করোনা উপসর্গ নিয়ে ফরিদপুরে মৃত্যু – দরজা ভেঙে উদ্ধার !!

ফরিদপুরে জ্বর-কাশি নিয়ে আব্দুল হান্নান (৪৮) নামে এক ব্যক্তির মৃ’ত্যু হয়েছে। ফরিদপুর শহরের হাউজিং স্টেটের মেজর আজাদ নামের এক ব্যক্তির ছয়তলা একটি ভবনের নিচতলায় ওই ব্যক্তি ভাড়া থাকতেন। বৃহস্পতিবার (১১ জুন) দুপুর ২টার দিকে ওই ভাড়া বাড়িতে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ওই সময় তিনি ওই ফ্ল্যাটে একাই ছিলেন। ঘরটি ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার পুলিশ দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে ওই ব্যক্তিকে চেয়ারে বসা মৃত অবস্থায় দেখে মৃত্যু এ লাশের গোসল ও কাফন কার্য সম্পাদনে তাকওয়া ফাউন্ডেশন ফরিদপুর জেলা টিমের প্রধান মুফতি মুস্তাফিজুর রহমানকে ফোন করলে তিনি তাকওয়া ফাউন্ডেশন ফরিদপুর টিমের নিবেদিত স্বেচ্ছাসেবী দের নিয়ে এ লাশের গোসল, কাফন সম্পাদন করেন ।

টিম প্রধান মুফতি মুস্তাফিজুর রহমান জানান, এ পর্যন্ত তাকওয়া ফাউন্ডেশন ফরিদপুর টিম ৯ টি লাশ গোসল, কাফন ,জানাযা ও দাফন সম্পাদনের খেদমত আঞ্জাম দিয়েছেন যার মধ্যে একটি নারী ও একটি হিন্দু লাশ রয়েছে। তিনি আরো জানান, যতদিনে করোনা সংকট থাকবে ততদিনে এ তাকওয়া ফাউন্ডেশন মানবতার কল্যাণে নিবেদিত থাকবে এছাড়াও ইসলাম ,দেশ ,স্বাধীনতা ও মানবতার কল্যাণে যখনই প্রয়োজন তখনই আমরা প্রস্তুত থাকবো ইনশাআল্লাহ। ওই ব্যক্তি একটি পুষ্টি বিষয়ক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে টেকনিক্যাল পরিচালক হিসেবে ফরিদপুরে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার একটি গ্রামে। তিন মেয়ের জনক তিনি।

ওই প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম জানান, ফরিদপুর শহরের কমলাপুরে তাদের কার্যালয়। তারা মোট ২০ জন এ কার্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন। গত পাঁচ দিন ধরে ওই কর্মকর্তা জ্বর, কাশিসহ বিভিন্ন উপসর্গে ভুগছিলেন। এর পর থেকে তাকে বিচ্ছিন্ন করা হয়। প্রতিদিন তারা প্রয়োজনীয় ওষুধ ও খাবার নিয়ে ওই ব্যক্তির ভাড়া বাড়িতে যেতেন। জহুরুল ইসলাম আরো জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে ওই ব্যক্তির সঙ্গে তার মুঠোফোনে কথা হয়। তখন তিনি বলেছিলেন তার স্ত্রী বাড়ি থেকে রওনা দিয়ে আজ ফরিদপুর এসে পৌঁছাবে। দুপুর দুইটার দিকে তারা ওই বাড়িতে ওষুধ ও খাবার নিয়ে যান। অনেক ডাকাডাকি করে কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে তারা পুলিশে খবর দেন।

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার এসআই মো. ফোরকান খান বলেন, ধারণা করা হচ্ছে ওই ব্যক্তি করোনাভা’ইরাসে আ’ক্রান্ত ছিলেন। এজন্য অফিসের লোকজন তাকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল। তিনি আরো বলেন, ওই ব্যক্তির করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর পর তার মরদেহ স্বাস্থ্য বিধি মেনে তাকওয়া ফাউন্ডেশন ফরিদপুর টিমের নিবেদিত স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে গোসল, কাফন ইত্যাদি কার্য সম্পাদন করে রাজশাহী তার নিজ বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। মৃত্যু এ লাশের খেদমতে অংশগ্রহণ করেন তাকওয়া ফাউন্ডেশন ফরিদপুর জেলা টিম প্রধান মুফতি মুস্তাফিজুর রহমান, নিবেদিত স্বেচ্ছাসেবী হাফেজ মাওলানা আবু নাসির ,হাফেজ মাওলানা মুফতি শিহাব উদ্দিন, হাফেজ মাওলানা খোবির হোসেন প্রমূখ। পরিশেষে তরুণ আলেমেদ্বীন মানবতার বন্ধু মুফতি মুস্তাফিজুর রহমান আফসোস ও দুঃখ নিয়ে বলেন, আজ আমরা এই মৃত্যু হান্নান এর লাশ দুপুর দুইটা থেকে এখন রাত সাড়ে সাতটা পর্যন্ত পড়ে আছে কেউ কাছে আসেনি শুনে লজ্জিত ও মর্মাহত। অতএব এ সঙ্কটে মানবিক বিবেচনায় মানবতার কল্যাণে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

সূত্র- বিডি২৪লাইভ

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *