করোনায় হাসপাতালে মৃ’ত্যু – পাশের বেডের রোগী যা বললেন !!

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রা’ণঘা’তী রোনায় মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে বিশ্বজুড়ে। হাসপাতালে রোগী রাখতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো। এমন ভ’য়াবহ পরিস্থিতিতে করোনা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি সফটওয়্যার ও বিপণন সংস্থার পরিচালক ক্রেইগ দেখেছেন তার পাশের বেডের রোগীর মৃ’ত্যু চিৎকার, কান্না। করোনায় আ’ক্রান্ত ওই রোগীর মৃ’ত্যুর সময় পাশে ছিল না কেউ। দুই ঘণ্টার বেশি চিৎকার, কান্নার পর মৃ’ত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ওই রোগী।

সফটওয়্যার ও বিপণন সংস্থার পরিচালক ক্রেইগকে গেল রোববার হাসপাতাল ছেড়ে ছাড়া পারঅ তাকে করোনা সংক্রামণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তখন তিনি সুস্থ এবং ভাল ছিলেন, কোনো প্রাক-উপসর্গও ছিল না। গ্রেটার ম্যানচেস্টার হাইডে ক্রেইগ তার নিজ বাড়িতে ফিরে আসার পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ওয়ার্ডের প্রত্যেককেই মৃ’ত্যুর মতো মনে হয়েছিল, তবে আমার বিছানায় থাকা লোকটি যার বয়স প্রায় ৬৫ বা ৭০ বছর, লোকটি খুব বেশি কথা বলতেন এবং অধিকাংশ সময় অক্সিজেন ছাড়াই থাকতে স্বাচ্ছন্দবোধ করতেন।

গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের টেমসাইড জেনারেল হাসপাতালে ৬০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির মারা যাওয়ার আগে ক্রেইগ তার বিছানায় শুয়ে শুয়ে ওই লোকটির কথা শুনছিলেন। তিনি ওই ব্যক্তির হৃদয় বিদারক দৃশ্যের কথা বলেন। যে এক পর্যায়ে তিনি তার বাগদত্তা লরা উইলসনকে (৪১) টেক্সট লিখেছিলেন যে, মারা যাওয়ার আগে লোকটি চিৎকার করে বলছিলেন কেন তিনি একটা উইল লিখেননি।

পরে সেদিন আমি দেখতে পেলাম যে তিনি শ্বাস নিতে লড়াই করছেন এবং আতঙ্কিত হতে শুরু করেছেন। আমি দেখতে পাচ্ছিলাম যে সে কষ্ট পাচ্ছে। আমি নার্সদের ডেকে বলেছি কিন্তু তারা তাকে শান্ত করতে পারেননি। হঠাৎ লোকটির অবস্থা বদলে গিয়েছিল। তার অবস্থা ক্রমশ খারাপ হচ্ছিল। তাকে বাঁচানোর সব আশাই শেষ হয়ে গিয়েছিল। নার্সরা লোকটিকে শান্ত করার জন্য কিছু একটা দিয়েছিল এবং তার বাচ্চাদের ডাকল, কারণ এটি সম্ভবত তার শেষ রাত ছিল। তার বাচ্চারা মাস্ক এবং গাউন পরে এসে বাবাকে বিদায় জানাতে পেরেছিল। তবে তারপরেও তিনি আরও কয়েক ঘন্টা বেঁচে ছিলেন এবং মৃ’ত্যুর জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। আমি যতদিন বেঁচে থাকি লোকটির শেষ ওই দুই ঘণ্টার কথা ভুলবো না। তিনি চিৎকার করছিলেন, শ্বাস নিতে লড়াই করার সময় তার পরিবারের সদস্যদের নাম ধরে ডাকছিলেন আর কাঁদছিলেন।’

ক্রেইগ আরো লেখেন, লোকটির এমন কষ্টে দেখে আমি নিজেও চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। আমি নার্সদের বারবার ডাকছিলাম, কিন্তু তারা আমাকে বলেছিল যে তার জন্য আর কিছুই করার নেই। আমি তার শ্বাসকষ্ট শুনতে পেয়েছি, মৃ’ত্যুর ধড়ফড়ানি শুনেছি। সবশেষে আবেগজড়িতভাবে লেখেন, হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সরা সম্ভাব্য সকল চেষ্টাই করেছে। কিন্তু কিছুই হয়নি। আমি এমন মৃ’ত্যু দেখতে চাই না। যেন কুকুরের জীবনে দেখতে চাই না।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *