করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে বিশ্বের প্রায় ৫০০ কোটি মানুষ !!

নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসে বিশ্বের দুই তৃতীয়াংশ মানুষ আক্রান্ত হতে পারেন। চীন সফর না করেও এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকায় এমন শঙ্কার কথা জানিয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন হংকংয়ের জনস্বাস্থ্য মহামারিবিষয়ক এক বিশেষজ্ঞ।

সোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান বলেন, যারা কখনও চীন সফর করেননি, তাদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা টিপ অফ দ্য আইসবার্গ হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধানের এই মন্তব্যের পর হংকংয়ের ওই মহামারি বিশেষজ্ঞ প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের ব্যাপারে সতর্ক করে দিলেন।

হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক গ্যাব্রিয়েল লিং বলেন, সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, এই আইসবার্গের আকার এবং আকৃতি নিরূপণ করা। বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞই বলছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রত্যেক ব্যক্তি অন্য প্রায় আড়াই জনের শরীরে এই ভাইরাসের বিস্তার ঘটাতে পারেন।

যে কারণে এই সংক্রমণের হার (৬০ থেকে ৮০ শতাংশ) হতে পারে। জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞদের এক সম্মেলনে যাওয়ার পথে লন্ডনে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানকে দেয়া স্বাক্ষাৎকারে অধ্যাপক গ্যাব্রিয়েল লিং বলেন, বিশ্বের মোট জনসংখ্যা ৬০ শতাংশ হচ্ছে একটি ভয়াবহ সংখ্যা।

‘এমনকি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃ’ত্যু’র হার যদি মাত্র এক শতাংশও হয়; তাহলে প্রাণহানির পরিমাণ হবে ভয়াবহ।’ বিশ্বজুড়ে এই মহামারির বিস্তার এবং করোনাভাইরাসের প্রতিরোধে চীনের নেয়া পদক্ষেপ ফলপ্রসূ হচ্ছে কি-না সে ব্যাপারে ডব্লিউএইচও’র বিশেষজ্ঞদের বৈঠকে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন হংকংয়ের এই অধ্যাপক।

তিনি বলেন, যদি চীনের নেয়া পদক্ষেপ কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে; তাহলে চীনের মতো ব্যবস্থা নেয়ার কথা এখনই অন্যান্য দেশের ভাবা উচিত। বিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারির অন্যতম এক বিশেষজ্ঞ হংকংয়ের এই অধ্যাপক। ২০০২-২০০৩ সালে সার্সের প্রাদুর্ভাবের সময় বিশ্বের অন্যান্য দেশের শীর্ষ বিজ্ঞানীদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করেছেন তিনি।

ল্যান্সেট মেডিক্যাল জার্নালে গত জানুয়ারিতে লেখা এক নিবন্ধে উহানের পাশাপাশি চীনের অন্যান্য শহরেও নতুন এই করোনাভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। ওই সময় অধ্যাপক গ্যাব্রিয়েল লিং বলেন, এই ভাইরাসের লক্ষণগুলো প্রাথমিকভাবে ধরা না পড়ায় দ্রুত এটি বিশ্বের বড় বড় শহরগুলোতে নিশ্চিতভাবে ছড়িয়ে পড়বে।

কারণ ভাইরাসে আক্রান্তদের শরীরে লক্ষণ প্রকাশ হতে এক থেকে দুই সপ্তাহ সময় লাগে। এই সময়ের মধ্যে চীন থেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করছেন। লিং বলেন, মহামারি বিশেষজ্ঞরা কি ঘটতে যাচ্ছে সেব্যাপারে একটি পরিষ্কার চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। বিশ্বের ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষ কি এই ভাইরাসে সংক্রমিত হতে পারে?

তিনি বলেন, হতে পারে আবার নাও হতে পারে। তবে এটি ব্যাপক স্রোত হিসেবে আসবে। প্রাণহানির সংখ্যা কমে আসতে পারে।সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *