আমাদের জীবন ফিরিয়ে দিয়েছেন। আমাদের মেয়েকে চিরতরে হারিয়ে ফেলার শঙ্কা ছিল। আমার মেয়েটি সাধারণ বাচ্চাদের মতো চলাফেরা করতে পারে না; তা দেখে কষ্ট হচ্ছিল। তার হাত-পায়ে শক্তি নেই।

দুবাইয়ের শাসক মুহাম্মাদ বিন রাশেদকে ধন্যবাদ, আমাদের কন্যা এই জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসাটি গ্রহণ করতে যাচ্ছে। শাসক এবং আমিরাতের সব সহানুভূতিশীল মানুষের প্রতি আমাদের আন্তরিক ধন্যবাদ; যারা এই মাধ্যমে আমাদের সহায়তা করেছেন। ইরাকি এই দম্পতির ঘরে ছয় বছরের আরও এক কন্যাসন্তান রয়েছে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *