করোনায় গ্রেড ভিত্তিক সরকারি চাকরিজীবীরা কারা কত টাকা পাবেন !!

করোনাভা’ইরাসে আ’ক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে এবং করোনাভা’ইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ প্রতিরোধে দায়িত্বপালনকালে কেউ আ’ক্রান্ত হলে তাদের বিমা সুবিধার পরিবর্তে সরাসরি নগদ অর্থ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।সরকারি কর্মচারীদের গ্রেড এবং -আ’ক্রান্ত ও মৃত্যু অনুযায়ী আর্থিক সহায়তার পরিমাণ হবে ৫ থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ১৫ থেকে ২০তম গ্রেডের কেউ আ’ক্রান্ত হলে পাবেন ৫ লাখ টাকা, ১০ম থেকে ১৪তম গ্রেডের কেউ আ’ক্রান্ত হলে পাবেন সাড়ে ৭ লাখ আর ১ম থেকে ৯ম গ্রেডের আ’ক্রান্ত কর্মচারীরা পাবেন ১০ লাখ টাকা। একইভাবে ১৫ থেকে ২০তম গ্রেডের কেউ মারা গেলে ২৫ লাখ টাকা, ১০ম থেকে ১৪তম গ্রেডের কেউ মারা গেলে সাড়ে ৩৭ লাখ ও ১ম থেকে ৯ম গ্রেডের কেউ মারা গেলে পাবেন ৫০ লাখ টাকা।

তবে হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া ছাড়া কোয়ারেন্টিনে থাকা বা না থাকা ব্যক্তি এই সুবিধার আওতায় আসবেন না। কোভিড-১৯ ছাড়া অন্য কোনো রোগে মারা যাওয়া ব্যক্তি এ সুবিধা পাবেন না। সরকারি হাসপাতালের বাইরে বেসরকারি হাসপাতালে করোনায় আ’ক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়া কোনো চিকিৎসক, নার্স বা কর্মী আ’ক্রান্ত হলে বা মারা গেলেও সরকারি এ আর্থিক সুবিধা পাবেন না।

সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, সরকার যদি কোনো বেসরকারি হাসপাতালকে করোনার চিকিৎসার জন্য ঠিক করে, তবে ওই হাসপাতালে যারা চিকিৎসাসেবার সঙ্গে যুক্ত থাকবেন, তাঁদেরও সরকারি সুবিধাভোগীর আওতায় আনা উচিত।

কীভাবে দাবি করতে হবে আ’ক্রান্ত সরকারি কর্মচারী বা তাদের নমিনিদের এ সুবিধার আওতায় অর্থসহায়তা পেতে আবেদন করতে হবে সরকারি কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডে। এ জন্য লাগবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মনোনীত উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের প্রত্যয়নপত্র। পাশাপাশি লাগবে চিকিৎসার চার্টসহ হাসপাতালে ভর্তির প্রত্যয়নপত্র, হাসপাতালের বিল ও অন্যান্য বিল। আর মারা গেলে অবশ্যই লাগবে মৃত্যুসনদ। নানা প্রমাণপত্র সাপেক্ষেই আ’ক্রান্ত ব্যক্তি বা মৃত ব্যক্তির নমিনিকে টাকা দেওয়া হবে।

এছাড়া যে কর্মচারীর পক্ষ থেকে এ সুবিধার জন্য আবেদন করা হবে, তিনি করোনা মোকাবিলায় কীভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন, তার সুনির্দিষ্ট বিবরণসংবলিত প্রত্যয়নপত্রও লাগবে। সেখানে তাঁর কাজের ধরন, কোথায়, কীভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন ইত্যাদি বিষয় উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠানপ্রধান এই প্রত্যয়নপত্র দেবেন।

উল্লেখ্য, করোনা ভা’ইরাসে দেশে নতুন করে আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আ’ক্রান্ত হয়েছেন আরও ৩৯০ জন। এনিয়ে দেশে সব মিলিয়ে আ’ক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩৭৭২ জনে। মোট মৃত্যু ১২০।বুধবার আড়াইটায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩ হাজার ৯৬টি। এরমধ্যে শনাক্ত হয়েছেন ৩৯০ জন। মোট শনাক্ত ৩ হাজার ৭৭২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ ‍মৃত্যুসহ মোট মৃত্যু হয়েছে ১২০ জনের। এ সময়ের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৫ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৯২ জন।তিনি আরও বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের ৭ জন পুরুষ, নারী ৩ জন। এদের মধ্যে ৭ জন ঢাকার। আর বাকি তিনজন ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জে ও টাঙ্গাইলের।‘বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মৃতদের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব ৩ জন, ৫১ থেকে ৬০ এর মধ্যে ২ জন, ৪১ থেকে ৫০ এর মধ্যে ৩ জন, ২১ থেকে ৩০ এর মধ্যে ২ জন।’

নাসিমা সুলতানা বলেন, ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৩ হাজার ৫২টি। পরীক্ষা করা হয়েছে ৩ হাজার ৯৬টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩২ হাজার ৬৭৪টি। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন ১৫০ জন। মোট আইসোলেশনে আছেন ৯০০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় হোম কোয়ারেন্টিনে এসেছেন ৩ হাজার ২৪০ জন। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে এসেছেন ১ হাজার ৩২৭ জন। মোট কোযারেন্টিনে আছেন ৩ হাজার ৫৬৭ জন।

এসময় সিএমএসডি’র পরিচালক (ভান্ডার ও সরবরাহ) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।দেশে করোনাভা’ইরাসে সংক্রমিত (কোভিড-১৯) প্রথম রোগী শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। ১৮ মার্চ করোনাভা’ইরাসে আ’ক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।

সূত্রঃ বিডি২৪ রিপোর্ট

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *