করোনা’ক্রান্ত ব্যক্তির জানাজায় শতাধিক মানুষ – গ্রাম লকডাউন !!

রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকে করোনা আ’ক্রান্ত রোগীর মরদেহ নিয়ে পালিয়ে আসা ব্যক্তির জানাজায় প্রায় চার শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেছে। পরিবারের সদস্যরা তথ্য গোপন করে মরদেহ মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় জানাজা ও দাফন দেন। পরে জানাজানি হলে এলাকাবাসীর মধ্যে করোনা সংক্রামিত হবার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় শুক্রবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে ওই ব্যক্তির গ্রামটি লকডাউন করেছে উপজেলা প্রশাসন। গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের পশ্চিম শিয়ালদী গ্রামে জানাজার শেষে একই এলাকার কবরস্থানে তাকে দাফন দেওয়া হয়।

করোনায় আ’ক্রান্ত হয়ে নিহত হওয়া ব্যক্তি মুফতি মো. আব্দুল্লাহ আল ফারুকী বিক্রমপুরী সিরাজদিখান উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের পশ্চিম শিয়ালদী এলাকার বাসিন্দা। তিনি ঢাকায় বাসা ভাড়া করে থাকতেন। সিরাজদিখানের একটি মাদ্রাসার সাবেক মুহতাতিম ছিলেন। বুধবার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা ছয়টার দিকে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে মারা যান তিনি। স্থানীয়রা জানান, গত বুধবার ওই ব্যক্তি ঢাকার ভাড়া বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্বজনেরা তাকে প্রথমে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেন। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকেরা উপসর্গ দেখে ধারণা করেন, তিনি করোনায় আ’ক্রান্ত। তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠান। সেখানে তার মৃত্যু হয়। স্বজনেরা হাসপাতালের কাউকে না জানিয়ে লা’শ নিয়ে চলে আসেন সিরাজদিখানের পশ্চিম শিয়ালদী গ্রামে। করোনায় আ’ক্রান্ত সন্দেহে হাসপাতালে ভর্তিসহ পুরো বিষয়টি গোপন রাখা হয়। ফলে বৃহস্পতিবার জানাজা ও দাফনের সময় অনেক লোকসমাগম ঘটে।

মৃত ব্যক্তির আত্মীয়রা জানায়, করোনা ভা’ইরাসের পরীক্ষার রিপোর্ট না পেয়ে তারা মৃতদেহ ঢাকার গেণ্ডারিয়া এলাকায় গোসল দিয়ে প্রথম জানাজা ও পরে গ্রামের বাড়িতে দ্বিতীয় জানাজা শেষে মরদেহ দাফন সম্পন্ন করে। মৃত ব্যক্তির এক ভাতিজা বলেন, তার চাচা দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছিলেন। এতে তারা ভেবেছিলেন, তিনি করোনাভা’ইরাসে আ’ক্রান্ত হয়ে মারা যাননি। তাই জানাজা ও লা’শ দাফনের ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো নিয়ম মানা হয়নি। কিন্তু পরে জানতে পেরেছেন, তিনি করোনায় আ’ক্রান্ত ছিলেন। সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. বদিউজ্জামান বলেন, প্রথমে ওই মৃত ব্যক্তি করোনায় আ’ক্রান্তের সন্দেহভাজন ছিলেন। পরিবারের লোকজন বিষয়টি গোপন রেখে লা’শ দাফন করেছে। নমুনা

পরীক্ষার প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরে জানা যায়। তাতে দেখা গেছে, ওই ব্যক্তি করোনায় আ’ক্রান্ত ছিলেন। মৃত ব্যক্তির সংস্পর্শে যারা গিয়েছিলেন, তাদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে। যেকোনো প্রয়োজনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন তিনি। এ বিষয়ে সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশফিকুনাহার জানান, বিষয়টি বৃহস্পতিবার রাতে জানার পরপরই ওই ব্যক্তির বাড়িটি লকডাউন করা হয়। আজ শুক্রবার পুরো গ্রাম লকডাউন করা হয়েছে। জানাজা ও দাফনে উপস্থিত ব্যক্তিদের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে শনাক্ত করে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আর লা’শের গোসল করানো ব্যক্তিটি নারায়ণগঞ্জে থাকেন। তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

সূত্রঃ বিডি২৪লাইভ

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *